ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শতাধিক চিমনি বসিয়েও অবস্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে না

ফ্রায়েড চিকেন পাঠাও ॥ আটকে পড়া থাই কিশোরদের আকুতি

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ৮ জুলাই ২০১৮

ফ্রায়েড চিকেন পাঠাও ॥ আটকে পড়া থাই কিশোরদের আকুতি

থাইল্যান্ডে পাহাড়ের ভেতর আটকে পড়া কিশোর ফুটবল দলের সদস্যদের উদ্ধারের জন্য পাহাড়ে শতাধিক চিমনি বসিয়েছে উদ্ধার কর্মীরা। উদ্ধারকারী দল নেতা নারংসাক ওসোতানাকন বলেন, কোন কোন চিমনি চারশ’ মিটার গভীরে পোঁতা হয়েছে। কিন্তু এখনও তাদের অবস্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এদিকে জলমগ্ন গুহায় আটকে পড়ে থাকা কিশোররা চিঠির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো তাদের মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। আবেগঘন ওই চিঠিতে তারা বলেছে, চিন্তা করো না। আমরা সবাই শক্তিশালী। হাতে লেখা ওই চিঠিতে তারা খাবার পাঠানোর বিশেষ করে ‘ফ্রায়েড চিকেন’ পাঠানোর অনুরোধও করেছে। একজন লিখেছে, টিচার, আমাদের অনেক বেশি হোমওয়ার্ক দেবেন না! কিশোর ফুটবল দলটির ২৫ বছর বয়সী কোচও গুহায় আটকা পড়ে আছেন। তিনি আলাদা চিঠিতে কিশোরদের মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ‘কিশোরদের খেয়াল রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন’ বলে জানিয়েছেন। কোচ এক্কাপোল চ্যাংটাওং চিঠিতে লেখেন, সব বাচ্চাদের প্রিয় মা-বাবা, এখন তারা সবাই ভাল আছে। উদ্ধারকারী দল আমাদের সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করছে এবং আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে শিশুদের যতœ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। যারা আমাদের সাহায্য করতে এসেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ। সেইসঙ্গে আমি বাচ্চাদের মা-বাবার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। গত সপ্তাহে গুহার ভেতর ফোনের লাইন বসানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়। পরে শিশুদের মা-বাবাদের চিঠি গুহার ভেতর পৌঁছে দেয়া হয়। যেগুলোর জবাব দেয় তারা। গত ২৩ জুন বিকেলে ফুটবল প্রশিক্ষণের পর কিশোরদের ওই দলটি তাদের কোচের সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী একটি ফরেস্ট পার্কের ভেতর অবস্থিত ‘থাম লুয়াং’ গুহায় প্রবেশ করে। দলের কিশোরদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। নৌবাহিনীর ডুবুরি, সামরিক বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবীসহ প্রায় হাজার খানেক মানুষ বিস্তৃত এ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া কর্মীদের সংখ্যার কারণে গুহার ভেতর অক্সিজেনের মাত্রা কমে আসছে বলে জানিয়েছেন চিয়াং রাই প্রদেশের গবর্নর নারোংসাক ওসোত্থানাকর্ন। স্বাভাবিকভাবে বাতাসে সর্বনিম্ন ২১ শতাংশ অক্সিজেনের উপস্থিতি নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু কিশোর দলটি গুহার যে অংশে আটকা পড়ে আছে সেখানে বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা কমে ১৫ শতাংশ হয়ে গেছে। থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ চিয়াই রাইয়ের এ গুহাটিতে তারা যখন প্রবেশ করে তখন এতে পানি ছিল না বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তারা গুহার ভেতরে প্রবেশের পর তুমুল বৃষ্টি শুরু হয় এবং আকস্মিকভাবেই পানি বেড়ে গিয়ে গুহার কিছু সঙ্কীর্ণ অংশ পুরোপুরি ডুবে যায়। গুহায় প্রবেশের পরদিন থেকেই দলটির খোঁজ শুরু করে উদ্ধারকর্মীরা। যদিও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ভীষণভাবে বিঘিœত হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত দশদিনের মাথায় সোমবার গভীর রাতে ব্রিটেনের দুই ডুবুরি কিশোর দলটিকে খুঁজে পায়। পানি বাড়তে থাকায় প্রাণ বাঁচাতে তারা গুহার প্রবেশ মুখ থেকে প্রায় চার কিলোমিটার ভেতরে ছোট একটি পাথুরে তাকের ওপর আশ্রয় নিয়েছিল। দলটিকে বের করে আনতে উদ্ধারকর্মীরা নানাভাবে চেষ্টা করছেন।
×