মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সরাসরি সম্প্রচারের সময় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টুডিওতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার (১৬ জুন) ভোরে এই হামলা চালানো হয় বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে। বিস্ফোরণের ধ্বংসযজ্ঞের মুহূর্ত ধরা পড়ে ক্যামেরায়, যা এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান ব্রডকাস্টিং (আইআরআইবি) এর আওতাধীন ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান নিউজ নেটওয়ার্ক (আইআরআইএনএন)-এর সদর দপ্তরে এই হামলা হয়। ওই সময় একজন উপস্থাপক লাইভ সম্প্রচারে ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছিলেন। মাঝপথে বিস্ফোরণের শব্দ ও ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়া স্টুডিও থেকে তাকে দ্রুত ক্যামেরার বাইরে চলে যেতে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায় এবং পূর্বে ধারণকৃত একটি প্রোগ্রামে ফিরে যায় চ্যানেলটি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এর আগেই হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, “ইরানের প্রোপাগান্ডা মেশিন অদৃশ্য হয়ে যাবে।”
এই হুমকির ঠিক এক ঘণ্টার মধ্যে স্টুডিওতে হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার আগ মুহূর্তে ইসরায়েল তেহরানের একটি বিশেষ অংশ খালি করার সতর্কবার্তা দেয়, যেখানে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন ছাড়াও জাতীয় পুলিশ সদর দপ্তর এবং তিনটি বড় হাসপাতাল রয়েছে, যার একটি পরিচালনা করে ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ড।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র জেনারেল এফি ডেফরিন জানান, “আমরা এখন তেহরানের আকাশপথে পূর্ণ বিমান নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করেছি। এ পর্যন্ত ইরানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মিসাইল লাঞ্চার ধ্বংস করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, কুদস ফোর্সের ১০টি কমান্ড সেন্টারেও সফলভাবে হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের ওপর ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে এবং তাদের আরও কঠোর প্রতিশোধ আসছে। শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২৪ জন ইরানি নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
বিশ্লেষকদের মতে, লাইভ সম্প্রচারে এমন হামলা নজিরবিহীন। এতে মিডিয়া, প্রতিরক্ষা ও সাইবার যুদ্ধ সব একসঙ্গে নতুন মাত্রা পেল।
মিমিয়া
