ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নড়াইলে দুই গ্রুপের সংর্ঘষের ঘটনায় ৩৬ জনের নামে মামলা, গ্রেফতার ৩

প্রকাশিত: ২০:২৭, ৬ আগস্ট ২০২০

নড়াইলে দুই গ্রুপের সংর্ঘষের ঘটনায় ৩৬ জনের নামে মামলা, গ্রেফতার ৩

নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল ॥ এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও নবগঙ্গা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে নড়াইলের কালিয়ায় দুই গ্রুপের সংর্ঘষে একটি বেসরকারি ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী মাসুদ রানা (৩৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা কাজল মোল্যাসহ ৩৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের ভাই মামুন শেখ বাদি হয়ে কালিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার দেয়া হয়েছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। মামলার প্রধান আসামী কাজল মোল্যাসহ এজাহার নামীয় ৩ জনকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরন করেছে। পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দো-নালা বন্দুক ও ৮ রাউন্ড তাজা গুলি জব্দ এবং ঘটনাস্থল থেকে ৭ রাউন্ড গুলির খোষা উদ্ধার করেছে। এদিকে প্রধান আসামী কাজল মোল্যা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এস আই মিল্টন কুমার দেব দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ও মামলার বিবরনে জানা যায়, উপজেলার নবগঙ্গা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ বালু উত্তেলনকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের মকবুল মোল্যার ছেলে পুরুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কাজল মোল্যা কাজল মোল্যা ও একই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে আমিনুর শেখের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার সৃষ্টি হয়। তারই জের ধরে ওইদিন সকাল পৌনে ৯ টার দিকে কাজল মোল্যার নেতৃত্বে স্বশস্ত্র আসামীরা কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও পুরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার তবিবর রহমানের বাড়িতে তাদের উপর হামলা চালিয়ে তার ভাই মাসুদ রানাকে গুলি করে হত্যাসহ অন্যদেরকেও গুলি করে, কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় এবং ব্যাপক ভাংচুর ও লুট পাট করে। হামলা চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৪ বছরের শিশু ইভা খানম ও তার মা সাথী বেগমসহ (২২) মাসুদ রানা (৩৫) আঃ রহমান শেখ (৩৫), অনিক শেখ (২৭), আমিনুর সরদার (৪৫), ইমরান সরদার (৩০), রাজীব শেখ (২৫),হেকমত শেখ (৩৫) গুলিবিদ্ধসহ মুকুল শেখ (৩৫), মনোয়ারা বেগম (৩৫), তিশা খানম (১৮) ও শফি সরদার (৬৫) গুরুতর আহত হন। গুলিবিদ্ধ মাসুদ রানাকে চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। হত্যাকান্ডের পর থেকে বুধবার রাতভর অভিযান চালিয়ে কালিয়া থানা ও ডিবি পুলিশ মামলার প্রধান আসামী কাজল মোল্যা, তার ভাই টনি মোল্যা ও একই গ্রামের ফেরদৌস মোল্যার ছেলে সোহান মোল্যাসহ ৯ জনকে আটক করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এস আই মিল্টন কুমার দেব দাস জানান, মাসুদ হত্যার ঘটনায় তার ভাই মামুন শেখ বাদি হয়ে ৩৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী কাজল মোল্যাসহ এজাহার নামীয় ৩ জনকে গ্রেফতারের পর আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। প্রধান আসামী কাজল মোল্যা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। প্রধান আসামী কাজলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৮ রাউন্ড তাজা গুলিসহ কাজলের লাইসেন্সকৃত দো-নালা বন্দুক জব্দ ও ঘটনাস্থল থেকে ৭ রাউন্ড বন্দুকের গুলির খোষা উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে বুধবার রাতে নিহতের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
×