
ছবিঃ সংগৃহীত
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত চতুর্থ দিনে পা রাখলেও উত্তেজনা কমার কোনো লক্ষণ নেই। ইরানের পাল্টা আক্রমণে ইসরায়েলের সামরিক ও বেসামরিক পরিকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও ইসরায়েল সরকার গণমাধ্যমে সরাসরি তথ্য সংগ্রহে বাধা দিচ্ছে, তবুও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূত্রে উঠে এসেছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র।
হামলার সূত্রপাত এবং প্রথম ধাক্কা:
গত শুক্রবার ভোরে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি’র আওতায় শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বেশ কিছু মিসাইল প্রতিহত করলেও, একাধিক ভবন ধ্বংস হয় এবং কয়েকটি সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামো:
-
এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান: ইরানের দাবি অনুযায়ী, তারা দুটি ইসরায়েলি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে এক নারী পাইলট আটক হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়। যদিও ইসরায়েল এই তথ্য অস্বীকার করেছে, তবে যদি সত্যি হয়, তাহলে অন্তত ২০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে ইসরায়েলের।
-
ড্রোন ধ্বংস: সালমাস সীমান্ত অঞ্চলে ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলের একাধিক ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যেগুলো গুপ্তচরবৃত্তিতে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
-
বিমানবন্দর ও শহর: বেনগুরিয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হাইফা, বাদইয়াম, নেতানিয়া, হারজলিয়া, রেহভতসহ একাধিক শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব পড়েছে। এতে বহু ভবন বিধ্বস্ত হয় এবং বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
-
গবেষণা প্রতিষ্ঠান: রেহভতে অবস্থিত ওয়েজমেন ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স হামলায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, যদিও হতাহতের খবর নেই।
প্রাণহানি ও আহত:
ইসরায়েল সরকারের দেওয়া তথ্যমতে—
-
মৃত: অন্তত ১৩ জন
-
আহত: ৩৮০ জন
-
ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন: এখন পর্যন্ত ২০০টির বেশি ব্যবহৃত
-
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা: অন্তত ২২টি স্থানে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি
মার্কিন দূতাবাসে প্রভাব:
১৬ই জুন, ইরান থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবে মার্কিন দূতাবাসের নিকটবর্তী এলাকায় আঘাত হানে, যার ফলে দূতাবাস ভবন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে একদিনের জন্য কূটনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।
গোয়েন্দা যুদ্ধ ও প্রতিরোধ:
এছাড়া, ইরানে গোপন অভিযানে মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থার দুই সদস্যকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। উদ্ধার করা হয়েছে ২০০ কেজি বিস্ফোরক এবং ২৩টি ড্রোন। ইরনার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
উপসংহার:
যদিও ইসরায়েল সরাসরি সব তথ্য প্রকাশ না করায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী—ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের কৌশলগত পরিকাঠামো, সামরিক শক্তি এবং জননিরাপত্তায় বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে।
সতর্ক দৃষ্টিতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে গোটা বিশ্ব।
ইমরান