
ছবি: সংগৃহীত
চিকলায়ো, পেরু জন্মসূত্রে “গ্রিংগো” হলেও, পেরুর চিকলায়ো শহরের মানুষদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বলবেন, পোপ লিও চতুর্দশ নিঃসন্দেহে একজন পেরুভিয়ান। শুক্রবারের স্থানীয় কিছু শিরোনামই এর প্রমাণ।
৬৯ বছর বয়সী রবার্ট প্রেভোস্ট পেরুতে দুই দশকেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন। ২০১৪ সালে তৎকালীন পোপ ফ্রান্সিস তাকে পেরুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চিকলায়োর বিশপ হিসেবে নিযুক্ত করেন।
শহরের নানা রেস্তোরাঁয় গর্ব করে লেখা আছে—“পোপ এখানে খেয়েছেন।” এক রেস্তোরাঁ মালিক আমাকে লিওর প্রিয় খাবার পরিবেশন করেন—ছাগলের মাংস, সাদা শিম আর ভাত (অসাধারণ স্বাদ)।
সিটি হলের গায়ে বিশাল একটি ব্যানারে পোপ লিওর ছবি ঝুলছে।
একটি কাছের গির্জায়, যেখানে তিনি একসময় পবিত্র মাস পরিচালনা করতেন, সেখানে এক বয়স্ক সদস্য আমাকে বললেন, পোপ নির্বাচনের খবর দেখে তিনি খুশিতে চিৎকার করেছিলেন।
“আমি কাঁদতে শুরু করেছিলাম,” বললেন তিনি, যোগ করলেন—এই শহরের জন্য পোপ অনেক কিছু করবেন। চিকলায়ো ও তার আশপাশের এলাকা ধনী নয়। এখানে মানুষ যা কিছু অর্জন করে, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে করে।
যদি নতুন পোপ সত্যিই নম্র এবং শ্রমজীবী দরিদ্রদের জীবনের কাছাকাছি থাকেন, তবে এই অঞ্চলেই তিনি সেই সহানুভূতির শিক্ষা পেয়েছেন। পোপ নিজেই ২০২৪ সালে বলেছিলেন—
“পেরুর মানুষ আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে দরিদ্রদের সঙ্গে হাঁটতে হয়, কীভাবে অন্যদের সংগ্রাম ও আনন্দে পাশে থাকতে হয়।”
আপনি হয়তো এরকম গল্প শুনেছেন আগে: কোনো ধর্মীয় মিশনারি কয়েক মাসের জন্য গিয়ে কিছু ঘর তৈরি করে, তারপর ফিরে এসে বলেন, “এই অভিজ্ঞতা আমাকে বদলে দিয়েছে।” এটা সেই ধরনের দারিদ্র্য-ভ্রমণ, যেটা অনেক নিম্নআয়ের দেশের মানুষ অপছন্দ করেন।
এখানেই পোপ লিও আলাদা ছিলেন।
অনেক মিশনারি আসেন আর চলে যান, কিন্তু লিও থেকে গেছেন—দশকের পর দশক। জন্মদিনে, জানাজায় তিনি থাকতেন। স্থানীয় রেস্তোরাঁয় খেতেন, স্থানীয় ভাষা শিখেছিলেন, গির্জার গণ্ডি ছেড়ে রাস্তায় গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। মহামারির সময় অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতেও ভূমিকা রাখেন।
এখানকার মানুষজন সেটা সম্মান করে। তারা বলেন, তিনি সেটা প্রাপ্য ছিলেন।
শিকাগোর শহরতলি থেকে আসা এই বিনয়ী মানুষটি অবিশ্বাস্যভাবে উত্তর-পশ্চিম পেরুর মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন।
“আমি মনে করি, ওনার হৃদয়ে তিনি একজন লাতিনো, গ্রিংগো নন,” বলেন বহুদিনের বন্ধু ফাদার জর্জ আন্তোনিও মিলান কোট্রিনা, হেসে। তিনি কনক্লেভের আগের দিন তৎকালীন কার্ডিনাল প্রেভোস্টকে বার্তা পাঠিয়ে বলেছিলেন, “তোমার কথা ভাবছি, কনক্লেভে সব কিছুই হতে পারে।”
কার্ডিনাল তখনো জানতেন না, তিনি শীঘ্রই ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে আসছেন।
শহীদ