ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

মাসুদ রানা আশিক

রাত যখন গভীর হয়

প্রকাশিত: ০১:১৭, ২৬ জুন ২০২০

রাত যখন গভীর হয়

খুব আলতো করে দরজায় ধাক্কা দেয় করণ। ঘুণে ধরা দরজায় কোনো সিটকানি নেই সেটা সে ভালো করেই জানে সে। কোনোমতে মাটির দেয়ালে আটকানো আছে দরজাটা। বিদ্যুতের বিপুল এই উন্নয়নের মাঝেও এই বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন নেই। বিল দেওয়ার ক্ষমতা নেই করণের বাবা আব্বাসের। রিকশা চালানো পেশা দিয়ে এসবের চিন্তাই করেননি তিনি কখনও। ক্যা-অ্য-অ্য চ করে দরজাটা খুলে যায়। ঘুণ আবাসের প্রমাণ ঝিরঝির করে পড়ে মাটিতে। খুবই সন্তোর্পণে রুমে প্রবেশ করে করণ। আশপাশে তাকায়। নিকষ কালো অন্ধকার রুমে। কোনো জানালা নেই রুমটাতে। তাই চাঁদের উজ্জল আলো আসছে না ঘরে। এই রুমে তার বাবা আর মা থাকে। রুমটা মুখস্থ তার। তারপরও পকেট থেকে গ্যাস লাইটারটা বের করে সে। এখনকার গ্যাস লাইটারে লাইটও জ্বলে। একটু খানি লাইট জ্বালায়। আলো গিয়ে পড়ে ঘুমন্ত নিথর পরে থাকা বাবা-মায়ের মুখের ওপর। পরিশ্রমে শ্রান্ত, ক্লান্ত দুটো চেহারা। বয়স যে খুব তা নয় করণের বাবার। কিন্তু পরিশ্রমে সেটা আর বোঝা যায় না। মনে হয় ৬০ উর্ধ বয়স তার। ওদিকে আর তাকায় না সে। দরজার ঠিক ডান পাশেই রাখা আছে ছোট একটা আলমারি। ক্ষয়ে যাওয়া পুরোনো, কাঠের। দাদার হাতে বানানো। আলমারির দরজাটা খুলে ফেলে করণ। সে জানে এখানে কী থাকে। মায়ের কয়েকটা শাড়ি, বাবার দুইটা লুঙ্গি। বড় বোনের দুইটা থ্রি পিস। আর সামান্য কিছু টাকা। খুব একটা সামান্য না। তাদের মতো গরীবদের জন্য অনেক। টুকরো টুকরো করে যেটা সঞ্চয় করেছেন মা। বাবার খাটুনি আর মায়ের সঞ্চয়ী মনোভাব এই দিয়েই এখন সেটা বড় অঙ্কে দাঁড়িয়েছে। অনেক, অনেক দিন ধরে এই টাকাগুলো জমিয়েছেন মা। করণের বোনের বিয়ের জন্য। বড় বোন সাবিনা। তার বিয়ের জন্য জমানো টাকা। বড় বোনটাকে বিয়ে দিতে পারছেন না বাবা। যতই বিয়ে আসে টাকা চায়। গহনা চায়। আবার কেউবা চায় মটরসাইকেল। করণের বাবা রিকশাচালক মানুষ। টাকা কোথায় পাবে এত? একটা মেয়ে যার বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। তার পিতার বাড়িতে থাকাটাও কঠিন হয়ে পড়ে এই সমাজে। কাঠের আলমারিটার সামনে স্থির হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে করণ। কী যেন ভাবে একবার। আলমারির ড্রয়ারটা খুবই আস্তে করে একবার খুলে আবারও সেটা লাগিয়ে দেয়। দ্বিধা কাজ করছে তার। টাকাটা নেওয়া ঠিক হবে না এই ভেবে। কিন্তু অনেক সময় প্রয়োজন দ্বিধা মানে না। টাকাগুলোই এখন প্রয়োজন করণের। অনেক প্রয়োজন। নইলে মাথার ভেতরে নেচে ওঠা নেশাটা দমানো কঠিন হয়ে যাবে তার জন্য। কেউ জানে না সে নেশা করে। বাবা, মা এমনকি প্রতিবেশীরাও না। সে নিজেও রিকশা চালায়। দিন শেষে যা হয় সেটা দিয়েই দিব্যি নেশা করে বেড়ায়। একটা চক্রের সঙ্গেও হাত আছে তার। গভীর রাতে যখন কোনো যাত্রী তার রিকশায় চড়ে তখন সে সেই চক্রের সঙ্গে আলোচনা করে নেয়। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পথ আগলে সেই চক্র যাত্রীর কাছ থেকে সব ছিনিয়ে নেয়। একদিনের এক কথা মনে হলে এখনও আফসোস হয় হয় করণের। সেদিন খুব রাতে একজন কম বয়সী মহিলা নেমেছিল বাসস্ট্যান্ডে। করণকে জিজ্ঞাসা করেছিল যাবে কিনা। বিনা বাক্যব্যায়ে রাজি হয়ে যায় সে। এবং চক্রটার সঙ্গে আলোচনাও করে নেয়। বুঝতে পারে মেয়েটার কাছে টাকা-পয়সা, গহনা সবই আছে। তারপর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা চক্রটা ধরে ফেলে মহিলাকে। ছিনিয়ে নেয় সবকিছু। কিন্তু নিস্তার হয়নি মেয়েটার। সতীত্ব নিয়েও খেলা করে মেয়েটার। মেয়েটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল করণ। যাতে মেয়েটার সম্মান নষ্ট না হয়। কিন্তু তারা শোনেনি। সম্মান নষ্ট হয়েছিল মেয়েটার। শুধু প্রাণে বেঁচে ফিরেছিল। ওই মেয়েটার কথা মনে হলেই নিজের বোনটা মুখ ভেসে ওঠে। নিজেরও তো একটা বোন আছে, ওই মেয়েটার মতোই। কিন্তু কিছুই করার ছিল না করণের। চক্রটার কাছ থেকে কিছু বকশিস পায় করণ। অংকে সেটা একেবারে কম নয়। কাজটা খুব একটা ভালো লাগে না তার। কিন্তু নেশা যে সেটা মানে না। যখন নেশা ওঠে তখন কোনো কিছুই আর খেয়াল থাকে না তার। খুন করতেও কোনো দ্বিধা হয় না তখন। কত সব নেশা এখন দেশে। আগে শুধু সিগারেট টানতো সে। কয়েকজন রিকশাচালক মিলে একসঙ্গে কোনো এক গাছের নিচে দাঁড়িয়ে চা আর সিগারেট টানতো। তাদের ভেতর একজন গাঁজা টানতো। সবাই একসাথে থাকলে যা হয় আরকি। আস্তে আস্তে সেই গাঁজার নেশাটাও চলে আসে করণের ভেতর। তারপর আস্তে আস্তে হেরোইন। আর এখন বাবা নামক নেশা। নেশা করলেই সবকিছু শান্ত মনে হয় করণের কাছে। অথচ দিনে দিনে সে নিশ্বেষ হয়ে যাচ্ছে বুঝতেই পারছে না। নেশার কাছে আজ সে পরাজিত। এখন সে জীবন্ত ফসিল। মাথায় কাজ করা দ্বিধা ঝেরে ফেলে সে। টাকাগুলো নিতেই হবে। এই টাকার কথাটা জানতেই পারত না করণ। গতকাল বাবা-মায়ের আলোচনাতেই বুঝতে পারে সে। রিকশা নিয়ে বের হবে তখনই মায়ের কথাটা কানে এলো তার, ‘করণের বাবা একটা কথা ছিল।’ করণের বাবা আব্বাস স্ত্রীর কথা শুনে পাশে গিয়ে বসে তার। বলে,‘ কী বলবে বলো?’ ‘আপনি যে আমাকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে দেন। সেই টাকাগুলো আমি খরচ করি না। খরচ না করে জমাইছি। সাবিনারে তো বিয়া দিতে হইব। এখন টাকা ছাড়া বিয়া হয় কন। বিশ টাকা করে যখন একশ টাকা হয়। তখন পাশের বাড়ির ভাবির কাছ থেকে একটা নোট নিয়ে আসি। দেখেন তো কত টাকা হইছে।’ করণের বাবার চেহারায় উজ্জ্বলতা দেখা দেয়। মেয়ের বিয়ের জন্য সে তো কিছুই করতে পারছে না। কিন্তু একজন গৃহিণী হয়ে সে টাকা জমিয়েছে। স্ত্রীর জন্য প্রগাঢ় একটা ভালোবাসা অনুভব করে। টাকাগুলো বের করে দেয় করণের মা। এত টাকা একসঙ্গে কখনও দেখেনি আব্বাস। গুনতে লাগলেন টাকাগুলো। কিন্তু বারবার গোনার পর গুলিয়ে যায় সবকিছু। ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকায় বউয়ের দিকে, ‘বউ, কী করি কও তো। গুনতেই তো পারতাছি না। কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে সব। গরিব মানুষ। এত টাকা তো কখনও গুনিনি।’ আবারও গুনতে লাগলেন তিনি। এভাবে বেশ কয়েকবার। কিন্তু কিছুতেই মেলাতে পারলেন না। গোনা বন্ধ করে বললেন, ‘এত টাকা দেখতেও তো বেশ লাগে বউ। মনটা বেশ ফুর্তি লাগছে আজকে। যারা বড়লোক তাগোর জানি কত টাকা থাকে।’ আবারও গুনতে লাগলেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ পর হাতের কড়া গুনে বললেন, ‘৪০ হাজার টাকার থেকে ১০০ টাতা কম। আর ১০০ হলেই ৪০ হাজার হবে।’ একটা উচ্ছলতা দেখা যায় আব্বাসের মধ্যে। নিজে নিজেই ভাবে, যাক মেয়েটার তাহলে বিয়ে দেওয়া যাবে। অনেক ছেলেই মেয়েটাকে দেখে গেছে। কিন্তু টাকার জন্য বিয়ে দিতে পারছেন না। ঘটক ব্যাটা তো প্রায় প্রতিদিনই আসে আব্বাসের কাছে। স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলে আব্বাস চলে যায় কাজে। সেদিন করণ আর রিকশা চালাতে যায় না। মাকে অনুসরণ করে সে। দেখতে চায় মা কোথায় টাকা রাখে। ৪০ হাজার টাকা কম তো নয়। করণ দেখেছে অনেক ১০০ টাকার নোট। তখন থেকেই টাকার গন্ধ নাকে আসতে থাকে তার। টাকাগুলো নিজের পকেটস্থ করার মনস্থির করে তখনই। করণ আলমারির ড্রয়ারটা আবারও এক টান দিয়ে খুলে ফেলে। দিন দিন করে জমানো সেই টাকার গন্ধ নাকে লাগল তার। অনেক হাতে ঘুরে আসা টাকা। কত জীবাণু থাকে তার ভেতর। অথচ কতই না প্রয়োজন সেই টাকার, সবার। ছেলে, বুড়ো, মেয়ে, ভিক্ষুক কিংবা কোটিপতির। সেই জন্যই তো সবাই বলে মানি ইজ দ্য সেকেন্ড গড। এখন টাকা দরকার করণের। হাতে থাকা গ্যাস লাইটার দিয়ে বাবা-মায়ের মুখের দিকে তাকায় করণ। খুবই নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছেন দু’জন। আরামের ঘুম। কোনো কিছু ভাবতে চাচ্ছে না সে। ড্রয়ারে হাতড়াতে লাগল। সময় নিলে ক্ষতি হতে পারে। বাবা-মা যদি বুঝতে পারে সে টাকাগুলো সরিয়েছে। তাহলে সেটা খুব একটা ভালো হবে না। সময় নষ্ট করা মানেই বিপদ। হাতড়াতেই টাকাগুলো হাতে লাগল। আলোর স্পর্শ পেলো যেন সে। টাকাগুলো দুই হাত দিয়ে নিয়ে, পকেটে পুরে বের হয়ে আসে ঘর থেকে। কিছুটা কেঁপে উঠল করণ। বাবার কঠিন পরিশ্রম, ঘাম মেশানো জীবাণুমাখা কাগজ। যে কাগজ মা জমিয়েছে নিপুণ মমতায়, আগলে রেখে। সন্তানের মতো। নিজের আরেক সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। ঘর থেকে বের হতেই করণের মনে হলো বাবা ডাকছে, ‘করণ, বাপ টাকাগুলান নিয়া গ্যালা। তোমার বোনের কথা চিন্তা করলা না।’ মনে হচ্ছে তার পাশে বসে থেকে মা কাঁদছে। টাকা হারানোর যন্ত্রণায় নয়। অনেক কষ্টে, ছেলের এমন অধঃপতনের কষ্টে। কিছু সময়ের জন্য থমকে দাঁড়াল করণ। পকেটে হাত দিল। উঁচু স্পর্শ পেয়ে চিন্তার ধারাপাতে ইতি ঘটাল সে। পাশের রুমেই থাকে বড় বোন সাবিনা। বোনটা খুব আদর করে করণকে। একদিন করণের খুব জ্বর হয়েছিল। বোনটা নিজে সারারাত করণের মাথায় পট্টি দিয়ে দিয়েছে। বাবা-মাকে বলেছে, ‘আপনারা ঘুমিয়ে যান। আমি ভাইয়ের পাশে আছি।’ নিজে দুচোখ এক করতে পারেনি বোনটা। ভাইয়ের মাথাটা উড়ুতে রেখে পট্টি দিয়েছেন সারারাত। পা ব্যথা হয়ে গিয়েছিল তার। পরে সেটা বুঝেছে করণ। পরে একদিন দেখে বোন খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছে। তার বিয়ে হয় না এটা নিয়ে বোনটা খুবই আফসোস। করণকে একদিন বলেছিল, ‘জানিস করণ, মেয়েদের জীবনটা অদ্ভুত। সে সবসময় অন্যের ওপড় নির্ভর। একটা সময় বাবা-মায়ের কাছে। তারপর স্বামীর কাছে। এবং শেষ বয়সে ছেলে কিংবা মেয়ের কাছে।’ ¯েœহমাখা হাত দেয় করণের মাথায়। তারপর আবারও বলে, ‘আমার বিয়ে নিয়ে মা-বাবা খুব চিন্তায় আছে, জানিস?’ করণ হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াল। সে ভালো করেই জানে ঘটনাটা। ‘আমি এক বাবা-মায়ের সন্তান হিসেবে তাদের কোনো উপকার করতে পারছি না। কিন্তু চিন্তায় ফেলে দিচ্ছি।’ ‘আজকালকার যুগে মেয়েরেকে বিক্রি করতে হয় টাকা দিয়ে। কী অদ্ভুত নিয়ম। আমার বাবা-মায়ের টাকাও নেই। আমাকে বিক্রিও করতে পারছে না।’ গলা ধরে আসে তার। করণ বুঝতে পারে সেটা। বোনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে। ‘কোনো চিন্তা করবি না বোন। সব ঠিক হয়ে যাবে। তোর বিয়ে হবে। সেই বিয়েতে আনন্দ হবে। আমার দুলাভাইটা রাজপুত্রের মতো দেখতে হবে। খুব সুখের সংসার হবে তোর।’ ‘রাজপুত্র!’ হা হা করে হেসে ওঠে সাবিনা। ভাইয়ের গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে, ‘রাজপুত্র কি আমার কপালে আছে রে ভাই। কেউ তো পালকি নিয়ে আমাকে নিতেই আসবে না। প্রত্যেক মেয়ের মাতৃত্বের স্বাদ নেওয়ার ইচ্ছা হয়। সংসার করার ইচ্ছা হয়। অথচ কি নির্মম পরিহাস। আমার বেলায় তার উল্টো। আমার কোনো ইচ্ছাই হয়তোবা পূরণ হবার নয়।’ ভাবনার জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে আনে করণ। বোন যে রুমে থাকে সেই রুমের দরজায় হালকা টোকা দিতেই খুলে যায়। এক পা দুই পা করে এগিয়ে যায় রুমের ভেতর। রুমটার জানালা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে গেঁথে দেওয়া হয়েছে। সেই জানালা দিয়ে চাঁদের আলো আসছে, একেবারে বোন সাবিনার ওপর। মায়াবী চেহারাটা দেখে খারাপ লাগা শুরু হলো করণের। কি করছে সে এসব? বোনের বিয়ের জন্য জমানো টাকা চুরি করে সে নেশা করবে। বুকের ভেতর থেকে কষ্টটা চোখে আসলো তার। চোখ বেয়ে পানি পড়ছে এখন। বুক ফেটে যেতে চাইছে। সামান্য কিছু সময়। হয়তোবা কয়েক মিনিট। স্থির দাঁড়িয়ে ছিল করণ। চোখের নোনা জল পড়ছিল তার বুকে। ভিজে যাওয়া বুকটা একবার হাত দিয়ে মুছে শব্দহীন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে। প্যান্টের পকেটে হাত দেয়। সদ্য চুরি করা টাকাগুলো দিয়ে বেশ উঁচু হয়ে আছে প্যান্ট। পাল্টে গেল তার জগৎ। অফুরন্ত প্রশান্তি চলে আসে তার শরীরে। এই টাকাগুলো দিয়ে বেশ কয়েকদিন আমোদে নেশা করা যাবে। চক্রটার সঙ্গে হাতে হাত মেলাতে হবে না। রিকশা চালাতে হবে না। বোনের রুম থেকে বের হয়ে কপাট লাগিয়ে দেয় সে। তারপর হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে দেখে পুরো বাড়িটা। মাটির তৈরি বাড়িটায় অনেক মায়া আছে, শ্রম আছে। এখানে আছে ভালোবাসা। বাবা-মায়ের, বোনের। কষ্ট আছে তাদের। তাই বলে সুখ কি নেই? সেই সুখ কেন নষ্ট করবে সে। কেন নষ্ট করবে সবার স্বপ্ন। টাকা দিয়ে উঁচু হয়ে যাওয়া পকেটটায় হাত দেয় আবার। বের করে আনে টাকাগুলো। বাবা-মায়ের রুমে ঢুকে যায় আলতো করে। তারপর আলমারির ড্রয়ার খুলে টাকাগুলো আবার যথাস্থানে রেখে দেয়। অন্যরকম এক প্রশান্তি অনুভব করে মনে। অন্ধকারেই বিছানায় শুয়ে থাকা বাবা- মায়ের পা ছুঁয়ে সালাম করে করণ। তারপর বের হয়ে আসে রুম থেকে। সিদ্ধান্ত নেয় সকল নেশা থেকে সে দূরে থাকবে। রাতের আকাশে তাকায় সে। কি সুন্দর গোলাকার চাঁদ উঠেছে আজ। পূর্ণিমার চাঁদ।
×