ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঈদের আনন্দ যেন বিষাদে না বদলায়! মাংস খাওয়ার আগে জানুন এই সতর্কতাগুলো

প্রকাশিত: ১৯:৫৭, ৪ জুন ২০২৫

ঈদের আনন্দ যেন বিষাদে না বদলায়! মাংস খাওয়ার আগে জানুন এই সতর্কতাগুলো

ছবি: সংগৃহীত।

ঈদ মানেই খুশি, আর কোরবানির ঈদ মানেই চারপাশে মাংসের বাহার। পরিবারের সবাই মিলে গরু, খাসি বা উটের মাংস রান্না করে খাওয়া যেন এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ। কিন্তু যতটা না আমরা আনন্দে মেতে উঠি, ততটাই অবহেলা করি স্বাস্থ্যের দিকে। অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে হৃদরোগ, কোলেস্টেরল ও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। তাহলে ঈদে কতটা মাংস খাওয়া নিরাপদ? আর কোন কোন দিক খেয়াল রাখা জরুরি?

ঈদে মাংস খাওয়ার সংস্কৃতি ও বিপদের দিক
বাংলাদেশসহ মুসলিমবিশ্বে কোরবানির ঈদে তিন দিন ধরে চলে মাংস খাওয়ার ধুম। রোস্ট, কাবাব, কোরমা, ভুনা— বাহারি সব পদে সাজে ঈদের খাবার টেবিল। তবে এই আনন্দের মাঝেও দেখা যায়, অনেকেই হজমের সমস্যায় ভোগেন, ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগার বেড়ে যায়, আর হৃদরোগীরা পড়েন ঝুঁকিতে। মাংসে উচ্চমাত্রার প্রাণিজ প্রোটিন ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া শরীরের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে।

কী পরিমাণ মাংস খাওয়া নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ দিনে ৭০-১০০ গ্রাম পর্যন্ত রেড মিট (গরু/খাসি) খেতে পারেন। যারা উচ্চরক্তচাপ, কিডনি সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক বা হৃদরোগে ভুগছেন, তাদের জন্য এই পরিমাণ আরও কম হওয়া উচিত— প্রায় ৫০-৬০ গ্রাম। শিশুদের ক্ষেত্রে পরিমাণ আরও কম হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে দিনে তিন বেলা শুধু মাংস খাওয়া নয়, মাংসের সাথে প্রচুর পরিমাণে সবজি, সালাদ এবং পর্যাপ্ত পানি গ্রহণের পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।

কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি?
১. মাংস সংরক্ষণ: কোরবানির মাংস সঠিকভাবে পরিষ্কার করে, ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করা উচিত। না হলে ব্যাকটেরিয়া ও বিষক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে।
২. রান্নার ধরণ: বেশি তেল-মসলা দিয়ে রান্না করা খাবার হজমে সমস্যা তৈরি করে। গ্রিল বা সেদ্ধ করে খাওয়াটা তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর।
৩. নিয়ন্ত্রিত খাওয়া: একসাথে অনেক মাংস না খেয়ে, ভাগ করে খাওয়া এবং মাঝে ফল বা সালাদ খাওয়ার অভ্যাস রাখা উচিত।
৪. রোগীদের জন্য সতর্কতা: ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, কিডনি ও হৃদরোগীদের জন্য ঈদের মাংস খাওয়া অবশ্যই পরিমিত ও চিকিৎসকের পরামর্শমাফিক হওয়া দরকার।


ঈদ উৎসব হোক স্বাস্থ্যকর ও আনন্দময়। পরিবারের সবার সুস্থতা নিশ্চিত করতে মাংস খাওয়া হোক পরিমিত ও সঠিকভাবে রান্না করা। কারণ ঈদ মানে শুধু আনন্দ নয়, দায়িত্বশীলতারও একটি রূপ।

নুসরাত

×