
ছবি:সংগৃহীত
সম্প্রতি জমি ক্রয়ের পরেও অনেক ভুক্তভোগী ক্রেতা প্রকৃত জমির দখল না পেয়ে বিপাকে পড়ছেন। এমনকি রেজিস্ট্রি দলিল সম্পন্ন হলেও, বিক্রেতা তাদের বরাদ্দকৃত অংশটি মেপে বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। এর ফলে দেখা দিচ্ছে নানা ধরণের জটিলতা ও হয়রানি।
এই ধরনের প্রতারণা অনেক সময় ঘটছে তখন, যখন একটি দাগে বড় আকারের জমির ভেতর থেকে বিক্রেতা আংশিক যেমন ১০ শতক জমি বিক্রি করেছেন, কিন্তু তা সুনির্দিষ্টভাবে কোন অংশ—তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। কখনও কখনও আবার দেখা যায়, বিক্রেতার সেই জমি আসলে এজমালি সম্পত্তি—যার উপর অন্য উত্তরাধিকারেরও দাবি রয়েছে।
ক্রেতা হিসেবে আপনি জমির পুরো মূল্য পরিশোধ করার পরও যদি বিক্রেতা আপনাকে দখল বুঝিয়ে না দেন, তাহলে এখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালে প্রণীত “ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন” এর ৯ নম্বর ধারায় এই ধরনের অপরাধকে দণ্ডনীয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই ধারায় বলা হয়েছে—যদি বিক্রয়ের নির্ধারিত মূল্যের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করা সত্ত্বেও বিক্রেতা যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত ক্রেতার বরাবর ভূমির দখল হস্তান্তর না করেন, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
এই আইনের আওতায় ভুক্তভোগী ক্রেতা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারবেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেমন সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে জমি কেনাবেচায় স্বচ্ছতা আসবে এবং প্রতারণার ঘটনা হ্রাস পাবে। যারা ইতিমধ্যে এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তাদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
আইনি প্রতিকারের পাশাপাশি জমি কেনার পূর্বে পজিশন চিহ্নিত করে মাপজোকের মাধ্যমে বুঝে নেওয়া, বিক্রেতার মালিকানার অবস্থা যাচাই এবং প্রয়োজন হলে আইনজীবীর সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ও জনস্বার্থমূলক আইনের প্রয়োগ ও সচেতনতা বাড়লে ভবিষ্যতে জমি সংক্রান্ত জটিলতা অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
মারিয়া