
ছবি:সংগৃহীত
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের নতুন সিনেমা, অভিনয়ের জার্নি, এবং ব্যক্তিগত আবেগের কথা অকপটে তুলে ধরেন। তার কথায় উঠে আসে একজন শিল্পীর ভেতরের টানাপোড়েন, সাহসী সিদ্ধান্ত, দর্শকদের ভালোবাসা এবং ভবিষ্যতের স্বপ্ন।
বাঁধন বলেন, “আমার মা খুবই ইমোশনাল মানুষ, আমিও। আমরা একরকম ‘ইমোশনাল ফ্যামিলি’। আজকে আমি কিছু অর্জন করলে মা সেই পুরোনো ট্রমাগুলোর কথা ভাবেন। তাই দুজনেই আবেগাপ্লুত হয়ে যাই। আমার ভাইয়ের স্ত্রী, সন্তান, এমনকি বাসার সহায়িকারাও সিনেমা দেখে কেঁদে ফেলেছেন। এটা বোঝায়, আমরা সত্যিই মানুষের মন ছুঁতে পেরেছি।”
ঈদের প্রথম দিন আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে মনের কষ্টের কথা স্বীকার করে বাঁধন বলেন, “ঈদের দিনটা আমাদের জন্য খুব খারাপ গেছে। দর্শক সাড়া দেয়নি। মন খারাপ ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকেরা একে অন্যকে রেফার করছে, মিডিয়াকর্মীরা ছড়িয়ে দিচ্ছেন, সিনেমাটা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই সিনেমাটা আমি করেছি নিজেকে বারবার নতুনভাবে প্রমাণ করার জন্য। আমি চাই না, আমাকে শুধু ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর মতো চরিত্রেই সীমাবদ্ধ ভাবা হোক। সে কারণেই ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি’, ‘গুটি’, ‘খুফিয়া’-এর মতো ভিন্ন ভিন্ন কাজ করেছি।”
বাঁধন জানান, তার সাম্প্রতিক সিনেমা "এশা মার্ডার"–এ পূজা যে ‘এশা’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তাতে তিনি মুগ্ধ। “আমি প্রথমে কনফিউজড ছিলাম, ও পারবে কি না। কারণ এশা চরিত্রটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পরে জানলাম, পূজা থিয়েটার ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে, ট্রেইনিং আছে। যখন কাজ করলাম, দেখলাম ওর মধ্যে শেখার ও জানার প্রচণ্ড আগ্রহ। আজ সবাই ওকে ‘এশা’ নামেই ডাকে, এটা ওর সাফল্যের প্রমাণ।”
অডিয়েন্সের প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, “আমার স্বপ্ন ছিল একটা আলাদা ফ্যানবেইজ তৈরি করার, যারা শুধু আমার অভিনয় নয়, আমার ব্যক্তিত্ব, মতামত, জীবনযাত্রা–সবকিছুর জন্য আমাকে ভালোবাসবে। আজ সেটা পেয়েছি। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় এচিভমেন্ট।”
বাঁধন বলেন, “এই সিনেমাটা সাধারণ মানুষের জন্য বানানো। আজকে আমার বাসার সহায়িকারাও হলে এসে কান্না করেছে। তারা চরিত্রগুলোর সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পেরেছে। আমি সিঙ্গেল স্ক্রিন হল মালিকদের বলব, একবার রিস্ক নিন, সিনেমাটা চালান। সবসময় একই ধরনের সিনেমা দেখানো যায় না। ইন্ডাস্ট্রির জন্য এটা আপনাদেরও দায়িত্ব।”
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের এই আবেগঘন ও আত্মবিশ্বাসে ভরা কথাগুলো শুধু একটি সিনেমাকে কেন্দ্র করে নয়, বরং একজন অভিনেত্রীর শিল্পযাত্রা, লড়াই এবং অর্জনের গল্প। তার আহ্বান, “আপনারা আমাদের পাশে থাকুন। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করুন।”
ছামিয়া