.
প্রথমবার যারা লিখিত পরীক্ষা দেবেন তারা হয়তো কিছুটা চিন্তিত আছেন কিভাবে প্রস্তুতি নেবেন। সবার জন্য প্রস্তুতির কিছু পরামর্শ দেয়া হলো-
ইংরেজি
- ইংরেজি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এক্ষেত্রে ইংরেজির নম্বর ক্যাডার আর নন-ক্যাডারের পার্থক্যটা গড়ে দেবে। ইংরেজিতে নম্বর তোলার মূল জায়গা হলো পার্ট-এ। অধিকাংশ পরীক্ষার্থী প্যাসেজটা ভালো করে না বুঝেই উত্তর দেয়া শুরু করে। প্যাসেজের Skim Through নলেজ নিয়ে উত্তর দিতে গেলে উত্তর হবে গড়পড়তা এবং বারবার পুরো প্যাসেজ পড়ে উত্তর দিতে হবে। সেক্ষেত্রে যে সময়ের অপচয় হবে তার প্রভাব পড়বে পার্ট-বি তে। তাই প্রশ্ন পাওয়ার পর প্যাসেজ ভালো করে পড়ে নিতে হবে যেন ১০টি প্রশ্নের টু দ্যা পয়েন্ট উত্তর করা যায়।
- পার্ট-এ তে ভালো করার জন্য ভোকাবুলারির উপর পারদর্শী হতে হবে। জাতীয় দৈনিকের নিউজগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখবেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা কমন শব্দগুলোই পত্রিকায় সমার্থক শব্দ দিয়ে লেখা হয়। পত্রিকা থেকেই তাই ভোকাবুলারি শিখুন। আর প্রতিটি ওয়ার্ড শিখার সময় একটা নোট খাতা বানিয়ে সেখানে লিখে রাখুন। তাহলে শেখাটা দীর্ঘস্থায়ী হবে।
- প্রথমেই ৩০ নম্বরের জন্য ১০টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রশ্নগুলোর উত্তর করার সময় Grammatical error করা যাবে না। Tense, sentence structure এর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
-পার্ট-বি তে ৫০ নম্বরের রচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। মনে রাখবেন এখানে নম্বর কম হলে তা আর কিন্তু অন্য সাবজেক্ট দিয়ে পুষিয়ে নিতে পারবেন না।
# কটাদিন নিয়মিত অনুবাদ চর্চা করলে দুর্বলতা কমে যাবে। এক্ষেত্রে বই থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো অনুবাদ চর্চার জন্য প্রতিদিন ৩০ মিনিট হলেও বরাদ্দ রাখা।
বাংলা
- বাংলা দুই পার্ট মিলিয়ে বেশি পড়ার সুযোগ নাই। মূল ফোকাস দিতে হবে ব্যাকরণের ৩০, বাংলা সাহিত্যের ৩০, গ্রন্থ সমালোচনার ১৫ নম্বরে।
- বাংলা ২য় পত্রে সময় বণ্টন করা একটু কঠিন হয়ে যায়। আগেরগুলো ভালো করে লিখতে গেলে শেষের দিকে প্রবন্ধ রচনায় সময় কমে যায়, তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
-অনুবাদ, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন/চিঠি ও কাল্পনিক সংলাপ একটু গুছিয়ে লিখলেই ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে শুধু নিয়মগুলো যে কোনো বই থেকে দেখে নিতে হবে।
- প্রচুর লেখার অভ্যাস করবেন। পড়া শেষে সময় ধরে লিখবেন। এতে তিনটি উপকার হবে- পড়া দ্রুত মুখস্থ হবে, সঠিক সময়ে লেখা শেষ করার অভ্যাস হবে এবং লেখার গতি বাড়বে।
বাংলাদেশ বিষয়াবলি
- অধিকাংশ পরীক্ষার্থী বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ভালো প্রিপারেশন থাকা সত্ত্বেও আশানুরূপ নম্বর পান না। এর মূল কারণ খাতায় ঠিকভাবে উত্তর উপস্থাপন করতে না পারা।
- মনে রাখবেন এই বিষয়ে কম বেশি সবাই লিখতে পারবে কিন্তু পার্থক্য তৈরি হবে উপস্থাপনায়, প্রাসঙ্গিক ডাটা/চার্ট/কোটেশান ইত্যাদি ব্যবহারে।
- ৫/১০/১৫ নম্বরের প্রতিটি প্রশ্নের জন্য আপনি কত মিনিট লিখবেন এটা আগে থেকেই ঠিক করে যাবেন। অনেকেই প্রথম দিকের প্রশ্নগুলো বড় করে লিখতে গিয়ে শেষের দিকে ১০-২০ নম্বর ছেড়ে দিয়ে আসেন। এই গ্যাপ কোনোভাবেই পূরণ সম্ভব না।
