ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধায় অনুমোদনবিহীন দুই শতাধিক ইটভাঁটি

প্রকাশিত: ১৪:২৮, ১৭ এপ্রিল ২০২১

গাইবান্ধায় অনুমোদনবিহীন দুই শতাধিক ইটভাঁটি

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধা জেলায় ১৯টির অনুমোদন থাকলেও অনুমোদনবিহীন দুই শতাধিক ইটভাঁটিতে বহাল তবিয়তে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এসব ইটভাঁটির কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে জেলায় আবাদি জমির পরিমাণ। অনেক জমির মালিক বাধ্য হয়ে ইটভাঁটি গুলোতে বিক্রি করছে ফসলি জমির উর্বর মাটি। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে জেলার খাদ্য নিরাপত্তা। অনুমোদনহীন এসব ইটভাঁটিতে মাটির জোগান দিতে গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে উর্বর ফসলি জমি। গত বছর ভালো আবাদ হয়েছিল যে জমিগুলোতে তেমন অনেক জমিতেই এখন হচ্ছে না ফসলের চাষ। কৃষি বিভাগের নির্দেশ অমান্য করে ইট তৈরীর জন্য উর্বর আবাদি জমির টপসয়েল কেটে নেয়ায় অনাবাদি এবং জমির ফলন কমে যাচ্ছে। এক তথ্যে জানা গেছে, ভাঁটির মালিকরা প্রথমে কয়েকজন কৃষকের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকায় মাটি কেনার চুক্তি করেন। ওই কৃষকদের জমি থেকে মাটি কেটে নেয়ার পর সেই জমির আশেপাশের জমিগুলো উঁচু জমিতে পরিণত হয়ে হারিয়ে ফেলে পানি ধারণ ক্ষমতা। ফলে আবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে বাধ্য হয়েই ইটভাঁটির মালিকদের কাছে মাটি বিক্রি করছে অন্য কৃষকরাও। ইটভাঁটির আগ্রাসনে শুধু ফসলি জমির মাটিই সাবাড় হচ্ছে না, আবাসিক এলাকা, প্রধান সড়কের পাশে ও ফসলি জমির মাঝে ভাটা স্থাপন করায় মারাত্মকভাবে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। ক্ষমতা হারাতে বসেছে ফলজ গাছপালা। এছাড়াও ইটভাঁটিতে ব্যবহৃত অবৈধ যানবাহন অবাধ চলাচলের কারণে নষ্ট হতে বসেছে জেলার অধিকাংশ কাঁচা-পাকা সড়ক। পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হলেও অভিযান শেষে আবারো সেসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট। ভাটা মালিকদের দাবি, বিভিন্ন অফিসকে ম্যানেজ করার জন্য জেলা সমিতিকে বাৎসরিক চাঁদা দিয়ে তারা চালাচ্ছেন এসব অবৈধ ভাটা। জেলা ইটভাঁটি মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ হক্কানী বলেন, ভাঁটি মালিকদের সাথে রফাদফার বিষয়টি সঠিক নয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণে অনুমোদন না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে চালাতে হচ্ছে অবৈধ ইটভাঁটি । এব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, এভাবে ফসলি জমির মাঝে ইটভাঁটি স্থাপন করা হলে ও জমির মাটির উর্বর উপরিভাগ কেটে নিয়ে গেলে সেসব জমিতে ৮ থেকে ১০ বছরেও ফসল ফলানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বলেন, জেলায় এভাবে ইটভাটা গড়ে ওঠা অপ্রত্যাশিত। তিনি আরও বলেন, অনুমোদনহীন ইটভাঁটি বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
×