ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এবার ভারতকে সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর বলে আক্রমণ পাকিস্তানের

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এবার ভারতকে সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর বলে আক্রমণ পাকিস্তানের

অনলাইন ডেস্ক ॥ যুদ্ধক্ষেত্রের অপর নাম যেন জাতিসংঘের সাধারণ সভা! কখনও সেখানে কাশ্মীর নিয়ে ভারতকে চাপে ফেলতে চাইছে পাকিস্তান, তো কখনও প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ‘টেররিস্তান’ বলে উল্লেখ করছেন ভারতীয় কূটনীতিক। শনিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। আর এ বার আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কার্যত এক ঘরে হয়ে পড়া পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধেই জঙ্গি কার্যকলাপে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলল। ভারতকে ‘সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘে পাকিস্তানের প্রতিনিধি মালিহা লোধি অভিযোগ করলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অশান্তির আবহের জন্য ভারতই দায়ী। তাঁর আরও অভিযোগ, কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনী বেআইনি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি, ধৃত ভারতীয় চর কুলভূষণ যাদব পাকিস্তানে জঙ্গি সংগঠন চালানোর কথা স্বীকার করেছেন বলেও এ দিন দাবি করেন লোধি। এ দিন নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে লেখিকা অরুন্ধতী রায়ের মন্তব্য (ভারতের বাতাসে আজ যা আছে, তার বেশিরভাগটাই নির্ভেজাল আতঙ্ক। সেটা কাশ্মীর হোক বা ভারতের অন্যত্র) তুলে ধরেন তিনি। গত কাল, শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ সভায় পাকিস্তানকে রীতিমতো কটাক্ষ করে সুষমা বলেছিলেন, ‘‘আমরা আইআইটি, আইআইএম, এইমস তৈরি করেছি। পাকিস্তান তৈরি করেছে লস্কর, জইশ-ই-মহম্মদ। আমরা লড়ছি দারিদ্রের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশীর লড়াইটা যেন শুধু আমাদের সঙ্গেই।’’ এর আগে পাকিস্তানকে ‘টেররিস্তান’ বলে খোঁচা দিয়েছিলেন ভারতের শীর্ষ কূটনীতিক এনাম গম্ভীর। পাশাপাশি, জঙ্গিদের মদত দেওয়ার প্রসঙ্গে ইসলামাবাদের উপর ক্রমেই চাপ বাড়াচ্ছিল আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশ। এ বার তাই কার্যত দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ইসলামাবাদ নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ আনল। আর প্রত্যাশিত ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সব যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করল। নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে এ দিন লোধি অভিযোগ করেছেন, কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পায়নি স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ কেউই। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা ধারাবাহিক ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, এই অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন লোধি। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের সভায় ভারতের বিদেশমন্ত্রী আগেই স্পষ্ট করেছিলেন, কাশ্মীর নিয়ে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা নতুন করে সার্বিক ভাবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করেছি। আমাদের সমস্যার মধ্যে কোনও তৃতীয় পক্ষকে দরকার নেই।’’ লোধির আরও অভিযোগ, মোদী সরকার জাতিবিদ্বেষী ও ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ মেনে চলেছে। এই সরকারের নেতারা সকলে আরএসএস সদস্য। যাদের বিরুদ্ধে গাঁধীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ভারতের সব থেকে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে একজন ‘ফ্যানাটিক’। এই সরকার মুসলিম গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অরুন্ধতী রায়কে উদ্ধৃত করে লোধির অভিযোগ, যাঁরা বেঁচে রয়েছেন, তাঁদের জীবনও ভারতে নরক। দলিত, আদিবাসী, মুসলিম ও খ্রিস্টানদের আতঙ্কের মধ্যে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাঁরা জানেন না, কখন কোথা থেকে আক্রমণ আসবে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×