
ছবি: সংগৃহীত
রুশ এক সৈনিক ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইনে অতিরিক্ত ক্ষুধায় তার সহযোদ্ধা ‘ফোরা’র (Foma) মরদেহ খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা চালাত, তারপর নিজেই মারা যায়। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে কিয়েভ পোস্ট, যা ইউক্রেনের সানির্ভিগ গোয়েন্দা (HUR) ভুক্তভোগীদের ফোন কথোপকথন হ্যাক করে বের করেছে।
ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনাদের একটি টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস হয়েছে, যেখানে একজন সৈনিক তার সহযোদ্ধার সাথে এক ভয়ঙ্কর ঘটনা নিয়ে কথা বলছিলেন। তিনি বলেন, “ব্রেলক (Brelok) তার এক সহযোদ্ধা ফোমাকে (Foma) মেরে ফেলে এবং তারপর তার মরদেহ খেতে শুরু করে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সে ওই মরদেহ খেয়েছে।”
এমন ভয়ঙ্কর বিবরণ শুনে আরেকজন সৈনিক অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন, “ব্রেলকও কি শেষে ২০০ (অর্থাৎ নিহত সৈনিক) হিসেবে পাওয়া গেছে?” এই '২০০' কথাটি রাশিয়ার সৈনিকদের মধ্যে ব্যবহার হয় কোনো মৃত সৈনিককে বোঝাতে। জবাবে বলা হয়, হ্যাঁ—সে এখন ২০০।
এই কথোপকথনের ভিত্তিতে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাদের মধ্যে নৈতিক ও মানবিক বিপর্যয় চলছে, যার ফলে তারা এমন নিষ্ঠুর এবং অবিশ্বাস্য কাজেও লিপ্ত হচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় রাশিয়া একটি ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেয়—কারাগারে থাকা ১৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজারের মতো সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়। এদের মধ্যে অনেকেই ভয়ংকর অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত, যেমন খুন, ধর্ষণ ও ক্যানিবালিজম (মানুষ খাওয়ার অপরাধ)। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তিনজন হচ্ছেন—ডেনিস গোরিন, যিনি চারজনকে হত্যা করে একজনের শরীর খেয়েছিলেন; নিকোলাই ওগোলবিয়াক, যিনি দুই তরুণীকে হত্যা করে তাদের অঙ্গ রান্না করেছিলেন; এবং দিমিত্রি মালিশেভ, যিনি তিনজনকে হত্যা করে একজনের হৃদপিণ্ড ভেজে খেয়েছিলেন।
এদিকে, সম্প্রতি রাশিয়া আবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বড় ধরনের মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও অন্তত ৪৪ জন আহত হয়েছেন। কিয়েভের বিভিন্ন আবাসিক ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, মস্কোয় ইউক্রেনের পাঠানো দুটি ড্রোন প্রতিহত করার দাবি করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। ড্রোন হামলার পর মস্কোর বিমানবন্দরগুলো কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়। এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনাকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
রুশ সেনাতে অপরাধীদের নিয়োগ, ক্ষুধায় ক্যানিবারিজম—ইউক্রেনে যুদ্ধ কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তার ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত।
মুমু ২