স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের কুনিয়া, চরকুনিয়া, রাজনগর, চিংগুড়িসহ ৫/৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসী বদরুল ওরফে জগরুল বাহিনীর বর্বর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। একের পর এক মুক্তিযোদ্ধা, সংখ্যালঘুসহ নরী-পুরুষ নির্বিশেষে নিরীহ মানুষ তাদের হামলা-চাঁদাবাজি-নির্যাতন-ডাকাতির শিকার হচ্ছেন। এমনকি ঘরের মধ্যে ঢুকে বাপ-মা, ছেলে-মেয়েকে বেদম কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে মালামাল লুটে নিচ্ছে। মেয়েদের সম্ভ্রম রক্ষায় মায়েরা তটস্থ থাকেন। ১০/১২ জনের এ সন্ত্রাসী বাহিনী সীমান্তবর্তী দুর্গম ওই এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের ভয়ে কেউ টুঁ-শব্দ করতে সাহস পাচ্ছে না। শুক্রবার বাগেরহাট প্রেসক্লাবে আহূত সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার রাজনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ও কুনিয়া গ্রামের ঝর্ণা বেগম এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী সমাজসেবক মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামকে ক’দিন আগে কুনিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রকাশ্যে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাকে বিবস্ত্র করে অমানবিক অত্যাচার করে একটি পা ভেঙ্গে দেয়। এরপর গাঁজা ও ইয়াবা দিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করার চেষ্টা করে। তখন এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। অচেতন অবস্থায় পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামকে চিতলমারী হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এত কিছুর পরে থানা পুলিশ আজও মামলা নেয়নি। একইভাবে মুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমানকে সন্ত্রাসীরা লাঞ্ছিত করে।
গত রবিবার রাতে ঘরে ঢুকে সন্ত্রাসীরা রাজনগর গ্রামের শুকলাল ওরফে ফুটু বিশ্বাস (৬০) তার স্ত্রী মিনতী বিশ্বস (৪৮) ও কলেজ পুড়ুয়া মেয়ে শিপলু বিশ্বাসকে (১৮) উপর্যুপরী কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের চিতলমারী হাসপাতাল থেকে খুমেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে বেপরোয়া সন্ত্রাসীদের ভয়ে আজও আহত-ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি মামলা করতে পারেনি। এর কয়েকদিন আগে অনুরূপ ঘরে ঢুকে কুনিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর শেক ও ঝর্ণা বেগমের দশম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে মিতু খানমকে (১৫) হাত-পা-মুখ বেঁধে পৈশাচিক অত্যাচার করে এ সন্ত্রাসীরা। মিতু এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একইভাবে চিংগুড়ি গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম এবং তার মা-বাবাসহ বাড়ির ৭ জনকে কুপিয়ে জখম করে। বাড়ি-ঘর দোকান ভাংচুর করে মালামাল লুটে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: