ফুলকুমারী
আইয়ুব আল আমিন
যদি চলেই যায়
তবে কোথায় যাবে সে?
ফুলকুমারীর কাছে?
একদিন একটা নদীর নাম সে বলেছিলো।
ফুলকুমারী।
তবে কি মিথ্যে বলেছিলো?
এই নামে কোনো নদী এদেশে আছে?
কিশোরীর চুলের মতো আঁকাবাঁকা হয় কোনো নদী?
সন্ধ্যে হলেই আকন্দ ফুল ভেসে যায় তার জলে,
ঋতু বদল হওয়া কুমারীর মতো ছটফট করে একটু বৃষ্টি হলেই।
এমন নদীর কাছে কেনো যাবে সে?
আর নদী তো বটগাছ নয় যে তার ছায়ায় গিয়ে খুঁজলেই তাকে পেয়ে যাবে যে কেউ।
তবে কোথায় খুঁজবো আমি তাকে?
সমস্ত নদীর দু’ধারে খুঁজেও যদি তাকে আর না পাই?
তবে কি ভাববো মানুষটা পাগল হয়ে ঘুরছে কোনো শহরে?
প্রাচীন একটা শহরের নাম সে প্রায়ই বলতো।
কিন্তু সেই শহরের নাম তো ভুলে গেছি আমি।
তাহলে?
চটের বস্তা পরে শহরের অলিতে গলিতে ঘুরবে,
বাচ্চারা ঢিল ছুড়বে,
মুখ দিয়ে লালা গড়িয়ে পড়বে,
রাতে ঘুমাবে কোনো দোকানের নিচে
একটা অনাথ কুকুরের সাথে!
আমি গিয়ে পাশে দাঁড়ালেও আর চিনতে পারবে না!
আপন সেই চোখ দুটো জলজল করবে অচেনা চোখের মতো!
শরীরের গন্ধটাও কি অচেনা লাগবে তার কাছে আমার?
পর হয়ে যাবো আমরা নক্ষত্রের মতো?
তবে কিসের জন্য এ জীবন
কিসের জন্য তোমাকে ভালোবাসা!!
মৌটুসীদের তর্জমা বোঝো
দ্বীপ সরকার
ভাসমান আঁচলে দুলে ওঠা মেঘ-
মৌটুসীদের চরনে এসে ধূলো হয়
চরণে বাজে মেঘের কাঁকন- চুলের ভেতর আকাশী রঙা ঢেউ -
বে - হিসেবী কম্পন লাগে পাথরঠোঁটে - বুকে তরল সাহসের ফণা
মাতাল হাওয়ারা মৌটুসীকে দাবড়ায়
স্কুল ফেরত পথ ধরে আছে, ওরা কারা?
বাউন্ডেলে চুল ওদের, নাক সিটকানো চোখ
হাতে ফিতের নকশা, গলায় কর্কশ আঁটানো
মৌটুসীরা ধুলা উড়িয়ে হাঁটে - পায়ে ঘূর্ণিঝড় তুলে
বাতাস থেকে খড়কুটো লাফিয়ে পড়ে ওদের ওপর
হিজাব থেকে খসে পড়ে তির তির থুতুর ঝড়
ওরা বালিকাঝড়ের কবলে পড়ে - লুকোয় থরে থরে সাজানো
নারকেলের ছোবড়ার ভেতর
আসলে বাউন্ডেলেরা বোঝেনা মৌটুসীদের গভীরের তর্জমা
চিকন ঠোঁটের ভেতর ওদের সুদীর্ঘ গোপন-
দ্বান্দ্বিকতার সহাবস্থান
মাজেদুল হক
চারপাশে বিভ্রান্তির ধূসরতা-
আলো-আঁধারের সীমানা পেরিয়ে কেবলি ছুটছি
অজানা-অচেনা পৃথিবীর বক্র পথে।
কখনও খুব সহজেই ভুলে যাই পুরনো কালের ইতিবৃত্ত
কখনও বুকের মধ্যে বেজে ওঠে তরঙ্গায়িত হৃৎপি-ের ধ্বনি
কখনও ঘাত-প্রতিঘাতে ভেঙ্গে যায় কামনার বিস্তৃত শাখা-প্রশাখা
কখনও অবেলার সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে সময় বয়ে যায়
কখনও সুখ-দুঃখের নিজ সত্তা বলি দিয়ে ভাবিয়ে তোলে দেহমন
কখনও রাতের গভীরতায় ভাঙতে থাকে কষ্টের ফোয়ারা
হৃদয় কাঁপানো ভয়ার্ত, আতঙ্কিত ধ্বনি অচিরেই
অস্থি-মজ্জাকে বিকলাঙ্ক, রিক্ত-নিঃস্ব করে দেয়।