কবি সালেহ মুজাহিদের প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘চাঁদকাব্য’ এ বছরের বইমেলায় নিয়ে আসছে অপার সম্ভাবনা। যা পাওয়া যাবে প্রিয় মুখ প্রকাশনীর ২৫৮ নম্বর স্টলে। ছোটবড় তার ৪৭টি কবিতা ৮০ পৃষ্ঠার এ বইটিতে স্থান পেয়েছে।
সালেহ মুজাহিদের কবিতার প্রধানতম আর্কষণ কবিতার অঙ্গনে তার স্বচ্ছন্দ বিহার। শব্দ আসে নির্ঝরের স্বতঃস্ফূর্ত কলকলানির মতো। সে শব্দে মূর্ত হয়ে ওঠে নানা ছবি। কখনও ভালবাসা, বলা যায় প্রায়শই ভালবাসা, নানা রঙের ভালবাসার কথা বলে। সে ভালবাসা যেমন প্রতিদিনের মন দেয়া নেয়ার কথা বলে। তেমনি আবার স্পর্শ করে আত্মাকে, অনেকটা অজান্তেই পরমাত্মাকে । আমার মনে হয়েছে এটাই তার কবিতার প্রধান প্রসাদ গুণ।
কবির মনন শুধু ভালবাসার কথাই বলে না। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত হতভাগ্যদের জীবনচর্যাও উঠে আসে পঙ্ক্তিমালায়।
উঠে আসে এ্যানা ফ্র্যাঙ্কের কথা এবং তাকে ভর করে প্যারিসের পথের পাশে বসে থাকা সিরিয়ার বিধ্বস্ত জনপদের উদ্বাস্তু শিশু-কিশোরীদের ছন্নছাড়া জীবনের কথা। তার ব্যথিত অনুভূতি কেঁদে কেঁদে শীতার্ত মানুষের পাশে পায়চারী করে। যেমনটি দেখি তার ফরিয়াদ কবিতায়:
‘সত্তর বছরের এই জীর্ণ দেহে শীত আসে
বিষ বর্ষার মতো, তার বীভৎস রূপ নিয়ে
আর ক্ষুধারা পেটে দেয় বিষাক্ত সাপ ছোবল,
শরীরকে করে অসাড় সবটুকু বিষ ঢেলে।
শীত না ক্ষুধা কে যে কারে করে দহন
সে বোধও যে গেছে আজকাল হারিয়ে।’
তার কবিতায় ভালবাসার কথাই বেশি। কিন্তু ভালবাসা তার কাব্যে একটা প্রিজমের মতো। কখন সে ভালবাসা যে কাকে উদ্দেশ করে কি বলে তা বোঝা মুশকিল। আপতদৃষ্টিতে রক্তমাংসের ভালবাসা মনে হলেও তার ভালবাসার বিচরণ আধ্যাত্মিক জগতে। সেখানে তুমি আমির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে সবই তুমিতে হারিয়ে যায়।
এ কবির মাঝে আমি একটি নতুন ধারার কবিতা লক্ষ্য করছি। এ ধারাটি আমাদের কবিতা অঙ্গনে আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করবে এই আশা। আমি চাঁদকাব্যের বহুল প্রচার কামনা করি। তার যাত্রাপথ শুভ হোক, সুন্দর হোক এ মোনাজাত রইল সে শাশ্বত ‘আমি’ এর কাছে।