
ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এই আবহে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে ইরানের অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র 'কাসেম বাসির'।
গত মে মাসেই ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে। ২০০ কিলোমিটার পাল্লার 'কাসেম বাসির' কঠিন জ্বালানি-চালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। আর সেই মিসাইল দিয়েই ইরান ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ ভেদ করেছে কিনা, তা নিয়ে কানাঘুষো চলছে। অনেকের মতে, ‘কাসেম বাসির’ নিয়ে আমেরিকাও বাড়তি চাপে থাকতে পারে।
কাসেম বাসির মার্কিন থাড এবং প্যাট্রিয়ট বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি ইসরায়েলি সরকারের বিভিন্ন স্তরযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কার্যকরী। ইরানি টিভি গত ১৭ এপ্রিল পরিচালিত একটি ব্যালিস্টিক পরীক্ষা সম্পর্কিত ফুটেজ সম্প্রচার করে। এতে কাসেম বাসিরের উৎক্ষেপণ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ওপর এর সুনির্দিষ্ট প্রভাব দেখানো হয়েছে। পরীক্ষার সময় ক্ষেপণাস্ত্রটির বিরুদ্ধে তীব্র ইলেকট্রনিক হস্তক্ষেপ প্রয়োগ করা হয়। তবুও এটি প্রভাবিত হয়নি। গত বছর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ট্রু প্রমিজ-১ এবং ২ নামে পরিচিত দুটি প্রতিশোধমূলক অভিযানের অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত ক্ষেপণাস্ত্রটির চালচলন ক্ষমতা বেশি বলে জানা গিয়েছে।
কাসেম বাসির ক্ষেপণাস্ত্রের পূর্বসূরী হলো হজ কাসেম ক্ষেপণাস্ত্র। এটি একটি দুই-পর্যায়ের কৌশলগত কঠিন-জ্বালানি আধা-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা ২০২০ সালের অগস্টে উন্মোচিত হয়েছিল এবং মৃত ইরানি কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির নামে নামকরণ করা হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্রটির মোট ভর ৭ টন, ৫০০ কিলোগ্রাম ওজনের একটি ওয়ারহেড এবং ১১ মিটার দৈর্ঘ্য। এর বায়ুমণ্ডলীয় প্রবেশ গতি ম্যাক ১১ এবং এর প্রভাব গতি ম্যাক ৫, যা এটিকে হাইপারসনিক ডোমেইনে রাখে।হাজ কাসেমের রিপোর্ট করা পাল্লা ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এটি উন্মোচনের সময় বলা হয়েছিল যে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এর পাল্লা বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এটি টানা ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে পারে।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি থাড সিস্টেম গতিশক্তিকে ব্যবহার করে মিসাইল প্রতিহত করার ক্ষমতা রয়েছে। ২০০ কিলেমিটার দূরত্ব এবং ১৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তুকে শণাক্ত করতে সক্ষম। টার্মিনাল পর্যায়ে ক্ষেপণাস্ত্র বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদানে সক্ষম। গতিবেগ মাক-৮। এর ফলে উচ্চগতির লক্ষ্যবস্তুকে শণাক্ত করতে পারে সহজেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরশাহি এবং দক্ষিণ কোরিয়া এই সিস্টেম ব্যবহার করে।মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইজরায়েলে দ্বিতীয় থাড ব্যাটারি হস্তান্তর করেছে বলে জানা গিছে। গত বছরের অক্টোবরে, ইরান এবং তার মিত্রদের আরও আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে থাড ব্যাটারি পাঠিয়েছিল।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
ফুয়াদ