ছবি: সংগৃহীত
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার নাম হচ্ছে ভাত। অনেকেই মনে করেন, ভাত খেলেই রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। কিন্তু পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, সঠিক নিয়ম মেনে ভাত খেলে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
বাংলাদেশের খ্যাতনামা নিউট্রিশনিস্ট ডা. রুবানা হাসান বলেন, “ভাত ডায়াবেটিস রোগীর জন্য একেবারে নিষিদ্ধ নয়। তবে পরিমাণ ও উপায় জানাটা জরুরি। সাদা চালের ভাতের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস বা লাল চালের ভাত খাওয়ার পরামর্শ দিই আমি। এতে ফাইবার বেশি থাকে, ফলে গ্লুকোজ শোষণ ধীরগতিতে হয়।”
একই মত প্রকাশ করেন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. একে আজাদ খান, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি। তিনি বলেন, “অনেক সময় আমরা দেখেছি, রোগীরা একেবারে ভাত বাদ দিয়ে দেয়। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টির ঘাটতি হয়। সঠিক অংশে ও কিছু কৌশল মেনে ভাত খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়ে না বরং নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।”
কিভাবে ভাত খেয়ে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?
✅ পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন:
প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণে ভাত খাওয়া যেতে পারে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন মাছ, ডিম বা মুরগির মাংস রাখা উচিত।
✅ লাল চাল বা ব্রাউন রাইস বেছে নিন:
এই চালগুলোতে ফাইবার ও ভিটামিন বি বেশি থাকে। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ধীরে বাড়ায়।
✅ ভাত ঠান্ডা করে খান:
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউট্রিশনিস্ট ডা. তাহমিনা রহমান বলেন, “গরম ভাতের চেয়ে ঠান্ডা ভাতে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ বেশি থাকে। এটি গ্লুকোজ শোষণ কমিয়ে দেয়।”
✅ একইসঙ্গে ফল ও মিষ্টি খাবেন না:
ভাতের পর ফল বা মিষ্টি খাওয়া হলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বেড়ে যায়। অন্তত ২ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে ফল খেতে পারেন।
✅ ব্যায়াম করুন:
ভাত খাওয়ার পর ৩০ মিনিট হাঁটলে গ্লুকোজের মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ভাত আমাদের বাঙালির খাদ্য সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ডায়াবেটিস হলেও একে পুরোপুরি বাদ না দিয়ে বরং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ ও পদ্ধতি মেনে খাওয়া যেতে পারে। এতে যেমন স্বাদ বজায় থাকবে, তেমনি সুস্থতাও নিশ্চিত হবে।
আসিফ
