ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হেডে শততম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন সিআর সেভেন

রোনাল্ডোর গোলে জুভেন্টাসের রক্ষা

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ৫ মে ২০১৯

 রোনাল্ডোর গোলে জুভেন্টাসের রক্ষা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আবারও জুভেন্টাসের মান বাঁচালেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। শুক্রবার তার করা গোলের সৌজন্যেই তুরিনোর সঙ্গে ১-১ ব্যবধানে ড্র নিয়ে সিরি’এ লীগে হারের লজ্জা থেকে রক্ষা পেয়েছে জুভেন্টাস। অন্যদিকে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী জুভেন্টাসের বিপক্ষে স্বপ্নের জয়ের জন্য ২৪ বছরের অপেক্ষা আরও দীর্ঘয়িত হলো তুরিনোর। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলার স্বপ্নও হয়তো এরই সঙ্গে শেষ হয়ে গেল ওয়াল্টার মাজ্জারির শিষ্যদের। ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার ৭০তম বার্ষিকীকে সামনে রেখে শুক্রবার নগর প্রতিদ্বন্দ্বী জুভেন্টাসের মুখোমুখি হয়েছিল তুরিনো। ১৯৪০ সালের ৪ মে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল তুরিনোর খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা বহনকারী একটি বিমান। ওই দুর্ঘটনায় ৩১ আরোহী নিহত হয়। যার মধ্যে তুরিনোর ১৮ জন খেলোয়াড় এবং কর্মকর্তা ছিলেন। সেই সময়ে লিসবনে বেনফিকার বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলে ফিরছিল তুরিনোর দলটি। টানা পঞ্চমবারের মতো শিরোপা জয় করে ফেরার পথেই এমন দুর্ঘটনায় সম্মুখীন হয়েছিল তুরিনো। তবে ওই দুর্ঘটনার পর ১৯৭৬ সালে একবার মাত্র শিরোপা জয় করেছে তারা। অপরদিকে জুভেন্টাস ৩৫বার জয় করেছে সিরি’এ লীগের শিরোপা। এবারের আসরের শিরোপা নিশ্চিতের মাধ্যমে টানা অস্টমবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রির দল। জুভেন্টাসের মাঠে ম্যাচের ১৮ মিনিটে সাসা লুকিচের গোলে প্রথম এগিয়ে যায় সফরকারী তুরিনো। কিন্তু ৮৪ মিনিটে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো সমতায় ফেরালে তুরিনোর স্বপ্নভঙ্গ হয়। এই ড্রয়ের ফলে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে রোমার থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে লীগ টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে তুরিনো। হাতে রয়েছে আর মাত্র তিন ম্যাচ। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পথে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে তুরিনের দলটি। ১৯৯৫ সালের পর জুভেন্টাসের মাটিতে আর কখনই জয়ের দেখা পায়নি তুরিনো। তবে ঘরের মাঠে ২০১৫ সালের এপ্রিলে জুভেন্টাসের বিপক্ষে একমাত্র জয়টি তুলে নিয়েছিল তারা। এবারের লীগে গত ডিসেম্বরে তুরিনোর বিপক্ষে প্রথম লেগের ম্যাচটিতে পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোলটি করেছিলেন রোনাল্ডো। এবারও সেই সিআর সেভেনই রক্ষা করলেন টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। তবে এদিন দুই দলের খেলোয়াড়রাই গোল মিস করে। তুরিনোর হয়ে অধিনায়ক আন্দ্রে বেলোত্তি আর জুভেন্টাসের জার্সিতে কিন প্রথমেই দুটি সুযোগ নষ্ট করেন। তবে সার্বিয়ান মিডফিল্ডার মিরালেম পিয়ানিচের ভুলে তুরিনোকে এগিয়ে দেন সাসা লুকিচ। এই গোলের পরপরই জুভেন্টাসকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন রোনাল্ডো। কিন্তু তার শক্তিশালী শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। যে কারণে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রির শিষ্যরা। বিরতির পর অবশ্য জুভেন্টাস আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় ইতালিয়ান ডিফেন্ডার লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলার সহায়তায় দ্বিতীয়ার্ধের ৮৪ মিনিটে গোল করেন রোনাল্ডো। এবারের মৌসুমে এটা তার ২১তম গোল। ক্লাব ক্যারিয়ারে এই নিয়ে ৬০১তম গোল করলেন পর্তুগীজ তারকা। হেডের সৌজন্যে এটা রোনাল্ডোর ১০০তম গোল। কোথায় থামবেন রোনাল্ডো? সেটাই এখন ফুটবলপ্রেমীদের দেখার অপেক্ষা। লীগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। তবে এই সময়টা বাজে কাটছে ইতোমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগ থেকে ছিটকে পড়া ইতালিয়ান জায়ান্টদের। গত সপ্তাহে ইন্টার মিলানের সঙ্গেও ১-১ গোলে ড্র করেছিল জুভেন্টাস। এবার তুরিনোর সঙ্গেও একই ফল। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয়বিহীন থাকল জুভেন্টাস। যদিও দ্বিতীয় স্থানে থাকা নেপোলির থেকে ১৯ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। ৩৫ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ৮৯ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলা নেপোলির সংগ্রহ ৭০ পয়েন্ট। অন্যদিকে জুভেন্টাসের সমানসংখ্যক ম্যাচ খেলে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে রয়েছে তুরিনো। জুভেন্টাসের সঙ্গে ড্রয়ের পর চরম হতাশ তুরিনোর কোচ। এ প্রসঙ্গে মাজ্জারি বলেন, এই ড্র আমাদের শেষ করে দিয়েছে। দ্বিতীয় গোলের সুযোগও আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। একটিবার আমরা তাদের সুযোগ দিয়েছি, আর সেটাই কাজে লাগিয়েছে দুর্দান্ত রোনাল্ডো।
×