ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ২২ নভেম্বর ২০১৬

চট্টগ্রামে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ পাহাড়তলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম মানা হচ্ছে না। ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ অর্থ আদায় করা হচ্ছে। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ৭-৮ বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্র্থীদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের মাধ্যমে নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। জরিমানাসহ ৭-৮ শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সুযোগ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, পাহাড়তলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১৭৯ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ১৫ শতাংশ। বাকি ৮৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী এক থেকে আট বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য হয়েছে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বিধি অনুযায়ী নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল শিক্ষার্থীকেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু বোর্ডের নিয়ম উপেক্ষা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের মাধ্যমে বাণিজ্যের দুয়ার খুলেছে কর্তৃপক্ষ। বোর্ড নির্ধারিত সর্বোচ্চ এক হাজার ৭৯৫ টাকা ফি’র পরিবর্তে তিন হাজার ২০৫ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ফলে অনেক শিক্ষার্থী জরিমানা দিয়েও চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে। এ ব্যাপারে স্কুল কমিটির অর্থ সম্পাদক ও অভিভাবক সদস্য ওমর ফারুক জানান, এ স্কুলের শতকরা ৫০ ভাগ শিক্ষার্থী তার পরিচালিত কোচিং সেন্টারে পড়ালেখা করে। তার ছোটবোন উম্মে সালমা নবম শ্রেণীতে পড়ায় তিনি অভিভাবক কমিটির সদস্য। তবে এ বিষয়টি সত্য নয় বলে সূত্রে জানা গেছে। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে নাজেহাল করার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন উপকমিটির নিয়ন্ত্রক সদস্য হিসেবে। এ ব্যাপারে স্কুল কমিটির সভাপতি ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, ওমর ফারুকের বিষয়ে তিনিও কিছু অভিযোগ পেয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিয়ে কোন ধরনের দুর্নীতি যদি ওমর ফারুক করে থাকেন তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম জানান, কোনভাবেই অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। টঙ্গীবাড়িতে জালিয়াতি স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, টঙ্গীবাড়িতে বিদ্যালয়ের পাসওয়ার্ড চুরি করে এসএসসির ফরম পূরণে জালিয়াতি হয়েছে। এ নিয়ে সোনরাং পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে টঙ্গীবাড়ি থানায় মামলা করেন। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার নির্বাচনীতে এ বছর মোট ২৪৫ ছাত্রছাত্রী কৃর্তকার্য হলে ঢাকা বোর্ডে তাদের ফরম পূরণ করে পাঠানো হয়। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের অকৃতকার্য দুই ছাত্র কাউছার দেওয়ান এবং মেহেদি হাসানের অভিভাবক ফরম পূরণের অনুরোধ করে আসছিল। অনুরোধে ব্যর্থ হয়ে ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড নিয়ে ফরম পূরণ করে ঢাকা বোর্ডে ২৪৫ ছাত্রের পাশাপাশি ওই ২ জনের নাম প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মাঝি বেলায়েত হোসেন লিটন জানান, সরকার নির্ধারিত টাকায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে এ বিদ্যালয়ের ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়েছে। অনুত্তীর্ণ ছাত্রের অভিভাবক সদর উপজেলার আটপাড়া গ্রামের তৈয়ব আলী মোল্লার ছেলে সানী আহমেদ সোহেল ওই দু’জনের ফরম ফিলাপের জন্য আসেন। কিন্ত ব্যর্থ হয়ে অন্য কৌশল নেন। পার্সওয়ার্ড জালিয়াতি করে দুই অকৃতকার্য ছাত্রের নাম অনলাইনে সংযুক্ত করার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বাউফলে থানায় জিডি নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল থেকে জানান, এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের অতিরিক্ত টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ করায় এক সহকারী শিক্ষককে গালাগালসহ প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় আতঙ্কিত শিক্ষক রবিবার রাতে বাউফল থানায় জিডি করেছেন। জানা গেছে, বাউফলের কালিশুরী ইউনিয়নের হাজী পঞ্চম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৫৫ পরীক্ষার্থী এ বছর এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করে। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিন হাজার সাত শ’ টাকা থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। অথচ প্রধান শিক্ষক একেএম সাইদুর রহমান বিদ্যালয়ের হিসাবের খাতায় দুই হাজার টাকা করে লিপিবদ্ধ করেন। এ নিয়ে ওইদিন সকালে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমুল কবির প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক তাকে গালাগাল করেন এবং এক পর্যায়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
×