ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এনআরসি তালিকায় নাম না দেখে বিস্মিত অনেকে

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১ আগস্ট ২০১৮

এনআরসি তালিকায় নাম না দেখে বিস্মিত অনেকে

অসমে তেজপুরে এনআরসি সেবা কেন্দ্রে সোমবার প্রকাশিত রাজ্যের ‘ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্সের (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় নাম দেখতে না পেয়ে নিরাশ হয়েছেন অসংখ্য বাসিন্দা। তাদের দাবি কর্তৃপক্ষ যাই বলুক না কেন, তারা প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন এবং যেগুলো কয়েক দফা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তারপরও চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় তাদের নাম নেই। তাদের প্রশ্ন কিভাবে এমন হলো? খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইনের। অসমের দারাং জেলায় ঢোলপুর এলাকার বাসিন্দা সাবান আলী বলেন, তিনি সোমবার বেলা ১১টায় অনলাইনে এনআরসি খসড়া তালিকা দেখে তিনি চমকে ওঠেন। পুরো খসড়া তালিকায় তার, তার স্ত্রী ও ছেলের নাম নেই। সাবান (৪০) সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। এরপরে তাকে কী করতে হবে। পুরো বিষয়টা তাকে একটা বিভ্রান্তিতে ফেলে দিয়েছে। সাবান বলেন, এনআরসি প্রক্রিয়ায় তার পরিবারের যথার্থতা যাচাই-বাছাই হয়েছে তিন বার। তাকে তখন বলা হয়েছে, তার দাদার নাম ঠিক নয়। কারণ আবেদনে উল্লেখিত এ নামের ব্যক্তি তার এলাকার অন্য এক পরিবারের কর্তা। এ ভুল দেখানোর পর আমি আমার দাদার সঠিক নামের তথ্য জমা দিই। তারপরও এনআরসি খসড়া তালিকায় আমার নাম নেই। ঢোলপুরের কাছে কিরাকারা গ্রামের ৮ ভাইয়ের ৫ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সবার বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। ভাইদের একজন সাদ্দাম দুযেন বলেন, আমরা একই দলিল-কাগজপত্র জমা দিয়েছি। তারপরও আমাদের জন্য এ অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এর মানে পুরো প্রক্রিয়ায় বাদ দেয়ার একটা ফাঁক ছিল। অসম এনআরসি প্রথম খসড়া প্রকাশ করে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর। ওই তালিকায় ৩ কোটি ২৯ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে ১ কোটি ৯০ লাখ বাসিন্দার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সোমবার আরেকটি তালিকা প্রকাশের পর একই ধরনের অভিযোগের সংবাদ পাওয়া যায়। এনআরসির রাজ্য সম্বয়ক প্রতীক হাজেলা বলেন, যারা চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় তাদের নাম দেখতে পাননি তারা তাদের নাম বাদ পড়ার কারণ জানার জন্য তাদের সংশ্লিষ্ট এনআরসি সেবা কেন্দ্রে (এনএসকে) যেতে পারেন এবং তাদের দাবি পেশ করার জন্য তাদের একটি আবেদন ফরম দেয়া হবে। সংশোধনের জন্য দাবি, আপত্তি ও অনুরোধ জানানো সংক্রান্ত ফরম পাওয়া যাবে ৭ আগস্ট থেকে এবং জমা দিতে হবে ৩০ আগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। হাজেলা বলেন, এনআরসির লোকাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স রেজিস্টারস বলেছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা দাবাংয়ে ১৫ হাজার ৫শ’ ৫২ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৯ হাজার ২শ’ ৮৮ জনের নাম খসড়া তালিকায় এসেছে। বাদ পড়াদের মধ্যে অনেক নারী থেকে থাকবেন যদিও এখনি আমি এদের কোন সংখ্যা উল্লেখ করতে পারলাম না। এ নারীরা বিশেষত বিবাহিত। এরা গাঁও পঞ্চায়েতের প্রত্যয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন এবং তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। কারণ গ্রামের প্রধান তাদের প্রত্যয়নপত্রের যথাযথ রেকর্ড ও নিবন্ধন রাখেননি। যারা অসম এনআরসি খসড়া তালিকার বাইরে রয়েছেন তারা তিন মাসের মধ্যে তাদের দাবি জানাতে পারবেন। ঢোলপুরের দিনমজুর সাফের আলী উদ্বেগে রয়েছেন তার ও তার ২ ছেলে-মেয়ের নাম রয়েছে তালিকায়। কিন্তু তার স্ত্রীর নাম নেই। তার স্ত্রী এনআরসিতে গাঁও পঞ্চায়েতের সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সাফের আলী আশাবাদী। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী সত্যিকার ভারতীয় নাগরিক এবং পরবর্তী পর্যায়ে নাগরিকত্ব পাবে।
×