ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

স্বাস্থ্য পরামর্শে কে ভালো — চ্যাটজিপিটি না গুগল?

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ১৬ জুন ২০২৫

স্বাস্থ্য পরামর্শে কে ভালো — চ্যাটজিপিটি না গুগল?

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি এনপিজে ডিজিটাল মেডিসিন নামক একটি বৈজ্ঞানিক সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনের তুলনায় বড় ভাষাভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল—যেমন চ্যাটজিপিটি ও জিপিটিফোর—অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য হলেও কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ভুলও করে।

গবেষণা কোন কোন প্রযুক্তিকে নিয়ে?
স্পেনের গবেষকরা গুগল, বিং, ইয়াহু ও ডাকডাকগো—এই চারটি জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন এবং চ্যাটজিপিটি, জিপিটিফোর, লামা থ্রি, মেডলামা থ্রি, ফ্ল্যান-টি-ফাইভসহ সাতটি বড় ভাষাভিত্তিক এআই মডেলকে ১৫০টি হ্যাঁ/না ভিত্তিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরদানে পরীক্ষা করেছেন।

কে কতটা সঠিক?
বড় এআই মডেলগুলো যেখানে প্রায় ৮০% সঠিক উত্তর দিয়েছে, সেখানে সার্চ ইঞ্জিনগুলো সঠিক তথ্য দিয়েছে মাত্র ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, সার্চ ইঞ্জিনে যদি সঠিক প্রশ্ন দেওয়া হয় এবং ফলাফলের মধ্যে সঠিক তথ্য থাকে, তবে তার সঠিকতার হার ৮০–৯০% পর্যন্ত পৌঁছায়।

তথ্যভিত্তিক সমস্যার চিত্র
এআই মডেলগুলো মাঝে মাঝে আত্মবিশ্বাসের সাথে ভুল উত্তর দেয়, যা চিকিৎসাবিষয়ক ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হতে পারে। এছাড়া প্রশ্নের ভাষা বা কাঠামো একটু ভিন্ন হলেই অনেক সময় ভুল উত্তর পাওয়া যায়। গবেষকেরা এটিকে "প্রম্পট সংবেদনশীলতা" বলেছেন।

‘অলস ব্যবহারকারী’ বনাম ‘পরিশ্রমী ব্যবহারকারী’
গবেষণায় চমকপ্রদভাবে উঠে এসেছে, যারা শুধু প্রথম পাওয়া হ্যাঁ বা না উত্তর দেখে সিদ্ধান্ত নেয় (অলস ব্যবহারকারী), তারা অনেক সময় তিনটি উৎস যাচাই করা পরিশ্রমী ব্যবহারকারীদের মতো বা তার চেয়েও ভালো ফল পান।

রিট্রিভাল অগমেন্টেশন কী বলছে?
যখন এআই মডেলগুলোর সঙ্গে সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য একত্র করে উত্তর তৈরি করা হয়, তখন ছোট মডেলগুলোও জিপিটিফোর-এর মতো পারফর্ম করে। তবে যেসব ক্ষেত্রে খারাপ মানের তথ্য যোগ হয়, সেখানে এই পদ্ধতি বরং আরও বিভ্রান্তিকর তথ্য তৈরি করে।

চ্যাটজিপিটি ও জিপিটিফোর-এর মতো মডেলগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য প্রশ্নে ভালো কাজ করে, তবে এদের ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখনো উদ্বেগজনক। গবেষকেরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে আরও নির্ভরযোগ্য তথ্য যাচাই, প্রম্পট উন্নয়ন এবং তথ্য একত্রিকরণ কৌশল নিয়ে গবেষণা চালানো দরকার—বিশেষত স্বাস্থ্য খাতের মতো স্পর্শকাতর ক্ষেত্রে।

আবির

×