
ছবি: সংগৃহীত
বেঙ্গালুরুর জয়নগরে এক র্যাপিডো বাইক চালকের হাতে এক নারী যাত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযোগ, দ্রুতগতির গাড়ি চালানোর জন্য ওই নারী চালক সুমন এস-কে মাঝপথে থামাতে বলেন এবং এ নিয়ে বিতর্কে জড়ান।
নারীটি এক স্বর্ণের দোকানে কাজ করেন বলে জানা গেছে। ইংরেজিতে কথা বললেও চালক কেবল কন্নড় ভাষা বোঝেন, যার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে যোগাযোগে সমস্যা হয় এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, নারীটি ভাড়া না দিয়ে হেলমেট ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং চালক সুমনকে মারেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সুমন তাকে চড় মারেন, ফলে তিনি মাটিতে পড়ে যান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুমনকে আটক করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, দুজনেই পথচারীদের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি। এমনকি চড় মারার পরেও কেউ থামাতে আসেননি। চালক সুমন নিজের কার্যকলাপকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করে বলেন, “তিনি বারবার রাস্তার মাঝখানে থামাতে বলছিলেন। আমি বুঝিয়ে বলেছিলাম, সেখানেই থামলে পেছন থেকে কেউ ধাক্কা দিতে পারে।”
তিনি আরও স্বীকার করেন যে তিনি নারীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, "তোমার দেশে ফিরে যাও।" সুমনের দাবি, নারীটি তাকে গালিগালাজ করেন এবং কলার ধরে টান দেন। “তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি কি শিক্ষিত কিনা... বারবার খারাপ ভাষা ব্যবহার করছিলেন। আমি ভাড়া চেয়েছিলাম, তিনি তখন কলার ধরে মারধর করেন।”
“আমি তাকে বলি, তাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করার অধিকার নেই। এরপর সে টিফিন বক্স দিয়ে আমাকে দু’বার মারেন। তখন আমি তাকে চড় মারি,” বলেন সুমন।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা নারীকে FIR দায়ের করতে বলেন, কিন্তু তিনি বিষয়টি এগিয়ে নিতে চাননি। বর্তমানে একটি নন-কগনাইজেবল রিপোর্ট (NCR) দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পরে এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই নারী বলেন, চালক ট্রাফিক আইন মানছিলেন না। “আমি ভাড়া পরিশোধ করেছি এবং হেলমেটও ফিরিয়ে দিয়েছি,” বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, "এই কন্নড়ভাষীরা ভাষা নিয়ে সমস্যা করে। আমি ঝগড়া করতে চাইনি। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ এখানে আসে। কিন্তু কন্নড়ভাষীরা বলে, যদি কন্নড় না জানো, তবে রাজ্য ছেড়ে চলে যাও। কিন্তু সে রাজ্য না বলে দেশ বলেছে!"
উল্লেখ্য, কর্ণাটক হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যে বাইক ট্যাক্সি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পরিবহনমন্ত্রী রামালিঙ্গা রেড্ডি বলেন, “তিন মাস আগে আদালত বলেছে বাইক ট্যাক্সি অবৈধ। ছয় সপ্তাহ সময় দিয়েছিল, পরে আবার ছয় সপ্তাহ বাড়ানো হয়। এখন ১২ সপ্তাহ শেষ।
অ্যাগ্রিগেটরদের আদালতের আদেশ মানতেই হবে।” বেঙ্গালুরুতে র্যাপিডো বাজারের ৬০% দখলে রেখেছে এবং প্রতিদিন ১৬.৫ লাখ যাত্রা সম্পন্ন করে। গোটা রাজ্যে অন্তত ১.৫ লাখ গিগ শ্রমিক এই সেবার সঙ্গে জড়িত।
শহীদ