ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

তবে কি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে আমেরিকা?

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১১ মে ২০২৫

তবে কি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে আমেরিকা?

ছ‌বি: সংগৃহীত

আসন্ন গালফ-আমেরিকা শীর্ষ সম্মেলনকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা-কল্পনা। সৌদি আরবে মে মাসের মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘গালফ-ইউএস সামিট ২০২৫’, যা হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সৌদি সফর।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ২০১৭ সালের বিশাল রিয়াদ সম্মেলনেরই একপ্রকার প্রতিধ্বনি হতে যাচ্ছে। গালফ অঞ্চলের সব রাষ্ট্রপ্রধানদের অংশগ্রহণের আশা থাকলেও, সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ শারীরিক অসুস্থতার কারণে সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন না বলে জানা গেছে।

এই শীর্ষ সম্মেলন ঘিরে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো—যুক্তরাষ্ট্র কি এবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে? সম্প্রতি ৬ই মে ওয়াশিংটনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প “গুরুত্বপূর্ণ এক ঘোষণা”-র ইঙ্গিত দেন, যা এই সম্মেলনের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

‘দ্য মিডিয়া লাইন’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্ভবত এই সম্মেলনেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা এবং তার মার্কিন স্বীকৃতি প্রদান করবেন। তবে সূত্র জানিয়েছে, এই রাষ্ট্রে হামাসের কোনো অবস্থান থাকবে না।

এই সম্ভাব্য ঘোষণাকে মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত ভারসাম্যে বড় এক পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে সাবেক গালফ কূটনীতিক আহমদ আল ইব্রাহিম এই জল্পনাকে সংশয়ভাজন হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি না ঘোষণাটি ফিলিস্তিন সম্পর্কিত হবে। যদি তাই হতো, তবে ফিলিস্তিনের ঘনিষ্ঠ দুই নেতা— মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি এবং জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ দ্বিতীয়— কে অবশ্যই আমন্ত্রণ জানানো হতো।”

এদিকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো— সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি। বাইডেন প্রশাসনের সময় এই আলোচনার সঙ্গে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়া ও একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি যুক্ত থাকলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে এই নীতিতে পরিবর্তন এসেছে। এবার সেই শর্ত ছাড়াই আলোচনা এগোচ্ছে বলে জানা গেছে।

২০১৭ সালের মতো এবারও বিশাল অংকের অর্থনৈতিক চুক্তি হতে পারে বলেও ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। সে সময় সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহমেদ বুশকি মনে করছেন, “এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য বড় বড় অর্থনৈতিক চুক্তি নিশ্চিত করা।” প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি এক ভাষণে বলেন, “আমার বড় ঘোষণা আসছে। তার আগে শেয়ার কিনে নাও।” তার এই মন্তব্য অর্থনৈতিক কোনো চমকেরই ইঙ্গিত বহন করে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সম্মেলনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি পারমাণবিক সহযোগিতা নতুন গতি পেতে পারে। সৌদি আরব ২০১০ সাল থেকেই শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে এবং বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানি এ প্রকল্পে যুক্ত।

সম্মেলনের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন বলেও নিশ্চিত করেছে দ্য মিডিয়া লাইন।

ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=rAquoOFv1W4

এম.কে.

×