ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন ডর্টমুন্ডের

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৫১, ৩ মে ২০২৪

পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন ডর্টমুন্ডের

পিএসজির নুনো মেন্ডিস ও বুরুসিয়া ডট্মুন্ডের নিকলাস ফুয়েলক্রাগের মধ্যে বল দখলের লড়াই

সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ফরাসি জায়ান্ট প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনকে (পিএসজি) ১-০ গোলে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। বুধবার রাতে ঘরের মাঠ জার্মানির সিগনাল ইদুনা পার্কে ডর্টমুন্ডের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন জার্মান ফরোয়ার্ড নিকলাস ফুয়েলক্রুগ। এই জয়ে ফাইনালে খেলার পথে কিছুটা হলেও এগিয়ে গেছে ডর্টমুন্ড। আগামী মঙ্গলবার রাতে প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে শেষ চারের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ঘরের মাঠে ওই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে ফাইনালে খেলার আশা প্রকাশ করেছে পিএসজিও।
৩১ বছর বয়সে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে নামা ফুয়েলক্রুগ ম্যাচের ৩৬ মিনিটে সেন্টার ব্যাক নিকো শ্লোটারবেকের লফটেড পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে অসাধারণ দক্ষতায় গোল করে ডর্টমুন্ডকে এগিয়ে নেন। পুরো ম্যাচে সেই গোল আর পরিশোধ করতে পারেনি সফরকারী পিএসজি। দলের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে পুরো ম্যাচেই ছিলেন নিষ্প্রভ। এই জয়ে ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো ১৯৯৭ চ্যাম্পিয়নরা ফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে থাকল।

ঘরের মাঠে ৮০ হাজার সমর্থকের সামনে পিএসজিতে তেমন পাত্তাই দেয়নি ডর্টমুন্ড। বিরতির পরপর পিএসজি নিজেদের সেরা সুযোগটি পায়। এমবাপের শট প্রথমে পোস্টে লেগে ফেরত আসে। এরপর ফিরতি বলে ডর্টমুন্ডের সাবেক উইং ব্যাক আশরাফ হাকিমির শট আরও একবার পোস্টে লাগালে ম্যাচে ফেরা হয়নি পিএসজির।

ম্যাচ শেষে জার্মান দলের দীর্ঘদিনের সঙ্গী সেন্টার ব্যাক ম্যাটস হামেলস বলেন, আমি বিশ^াস করি আমরা ক্লাসিক একটি দলীয় পারফরমেন্স সবার সামনে দেখাতে পেরেছি। ম্যাচ জয়ের জন্য প্রত্যেকেই প্রত্যেককে সহযোগিতা করেছে। দুইবার ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল। আমরা সবাই নিজেদের পারফরমেন্স নিয়ে খুশি। এতটা পরিণত পারফরমেন্সে আমরা নিজেরাও আশা করিনি।
এবারের মৌসুমে গ্রুপ পর্বে ইতোমধ্যেই পিএসজির কাছে একবার পরাজিত ও একবার ড্র করেছে ডর্টমুন্ড। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে খেলার ১১ বছর পর আবারও একটি স্বপ্নের ফাইনালে ওয়েম্বলিতে ফিরে আসার আশা করতেই পারে ডর্টমুন্ড। যদিও আগামী সপ্তাহে ঘরের মাঠে ফিরে আসার ব্যাপারে দারুণ আত্মবিশ^াসী পিএসজি। এ প্রসঙ্গে পিএসজি অধিনায়ক মারকুইনহোস বলেন, দ্বিতীয় লেগে পিএসজির পার্ক দ্য প্রিন্সেস ও আমাদের সমর্থকরা আশা জোগাচ্ছে।

আমরা জানি এর থেকেও ভালো করা সম্ভব। ব্রাজিলিয়ান তারকা আরও বলেন, আমরা এমন দুটি দল যারা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে পছন্দ করি। যে কারণে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লড়াইটা বেশি হয়। ম্যাচটি শারীরিকভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। ফলাফল বিবেচনায় আমরা সুযোগ বেশি পেয়েছি। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে সুস্পষ্ট সুযোগগুলো আমরাই তৈরি করেছি। এখন ফাইনালে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।

ঘরের মাঠে আমাদের সুযোগগুলো শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। এই স্টেডিয়ামে খেলা সবসময়ই কঠিন। আমরা এখানে বারবার আসতে চাই এবং জিততে চাই। এবার হয়তো পারিনি, কিন্তু পার্থক্যও খুব বেশি নয়। মাত্র ১-০। অতীতে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। বিশেষ করে ঘরের মাঠে স্বাগতিক সমর্থকদের শক্তি আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণা দেয়। আমি নিশ্চিত প্যারিসে সবাই একটি ভিন্ন চিত্র দেখতে পাবে।
পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে বলেন, এটাই ফুটবল। খুব কম সময়ই এটা দুর্দান্তভাবে শেষ হয়। আমরা হয়তো ভিন্ন একটি পরিস্থিতি নিয়ে ম্যাচটি শেষ করতে পারতাম। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় পুরো ম্যাচের দিকে তাকালে দেখা যাবে লড়াইটা প্রায় সমান  হয়েছে। সাবেক বার্সিলোনা কোচ আরও বলেন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল ম্যাচ কখনই সহজ হয় না। ড্রেসিংরুমে ছেলেরা কিছুটা হতাশ ছিল।

আমরা কিছু সুযোগ পেয়েছি তবে শটগুলো পোস্টে লেগেছে। এই স্টেডিয়ামটি কিছুটা ব্যতিক্রম। কিন্তু আমি নিশ্চিত প্যারিসে আমরা শক্তিশালীভাবে ফিরে আসবো। কারন আমাদের হারানোর আর কিছু নেই। নির্ভার হয়ে খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এ নিয়ে পিএসজি পঞ্চম ম্যাচে হারের স্বাদ পেয়েছে। এই প্রথম এনরিকের অধীনে কোন গোল না করে ম্যাচ হারতে হয়েছে প্যারিসের পরাশক্তিদের।

×