ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা থেকে ১৮ রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ ॥ দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১

খুলনা থেকে ১৮ রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ ॥ দুর্ভোগ

অনলাইন ডেস্ক ॥ আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা নগরের সোনাডাঙ্গা আন্তজেলা বাস টার্মিনালের সামনে কিছুটা হতবিহব্বল অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মো. কামরুজ্জামান। তাঁর সামনে ভ্যানের ওপর রাখা কয়েকটি ভারী ব্যাগ। ব্যাগ দেখেই বোঝা যায় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। ভ্যানের সঙ্গে বেঁধে রাখা ব্যাগের দড়ি খুলছিলেন ভ্যানচালক। এ সময় কামরুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই যে গাড়ি বন্ধ হতে পারে, তা তাঁর ধারণাতেই ছিল না। আজ শনিবারই বরিশালে তাঁকে যোগদান করতে হবে। এ কারণে সকালে বাইরে বের হয়ে দেখেন গাড়ি বন্ধ। অগত্যা ভ্যানে করে যশোরের নওয়াপাড়া থেকে খুলনায় এসেছেন। এখন কী করবেন, তা বুঝতে পারছেন না। তবে কিছু করার না থাকলে এভাবেই ভ্যান বা অন্যান্য মাধ্যমে কাটা কাটা পথে বরিশালে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন। গাড়ি না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে তাহমিনা বেগমের পরিবারকে। মেয়ে-মাসহ তাঁরা চার নারী ডুমুরিয়া থেকে সকালে এসেছিলেন মাদারীপুর যাওয়ার জন্য। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় তাঁদের আর মাদারীপুরে যাওয়া হয়নি। সকাল থেকে এমনই বিপদে পড়তে দেখা গেছে শত শত মানুষকে। বিশেষ করে যাঁরা দূরে যাওয়ার জন্য খুলনায় এসেছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগকেই আবার ফিরে যেতে হয়েছে। তবে কম দূরত্বের যাত্রীদের ইজিবাইক ও সিএনজিতে করে তুলনামূলক দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই জেলার ১৮টি রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহনমালিকেরা। ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে। আজ দুপুরে খুলনা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় মহাসমাবেশ হবে। ওই সমাবেশ পণ্ড করতেই সরকারের পক্ষ থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করা না হলেও সমিতির নেতারা বলছেন, বিএনপির মহাসমাবেশ উপলক্ষে কোনো ঝামেলা হতে পারে। ওই ঝামেলা এড়াতে বাস চালাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। কয়েকজন পরিবহনশ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এক দিন গাড়ি না চালালে তাঁদের ৭০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়। এ কারণে তাঁরা গাড়ি বন্ধ রাখার পক্ষে ছিলেন না। তবে মালিকেরা বাস চালাতে নিষেধ করায় তাঁরা বাস চালাচ্ছেন না। মূলত বিএনপির সমাবেশে যেন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ খুলনায় না আসতে পারে, এ কারণেই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
×