
ছবি: সংগৃহীত
তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবারও বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ ভোরে বিমানবন্দর চত্বরে প্রথম হামলার পর সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে দ্বিতীয়বারের মতো আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়। বিমানবন্দরের কিছু অংশে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হলেও ইরানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রানওয়ে এবং টার্মিনাল এখনো সচল রয়েছে।
এই তথ্য আল জাজিরা-র প্রতিবেদনের সূত্রে জানা গেছে, যেখানে হামলার পরপরই ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিমানবন্দরের কাছে আগুন এবং কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।
ইরানের প্রতিশোধ: ২০০’র বেশি ক্ষেপণাস্ত্র
আজ সকালেই ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ২০০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে নিক্ষেপ করেছে। রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, তেল আবিব, রিশন লেইজিয়ন, আশকেলনসহ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ বেশ কিছু হামলা প্রতিহত করলেও অন্তত তিনজন নিহত এবং ৭০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
ফের হামলা মেহরাবাদে
পলিটিকো ও গার্ডিয়ান জানায়, সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে মেহরাবাদ বিমানবন্দরের কাছে দ্বিতীয় দফা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই বিস্ফোরণও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও সরাসরি দায় স্বীকার করেনি দেশটি। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা IRNA জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং কিছু ফ্লাইট বাতিল বা রি-রাউট করা হয়েছে।
কূটনৈতিক অঙ্গনে সাড়া
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জাতিসংঘে একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, “ইসরায়েল এখন সব রকম সীমা অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি চুপ করে থাকে, তবে দায় তাদের ওপরও বর্তাবে।” (সূত্র: আল জাজিরা)
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “তেহরান যদি আগুন জ্বালায়, তবে আমরা তাকে পুড়িয়ে ছাই করে দেব।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স তাদের মধ্যপ্রাচ্যস্থ ঘাঁটিগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। রাশিয়া ও চীন উভয় পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আজ একটি জরুরি বৈঠকে বসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংঘর্ষ এখন আর কেবল সীমান্তের বিষয় নয়। এটি দ্রুতই একটি পূর্ণমাত্রার আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। ইসরায়েল ও ইরান উভয়ের মধ্যে প্রযুক্তি, ড্রোন এবং সাইবার সক্ষমতার যে প্রদর্শন ঘটছে, তা বিশ্বশান্তির জন্য অশনিসঙ্কেত।
Mily