- প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবেন। যাতে সমস্ত লেখা সবার এক হলেও আপনার খাতাটা কিছুটা ব্যতিক্রমী হয়।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি
এখানে ১২টি প্রশ্ন থেকে ১০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এই ১০টি প্রশ্ন সবসময় সরাসরি কমন পড়ে না। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক চলমান ইস্যুগুলো নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করলেই প্রশ্নের উত্তর করে আসতে পারবেন।
-১২টা প্রশ্নের মধ্যে ১/২টা একদম আনকমন আসবে। ওই দুইটা বাদ দিয়েই ১০টা প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। ৫-৬টা প্রশ্ন এমনিতেই কমন পড়বে। বাকিগুলো আপনার ধারণা/বিশ্লেষণ করেই লিখতে হবে।
হ ইম্পিরিকাল ইস্যুর প্রশ্নগুলোর উত্তর করার সময় কনফ্লিক্ট এর প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে সলিউশন পর্যন্ত ম্যাপ, ডাটা, কোটেশান ব্যবহার করে সাজিয়ে লিখবেন। ম্যাপ আঁকার সময় অবশ্যই যতটুকু সম্ভব সঠিকভাবে আঁকতে হবে। এই অংশে চেষ্টা করলেই ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
- প্রবলেম সলভিং এর জন্য প্রচলিত ফরমেটগুলো দেখে যাবেন। ফরমেট থেকে আপনার অ্যানালাইসিস এর উপর পরীক্ষক অধিক মনোযোগ দেবেন।
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা
-গণিতে ৫০ এ ৫০ পাওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। তার জন্য বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালো করে বিশ্লেষণ করুন, কোন কোন চ্যাপ্টার থেকে অংক আসতে পারে তা ঠিক করুন, সেভাবে চর্চা করুন।
-বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীর সমস্যা হয় বিন্যাস, সমাবেশ, স্থানাঙ্ক জ্যামিতি ও সম্ভাব্যতায়। তাই এই অধ্যায়গুলোর বেসিক ভালো করে জানুন। অংক করার সময় নিয়ম শিখবেন, চেষ্টা করবেন সবগুলো নিয়মের অংক চর্চা করতে। তাহলেই প্রশ্ন কমন পড়বে।
-সূচক-লগারিদম, ভেনচিত্র, ত্রিকোণমিতি, সেট, সমান্তর ও গুণোত্তর ধারা, নির্ণায়ক, লাভ-ক্ষতি, শতকরা- এসব অধ্যায় থেকেই সাধারণত বেশি প্রশ্ন আসে। পাটিগণিত ও বীজগণিতের উপর জোর দিতে হবে।
-মানসিক দক্ষতার জন্য বাজারে প্রচলিত যে কোনো বই থেকে প্রস্তুতি নিন। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সহায়তা নিতে পারেন।
বিজ্ঞান
- ১.৫ নম্বরের প্রশ্নেও তিনটি ভাগ থাকে। তাই সবার আগে নিশ্চিত করুন প্রশ্নের উত্তর করার সময় আপনি সময় বজায় রেখেছেন কিনা?
- সাধারণ বিজ্ঞান অংশে বর্তমানে বেসিক থেকে প্রশ্ন করা হয়। ২-৩ লাইনেই অনেক প্রশ্নের উত্তর হয়ে যায়।
- আলো, শব্দ, এসিড-ক্ষার, পানি, পলিমার, খাদ্য ও পুষ্টি, বায়োটেকনোলজি, রোগ ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা- এই অধ্যায়গুলো থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। তাই নবম-দশম শ্রেণির পদার্থ, রসায়ন ও সাধারণ বিজ্ঞান বই থেকে মূল বিষয়টা সম্পর্কে জেনে নিন।
- আমাদের সম্পদ, বায়ুমন্ডল অধ্যায় দুটি অনেকেই গুরুত্ব দেয় না। এখান থেকেও প্রশ্ন আসতে পারে।
- কম্পিউটারের জন্য উচ্চ মাধ্যমিকের আইসিটি বইটি পড়ার চেষ্টা করবেন।
- কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিকসের অংশটি খাতায় নোট করে পড়বেন। যে কোনো প্রচলিত গাইড বইও ফলো করতে পারেন।
- বিজ্ঞানে যাদের দুর্বলতা আছে তারা নোট করে পড়ার চেষ্টা করবেন, তাহলে পরীক্ষার আগে রিভিশন দিতে সুবিধা হবে।
চাকরি বাজার ডেস্ক