
ছবিঃ সংগৃহীত
ফক্স নিউজ ডিজিটাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ আখরোট খেলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে—এমনটাই জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, আখরোটে থাকা এল্যাজিট্যানিনস (ellagitannins) নামক একধরনের উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক উপাদান আমাদের অন্ত্রে গিয়ে রূপ নেয় উরোলিথিন এ (Urolithin A) নামক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যৌবে। এই যৌব কোলনের প্রদাহ কমাতে ও ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কিছু প্রোটিন কমাতে সহায়ক।
গবেষণার বিস্তারিত:
গবেষণাটিতে অংশ নিয়েছেন ৩৯ জন অংশগ্রহণকারী, যাঁদের বয়স ৪০ থেকে ৬০ এর মধ্যে এবং যাঁদের কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
🔸 প্রথমে তাঁদের এক সপ্তাহ এল্যাজিট্যানিনসযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে বলা হয়।
🔸 এরপর তিন সপ্তাহ প্রতিদিন আখরোট খাওয়ানো হয়।
🔸 গবেষণা শেষে হাই-ডেফিনিশন কোলনোস্কোপি করা হয় এবং টিস্যু বিশ্লেষণে দেখা যায়:
যাঁদের শরীরে উরোলিথিন A বেশি তৈরি হয়েছে, তাঁদের কোলনের পলিপে ভাইমেন্টিন (vimentin) নামক ক্যান্সার-সম্পর্কিত প্রোটিনের উপস্থিতি কম ছিল। তাদের রক্ত, মল এবং প্রস্রাবে প্রদাহের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
গবেষকের বক্তব্য:
গবেষণার প্রধান লেখক ড. ড্যানিয়েল রোজেনবার্গ বলেন, “আখরোট খাওয়ার ফলে শুধু কোলনের উপকারই হয় না, রক্তেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে—যা বলে দেয় এটি একটি সার্বিক স্বাস্থ্য সহায়ক উপাদান।”
তবে রোজেনবার্গ জানান, “উরোলিথিন A তৈরির সক্ষমতা সবাইর একরকম নয়। কারও অন্ত্রে এমন ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যারা এটি ভালোভাবে তৈরি করতে পারে, আবার অনেকের ক্ষেত্রে তা হয় না।”
এই কারণেই গবেষকেরা ভবিষ্যতে এমন প্রোবায়োটিক তৈরি করতে চান যা সবাইকে উরোলিথিন উৎপাদনে সাহায্য করবে।
দিনে কতটা আখরোট খাবেন?
রোজেনবার্গ পরামর্শ দেন, প্রতিদিন ৫ থেকে ১০টি আখরোট খাওয়া যথেষ্ট।
পুষ্টিবিদের মতামত:
নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিজ্ঞানী লরা ফেল্ডম্যান বলেন, “আখরোট ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের চমৎকার উৎস, যা প্রদাহ কমায়। তাছাড়া এতে আছে প্রচুর ফাইবার, যা কোলন ক্যান্সার রোধে সহায়ক।”
তবে তিনি সতর্ক করেন, “আখরোট ক্যালোরি সমৃদ্ধ, তাই দিনে এক মুঠোর বেশি খাওয়া উচিত নয়।”
নতুন এই গবেষণা প্রমাণ করছে, খাদ্যতালিকায় সহজ পরিবর্তনের মাধ্যমেও ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব। প্রতিদিনের খাবারে সামান্য পরিমাণ আখরোট অন্তর্ভুক্ত করলেই মিলতে পারে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা—বিশেষ করে কোলনের জন্য।
মারিয়া