
ছবিঃ সংগৃহীত
সফলতা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, বরং প্রতিদিনের সচেতন অভ্যাসের ফল। এই অভ্যাসগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংযোজিত হয়ে এমন এক জীবন তৈরি করে, যা অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে। স্টিভ বার্নস তাঁর বিশ্লেষণে সফল ও ব্যর্থ মানুষের অভ্যাসগুলোর মধ্যে ১০টি স্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরেছেন, যা আমাদের নিজেকে বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করবে।
১. সকালের নিয়ন্ত্রণ: আগেভাগে ওঠা বনাম বারবার ‘স্নুজ’ করা
সফল মানুষ ভোরে উঠে পরিকল্পনা, ব্যায়াম ও মনঃসংযোগের কাজ করেন, যেমন অ্যাপলের সিইও টিম কুক প্রতিদিন সকাল ৪:৩০ এ দিন শুরু করেন। অন্যদিকে, ব্যর্থ মানুষ সাধারণত সকাল শুরু করেন দেরি করে, তাড়াহুড়া ও অগোছালোভাবে, যা তাদের গোটা দিনকেই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
২. আজীবন শেখার অভ্যাস বনাম বিনোদনের প্রতি অতিরিক্ত ঝোঁক
সফল মানুষ প্রতিদিন কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করেন। ওয়ারেন বাফেট প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘণ্টা পড়াশোনায় সময় দেন। ব্যর্থ মানুষ অবসরে শিক্ষামূলক কিছু না পড়ে শুধুই বিনোদনে সময় কাটান, যার ফলে তারা ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়েন।
৩. নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করা বনাম অস্পষ্ট আকাঙ্ক্ষা
সফলরা নির্দিষ্ট সময়সীমা ও পরিকল্পনাসহ লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, যেমন “৬ মাসে ২০% বিক্রি বাড়ানো।” ব্যর্থ মানুষ শুধু বলেন, “আমি সফল হতে চাই” — কিন্তু কীভাবে, তা বলেন না বা কোনো পরিকল্পনা করেন না।
৪. দায়িত্ব নেওয়া বনাম অজুহাত দেওয়া
সফলরা সমস্যা হলে নিজের দায় খুঁজে দেখেন এবং তা থেকে শিক্ষা নেন। ব্যর্থরা সব সময় অন্যকে দোষারোপ করেন এবং নিজে কোনো সমাধানের পথে হাঁটেন না।
৫. সম্পর্ক তৈরি বনাম নিজেকে গুটিয়ে রাখা
সফল মানুষ নেটওয়ার্কিংকে গুরুত্ব দেন, সুযোগ তৈরির জন্য সম্পর্ক রক্ষা করেন। ব্যর্থরা কেবল প্রয়োজনের সময়েই কাউকে খোঁজেন, যার ফলে টেকসই সম্পর্ক তৈরি হয় না।
৬. বিলম্বিত সন্তুষ্টি বনাম তাত্ক্ষণিক আনন্দে ডুবে থাকা
সফল মানুষ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অর্থ বিনিয়োগ করেন, নতুন দক্ষতা শেখেন। ব্যর্থ মানুষ এখনই মজা বা আরাম চান, ভবিষ্যতের জন্য কোনো পরিকল্পনা রাখেন না।
৭. পরিবর্তন মেনে নেওয়া বনাম নিরাপদ অঞ্চলে আটকে থাকা
সফলরা পরিবর্তনকে স্বাগত জানান এবং শেখার মনোভাব রাখেন। ব্যর্থরা নতুন কিছু শিখতে চান না, পুরোনো অভ্যাসেই পড়ে থাকেন।
৮. সময়ের ব্যবহার: পরিকল্পিত দিনযাপন বনাম প্রতিক্রিয়াশীল ব্যস্ততা
সফলরা প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর অগ্রাধিকার দেন। ব্যর্থরা যা সামনে আসে তাই করেন, দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নমূলক কাজগুলো পিছিয়ে রাখেন।
৯. স্বাস্থ্যসচেতনতা বনাম অবহেলা
সফলরা প্রতিদিনের রুটিনে ব্যায়াম, ঘুম, খাদ্য গ্রহণকে গুরুত্ব দেন। ব্যর্থরা কাজের চাপের অজুহাতে নিজের যত্ন নেন না, ফলে ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা কমে যায়।
১০. অন্যের সফলতা উদযাপন বনাম ঈর্ষা করা
সফলরা অন্যের সফলতা দেখে অনুপ্রাণিত হন, শেখার চেষ্টা করেন। ব্যর্থরা ঈর্ষান্বিত হন, ফলে ইতিবাচক সম্পর্ক ও শেখার সুযোগ হারিয়ে ফেলেন।
সূত্রঃ newtraderu.com
নোভা