ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তির প্রশংসা করলেও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে উদ্বেগ

ব্রেক্সিট নিয়ে ট্রাম্পের সংশয়

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৮ নভেম্বর ২০১৮

ব্রেক্সিট নিয়ে ট্রাম্পের সংশয়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পাদিত ব্রেক্সিট চুক্তিটি ইইউর জন্য ভাল হবে। তবে এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি জানান। রবিবার ব্রাসেলসে ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশ চুক্তিটি অনুমোদন করে। সোমবার হোয়াইট হাউসের সামনে ট্রাম্প এ বিষয়ে সাংবাদিককেদর প্রশ্নের উত্তর দেন। বিবিসি ও গার্ডিয়ান। ব্রেক্সিট চুক্তির মূল পরিকল্পনাকারী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। ট্রাম্প বলেন, এ চুক্তির কারণে হুমকির মুখে পড়তে পারে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার এই চুক্তি ইউনিয়নের জন্য অনেক ভাল মনে হচ্ছে, ধারণা করা যায় যুক্তরাজ্য হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করতে সক্ষম হবে না। মে’র ব্রেক্সিট চুক্তির ১০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য বিশ্বের যে কোন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারবে। ১১ ডিসেম্বর ব্রিটিশ এমপিরা চুক্তিটি অনুমোদনে ভোট দেবেন। এর দুদিন আগে বিরোধী লেবার দলের নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গে টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হবেন মে। চুক্তি নিয়ে তিনি আগে থেকেই ব্যাপক সমালোচনার মুখে ছিলেন। সোমবার পার্লামেন্টে সব দলের এমপিরা তার আবারও সমালোচনা করেন। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য করা যাবে কি না সেটি যুক্তরাষ্ট্রকে খতিয়ে দেখতে হবে। যে কারণ এখন যদি আপনারা চুক্তিটির বিষয়ে মনোযোগ দেন তাহলে মনে হবে তারা আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারবে না। আমি মনে করি না তারা এটাই চেয়েছে। ট্রাম্প হয়ত মনে করছেন ব্রেক্সিট চুক্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে সক্ষম হবে না যুক্তরাজ্য। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে, রবিবার যে ব্রেক্সিট চুক্তি হয়েছে তার ফলে যুক্তরাষ্ট্রসহ কোন দেশের সঙ্গেই যুক্তরাজ্যের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করতে সমস্যার কোন কারণ নেই। রবিবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করার পর সংবাদ সম্মেলনে মে আশা প্রকাশ করেন যে বড়দিনের আগেই হাউস অব কমন্সে চুক্তিটি অনুমোদিত হতে পারে। তিনি বলেন, পার্লামেন্টে চুক্তিটি পাস হোক জনগণ এমনটাই আশা করে। যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ মানুষই চুক্তির পক্ষে। গত সপ্তাহে ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া প্রকাশ করার পর থেকেই এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে লেবার পার্টি, লিব ডেম, এসএনপি, ডিইউপি এমনকি মে’র কনজারভেটিভ পার্টিরও অনেক নেতা চুক্তিটি পাস হতে দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। লেবার নেতা করবিন রবিবার বলেছেন, তার দল পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেবে। তিনি এই চুক্তিকে ব্রাসেলসের নেতাদের সঙ্গে ব্যর্থ আলোচনার ফসল হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘এটা আমাদের সারাবিশ্বে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রাখবে।’ সবশেষ ট্রাম্প যে মন্তব্য করলেন সেটি মে’র জন্য পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন করে তুলবে। তিনি চুক্তির প্রশংসা করলেও এর ফলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তার দেশের ভবিষ্যত বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। কনজারভেটিভ পার্টিও ৮৯ জন সদস্য চুক্তির বিরোধিতা করে বলেছেন, এতে যুক্তরাজ্যের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়নি। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির ইয়ান ব্ল্যাকফোর্ড বলেছেন, মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা ‘যদি ও কিন্তুতে ভরপুর’। এটি স্কটল্যান্ডের জেলেদের বিরাট বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। লিব ডেম নেতা ভিন্স কেবল ও গ্রীন পার্টির এমপি ক্যারোলিন লুকাস ব্রেক্সিট বিষয়ে নতুন করে গণভোটও চেয়েছেন।
×