ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

জার্মানির পর্যবেক্ষণ সংস্থা রিগার্ডুর প্রতিবেদন

ইউরোপে চলছে শরণার্থী নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৫:২২, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

ইউরোপে চলছে শরণার্থী নির্যাতন

বলকান অঞ্চলের ভেতর দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের সময় শরণার্থীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জার্মানির পর্যবেক্ষণ সংস্থা রিগার্ডু এক প্রতিবেদনে জানায়, সার্বিয়া, হাংগেরি এবং ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে শরণার্থীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় এ দেশগুলোর সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশ। এসব নির্যাতনের মধ্যে পুলিশি সহিংসতা, লাঠিচার্জ ও বৈদ্যুতিক শক অন্যতম। -আলজাজিরা রিগার্ডু গত রবিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে চলতি বছর নির্যাতনের শিকার এমন ৮৫৭ জন শরণার্থীর বক্তব্য নথিভুক্ত করে। যাদের অনেকেই ছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা, লাঠিচার্জ ও কুকুরের কামড়ে বিপর্যস্ত। এরমধ্যে মাত্র ৫২ জনের ঘটনা ছিল সামান্য, বাকিদের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। এছাড়া রিগার্ডু হাঙ্গেরি ও ক্রোয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সার্বিয়ায় ১১০টি অবৈধ ডিপোর্টেশানের ঘটনা নথিভুক্ত করে। একইসাথে আছে ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে সেøাভেনিয়ার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পুশব্যাক করারও অভিযোগ। রিগার্ডু একটি অনলাইন ডাটাবেইজ চালু করেছে যেখানে পুশব্যাক কালে তোলা ডিজিটাল ছবির তথ্য প্রমাণের সাথে অভিযোগকারীদের বক্তব্যসহ বলকান রুটে নির্যাতিত শরণার্থীদের সব তথ্য বিস্তারিত দেয়া আছে। পর্যবেক্ষণ সংস্থার মতে, প্রকৃত নির্যাতিতের সংখ্যা আসলে অনেক অনেক বেশি। কারণ অধিকাংশ নির্যাতিতই পরবর্তীতে আর অভিযোগ করার সুযোগ পায় না। লাজারা মারিনকোভিক নামে একজন সার্বিয়ান সাংবাদিক যিনি শরণার্থী সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বলেন, রিগার্ডুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা বিষয়গুলো এ রুটের নিত্যদিনের স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। লাজারা আরও বলেন, সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে আমাকে বহু শরণার্থী তাদের ভাংগা মোবাইল ফোন এবং শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে বলেছে, সীমান্তে তাদের পুনরায় দেখলে খুন করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে। রিগার্ডুর প্রতিবেদনে বেশকিছু নির্যাতনের ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এমন একটি ঘটনায় আফগান ৬ শরণার্থীর বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, নবেম্বরের চার তারিখে তাদের ওপর হামলা চালায় ক্রোয়েশিয়ার সীমান্তরক্ষীরা। এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শরণার্থী বলেন, সীমান্তরক্ষীরা আমাদের বেদমভাবে পেটাতে পেটাতে বলছিল, আমরা তোমাদের এখানে চাই না। চলতি বছরের অক্টোবরের ১৯ তারিখে আরেকটি ঘটনায় ৪ আফগান শরণার্থী উল্লেখ করেছেন, ক্রোয়েশিয়ার পুলিশ কর্মকর্তারা বেদম প্রহারের পর তাদের টাকা-পয়সা নিয়ে নেয়। একপর্যায়ে এক পুলিশ অফিসার গাছের ডাল ভেংগে একজনের মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে একটা কথাও বলবে না, আবারও সার্বিয়া ফিরে যাও বলে হুমকি দেয়।
×