ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে ফের হস্তক্ষেপের শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২৩ জুলাই ২০১৮

নির্বাচনে ফের হস্তক্ষেপের শঙ্কা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হেলসিঙ্কি সম্মেলনের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন হিলারি ক্লিনটন। ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ইস্যুতে ঠিকমতো জবাব দিতে পারেননি বলে হিলারি মনে করেন। রুশ হস্তক্ষেপকে হিলারি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘অস্বস্তিকর’ এবং একটি ‘রহস্যময়’ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন। গার্ডিয়ান। হিলারি শনিবার নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে অনুষ্ঠিত সঙ্গীত বিষয়ক উৎসব ওজিফেস্টে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করার জন্য রুশ এজেন্টরা নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারে, নতুন করে এ আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। তারা এখন সার্ভার এবং অপারেশন্স ভোটিং মেশিনের মতো নির্বাচনী অবকাঠামো টার্গেট করে এবার হামলা চালাতে পারে। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ বেশি পপুলার ভোট পান। কিন্তু তিনি ইলেক্টোরাল ভোটে ট্রাম্পের কাছে হেরে যান। সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ট্রাম্পের পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট ওবামার মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। হিলারি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা টার্গেট করে ব্যাপক বিস্তৃত এবং সফল হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের গণতন্ত্রের প্রাণকেন্দ্র টার্গেট করে হামলা হয়েছে। কিন্তু রহস্যের বিষয় প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে একেবারে নীরব। তিনি দেশের পক্ষে কোন কথা বলেননি।’ ওই হামলাকে ‘আতঙ্কজনক ও বিপর্যয়কর’ উল্লেখ করে হিলারি বলেন, ‘প্রতিটি মার্কিন নাগরিকের জন্যই এটি উদ্বেগের বিষয়। ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে ওই সংবাদ সম্মেলনের আগে দুই নেতা ঘণ্টা দুই নিজেদের মধ্যে কি কথা বলেছিলেন তা প্রকাশ করার দাবি জানান হিলারি। পুতিন কি বলেছেন সেটি বিশ্ব দেখেছে। দু নেতার একান্ত বৈঠকে ট্রাম্পের বক্তব্য কি ছিল সেটি আমরা জানতে পারিনি। হোয়াইট হাউসও এ সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। রাশিয়ার ওই কাজটি যে আমাদের গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি একটি আঘাত ছিল সেটি ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে রহস্যজনক ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।’ হিলারি প্রশ্ন রাখেন ট্রাম্প কেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ইস্যুতে পুতিনের কাছে কোন ব্যাখা চাইলেন না। তিনি বলেন, পুতিনের কৌশল এখানে পরিষ্কার। পুতিন মানুষের মনস্তত্ব সঠিকভাবে বুঝতে এবং কাজে লাগাতে পেরেছেন। ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী একজন মানুষের পক্ষে তার সঙ্গে হাত মেলানোর সম্ভবনা খুবই কম। তিনি (ট্রাম্প) কেন পুতিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে এত আগ্রহী তার কারণ আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। হিলারি আরও বলেন, প্রযুক্তি কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো তাকে জানিয়েছে যে রাশিয়া নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারে। রুশদের এসব চেষ্টা প্রতিরোধ করতে ট্রাম্প প্রশাসন যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়নি বলেই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিযেছে। উদাহরণস্বরূপ হিলারি তথ্য চুরির কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সিলিকন ভ্যালির টেক এক্সপার্টরা তাকে বলেছেন রুশরা আমেরিকার কম্পিউটার সিস্টেমে নিয়মিত হামলা করছে। নির্বাচনের সময়ও এ রকম হামলার আশঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা বেশ দুর্বল জায়গায় আছি। আমাদের প্রশাসনও এ বিষয়ে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। হিলারি বলেন, পুতিন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোকে ভাঙ্গার চেষ্টা করছেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ফেলতে চাইছেন। তিনি বিভক্তি সৃষ্টি করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। তিনি যে আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় আঘাত হেনেছেন তার উদ্দেশ্য ছিল ট্রাম্পকে সহযোগিতা করা।
×