ছবি: সংগৃহীত
রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে এমন বেশ কিছু খাদ্যের মধ্যে গ্রেপফ্রুট একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। গবেষণা বলছে, প্রতিদিন প্রায় ১.৫টি গ্রেপফ্রুট খেলে সামান্য পরিমাণে রক্তচাপ কমতে পারে। তবে এর জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
গবেষণা কী বলছে? ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের প্রতিরোধমূলক কার্ডিওলজির বিশেষজ্ঞ জুলিয়া জাম্পানো, আরডি বলেন, “পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ খাদ্য রক্তচাপ উন্নত করতে সাহায্য করে। শুধু গ্রেপফ্রুট নয়, প্রতিদিন ৪,০০০ মিলিগ্রামের বেশি পটাশিয়াম গ্রহণের চেষ্টা করা উচিত।” একটি গ্রেপফ্রুটে থাকে প্রায় ৪১৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
জাম্পানো বলেন, পটাশিয়াম সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রেখে এবং তা শরীর থেকে বের করে দিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া, আঁশ ওজন এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কারণ এটি পেট ভরিয়ে রাখে ও অন্ত্রে কোলেস্টেরলের সঙ্গে আবদ্ধ হয়। ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
ইউসিএলএ হেলথের জ্যেষ্ঠ ডায়েটিশিয়ান ইয়াসি আনসারি বলেন, “গ্রেপফ্রুটে থাকা পটাশিয়াম, আঁশ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ ধমনির কার্যকারিতা উন্নত করে।”
তবে, গ্রেপফ্রুট কতটা রক্তচাপ কমাতে পারে, তা নির্ধারণ করা কঠিন। আনসারি বলেন, “ক্লিনিক্যাল গবেষণা বলছে, নিয়মিত গ্রেপফ্রুট খেলে সিস্টোলিক রক্তচাপ গড়ে ২ থেকে ৩ mmHg পর্যন্ত কমতে পারে।” তবে এই গবেষণাগুলোর অংশগ্রহণকারী সংখ্যা কম এবং সময়কালও সীমিত হওয়ায় প্রমাণ এখনও সীমিত।
কতটা গ্রেপফ্রুট খেতে হবে? আনসারি বলেন, “আগের গবেষণার ভিত্তিতে, আপনি প্রতিদিন ১.৫টি গ্রেপফ্রুট খেতে পারেন—প্রতি বেলায় আধা করে।” একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ছয় সপ্তাহ ধরে এই পরিমাণ খেলে রক্তচাপ কমেছিল। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্রেপফ্রুট খেলে রক্তচাপ সবসময়ই কমবে। এমনটি এখনও নিশ্চিত নয়।
ওষুধের সাথে গ্রেপফ্রুটের বিরূপ প্রতিক্রিয়া: অনেক সাধারণ ওষুধের সাথে গ্রেপফ্রুটের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আনসারি বলেন, “গ্রেপফ্রুট ও এর রসে থাকা রাসায়নিক যৌগগুলো কিছু ওষুধের বিপাক ক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে।”
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি অতি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। ওষুধের বিপাক বন্ধ হলে তা রক্তে জমা হয়ে ওষুধ বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। ইমিউনোসপ্রেসেন্ট, মানসিক রোগের ওষুধ, কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ, ও রক্তচাপের ওষুধ, সবই গ্রেপফ্রুটের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। তাই গ্রেপফ্রুট খাদ্যতালিকায় যোগ করার আগে আপনার চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট বা ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শহীদ
