ফ্লাইট ছাড়তেই বিস্ফোরণ! ১০ মিনিট দেরি বাঁচাল জীবন

মাত্র ১০ মিনিট—এই সময়টাই জীবনের সঙ্গে মৃত্যুর পার্থক্য গড়ে দিল ২৮ বছর বয়সী ভূমি চৌহানের জীবনে। আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের ভয়াবহ যানজটের কারণে একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট মিস করলেও, সেই ‘অভাগা’ মুহূর্তটিই হয়ে উঠলো তার জীবনের সবচেয়ে সৌভাগ্যজনক সময়।

পেশায় বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থী ভূমি চৌহান যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলে স্বামীর সঙ্গে থাকেন। সম্প্রতি তিনি ভারতে ছুটিতে এসেছিলেন। ফেরার সময় তার গন্তব্য ছিল লন্ডনের গ্যাটউইক। বুকিং ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার AI171 ফ্লাইটে, যা বৃহস্পতিবার দুপুরে রওনা দেয়ার কথা ছিল। তবে আহমেদাবাদের রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটে আটকে পড়ে ভূমি বিমানবন্দরে পৌঁছান নির্ধারিত বোর্ডিং সময়ের ১০ মিনিট পর।

“আমরা ড্রাইভারের ওপর খুব রেগে গিয়েছিলাম। বিমানে উঠতে না পারার হতাশা নিয়েই বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসি। বাইরে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম আর ট্রাভেল এজেন্টের সঙ্গে রিফান্ডের কথা আলোচনা করছিলাম,”—বলছিলেন ভূমি।

ঠিক তখনই আসে এক ফোন কল—ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়েছে!

যে বিমানটিতে ওঠার জন্য এত চেষ্টা করেছিলেন, সেটিই ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। বিমানটিতে থাকা ২৪১ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু সদস্যের কেউ বাঁচেননি। উপরন্তু, মাটিতে থাকা আরও অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়। সেই মর্মান্তিক ঘটনার খবর শুনে হতবাক হয়ে যান ভূমি চৌহান। “এ যেন অলৌকিক রক্ষা। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না,”—বলেন তিনি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে।

তিনি আরও জানান, অনলাইনে চেক-ইন শেষ করলেও মাত্র ১০ মিনিট দেরিতে পৌঁছানোর কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাকে বোর্ডিংয়ের অনুমতি দেয়নি। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত বিমানে উঠতে পারেননি।

বিমানটি রওনা দেওয়ার পরপরই উচ্চতায় উঠতে না পেরে এক আবাসিক এলাকায় ভেঙে পড়ে। ভেতরে থাকা সব যাত্রীর মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ব্রিটেন, ভারত, পর্তুগাল ও কানাডার নাগরিকরাও ছিলেন।

বেঁচে যাওয়া ভূমি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম সময়মতো বের হলে ফ্লাইট মিস করতাম না। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, এই দেরিটুকুই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।”