
ছবি: সংগৃহীত।
কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি, যা রক্ত পরিশোধন, অতিরিক্ত তরল ও বর্জ্য পদার্থ অপসারণসহ হরমোন নিঃসরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে নানা কারণেই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে কিডনি রোগীর সংখ্যা। কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে ও কিডনি সুস্থ রাখতে সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অত্যন্ত জরুরি বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে কিডনিকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখা সম্ভব। নিচে কিডনি ভালো রাখার জন্য করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো:
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: দেহে পানির ভারসাম্য বজায় রাখা কিডনির জন্য অত্যন্ত জরুরি। দিনে অন্তত ২–৩ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। তবে হৃদরোগী বা কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান করা উচিত।
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন: এই দুটি রোগ কিডনির সবচেয়ে বড় শত্রু। নিয়মিত রক্তচাপ ও রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে ওষুধ সেবন করুন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
সতর্ক থাকুন ওষুধ সেবনে: অনেকেই মাথাব্যথা বা জ্বর হলে দীর্ঘদিন ধরে পেইনকিলার খান। নিয়মিত ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন কিডনির ক্ষতি করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন: অতিরিক্ত লবণ, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও চর্বিযুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলুন। বেশি ফলমূল, শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। কিডনির কার্যকারিতা রক্ষা করতে ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য।
ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন: ধূমপান ও অ্যালকোহল কিডনির রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয়, যার ফলে ধীরে ধীরে কিডনি কার্যকারিতা হারায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: মোটা দেহে কিডনির ওপর চাপ পড়ে বেশি। তাই নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
প্রতি বছর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন: বয়স ৪০ পেরুলেই বছরে অন্তত একবার কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা উচিত। বিশেষ করে যাঁদের পারিবারিক ইতিহাসে কিডনি রোগ আছে, তাঁদের জন্য এই পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন: সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন ৩০ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার ইত্যাদি কিডনি সুস্থ রাখতে সহায়ক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ না দেখালেও ধীরে ধীরে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাই কিডনি ভালো রাখতে প্রতিরোধই হলো সর্বোত্তম ব্যবস্থা।
মিরাজ খান