ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর সাহসী সৈনিক

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৪ জুলাই ২০১৮

বঙ্গবন্ধুর সাহসী সৈনিক

জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতাগুণে দেশে অগ্রযাত্রায় সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে সচেষ্ট রয়েছেন যারা তার অন্যতম কা-ারি হচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করে চলেছেন, এ ক্ষেত্রে কোন শৈথিল্য প্রায় নেই। বরং নিজস্ব দক্ষতা ও পারঙ্গমতায় তিনি ইতোমধ্যে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বেশ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে জনমানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অনেকখানি। বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বেশ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুনে আসাদুজ্জামান খান কামাল দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। একাত্তরে উত্তাল দিনে আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে হর্টিকালচার গার্ডেন সংলগ্ন স্থানে ফার্মগেট সিকিউরিটি পয়েন্টে রাস্তা বরাবর একটি মজবুত ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল। এটি সে সময়ে তার নেতৃত্বগুণে সম্ভব হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। ঘৃণ্য নরপশু পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি। তিনি ঢাকা শহরে, মানিকগঞ্জে, মুন্সীগঞ্জে, দোহার এবং নবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে হায়েনাদারদের বিপক্ষে লড়ে বিচক্ষণতার গুণে নিজের বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন। সে সময় আমার মামা সেন্ট্রাল ল’ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদের ১২০, মনিপুরীর বাসায় বসবাস করতেন। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ শেষে বেড়াতে এলে সর্বপ্রথম আসাদুজ্জামান খান কামালের বীরত্বের কথা শুনি। সাত বছর বয়সের ছেলের কাছে তার বীরত্বের কথা শুনে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছিল। সে সময় কাছ থেকে তাকে দেখার সৌভাগ্যও হয়েছিল। অবশ্য মন্ত্রী হওয়ার পর নিজের কোন প্রয়োজনেই কখনও তার সঙ্গে দেখা হয়নি। ভেবেছি যিনি দেশের জন্য যথাযথ কাজ করে চলেছেন তার কাছে গিয়ে আমি অযথা কেন বিরক্ত করব তাকে। হাসিমুখে তিনি সততার সঙ্গে মানুষের সমস্যা সমাধানের কথা বলেন। এখানেই তার সততা, নিয়ম-নিষ্ঠা। তিনি জনকল্যাণের তাগিদে অন্তরের অন্তস্তল থেকে নির্মোহভাবে কাজ করে থাকেন। একজন সদালাপী অথচ তীক্ষè বুদ্ধির অধিকারী আসাদুজ্জামান খান কামাল কাজ করেন নিয়ম-নিষ্ঠার সঙ্গে। তার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হিসেবে আছেÑ জননিরাপত্তা বিভাগে বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি। নিরাপত্তা সেবা বিভাগের আওতায় আছেÑ নারকোটিক্স কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্ট, ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স বিভাগ। তিনি সমান গুরুত্ব দিয়ে জননেত্রীর দিকনির্দেশনায় দক্ষতার সঙ্গে তার মন্ত্রণালয় পরিচালনা করে চলেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর চেতনার সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে এক দক্ষ কা-ারি ও নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করে চলেছেন। সততা-নিষ্ঠার সঙ্গে আসাদুজ্জামান খান কামাল কাজ করছেন। যখন গণমাধ্যমে তার বক্তব্য শুনি, তখন দৃষ্টিতে ভেসে ওঠে বাহাত্তর সালের এক ছেলের চোখে দিগন্ত বিস্তৃত স্বপ্নের জাল বোনা। আসলে ভাবি যখন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে ২০১৩-১৪ সালে কাজ করছিলাম, তখন তার সঙ্গে দেখা করে ‘হুজি’ তৈরির জন্য কর্মরত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সম্পর্কে সরাসরি বললে হয়ত অধিক কাজ হতো। মধ্যপন্থা অবলম্বন করা উচিত হয়নি তখন। কখনও তো নিজের জন্য কিছু চাননি। ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করা, আবার বর্তমানে আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজের জন্য কোন কিছু না চাইতে আমার পিতা প্রয়াত প্রফেসর মোবাশ্বের আলী শিখিয়ে গেছেন। পারিবারিক শিক্ষা যে মানুষের জীবন গড়ার আদর্শ হাতিয়ার। আমি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি ‘জননেত্রী’ শেখ হাসিনার একান্ত অনুসারী। আমি তার ‘পেটে ভাতের রাজনীতির’ একজন শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ হিসেবে অন্তর থেকে কাজ করে যেতে ইচ্ছুক। আমার ভাল লাগে আসাদুজ্জামান খান কামালের কর্মপন্থা। কথা নয়, কাজে তিনি বিশ্বাসী। অনেক ঝড়-ঝাপ্টা তাকে সামলাতে হয়। বিচক্ষণ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে, প্রজ্ঞাগুণে তিনি অক্লান্তভাবে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব হাসিমুখে পালন করে চলেছেন। মার, ই.বি. (১৮৮৫) যে প্রবচনটি উল্লেখ করেছিলেন, ‘ঘড় ড়হব শহড়ংি যিবৎব ঃযব ংযড়বং ঢ়রহপযবং, নঁঃ যব যিড় বিধৎং রঃ’ -প্রবচনটির সার্থক বাস্তবায়ন আসাদুজ্জামান খান কামাল করে চলেছেন। তার ওপর কাজের চাপের বোঝা, রাজনৈতিক ঝামেলা, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে তিনি পালন করে যাচ্ছেন। মানবকল্যাণে তিনি হৃদ্যতার পরিচয় দিচ্ছেন। আবার যারা সন্ত্রাসবাদ ও উগ্র জঙ্গীবাদের পরিচয় দিচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে তিনি নেত্রীর নির্দেশনায় ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাচ্ছেন। তার কর্মতৎপরতা জনগণের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য। তিনি সততার প্রতীক। কোটা নিয়ে অযথা যে আন্দোলন হচ্ছেÑ এক শ্রেণীর বিএনপি-জামায়াতী ও বামরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত, সেক্ষেত্রে সহনীয় ভূমিকা পালন করছেন তিনি। এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও তিনি বিচক্ষণতার পরিচয় দিচ্ছেন। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী স্যারের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। তুলনামূলকভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার নেতৃত্বগুণে অনেক বেশি গতিময়। এ গতিময়তার পাশাপাশি যাতে অন্যায়কারীরা পার পেয়ে না যায় সে জন্য বর্তমানে মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। এ অভিযানে যাতে দোষীরাই কেবল শাস্তি পায়, গডফাদাররা পার না পেয়ে যা সে জন্য তিনি শশব্যস্ত থাকেন। তার টিমে যারা আছেন তারা যাতে গডফাদারদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সে জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন। সেদিন একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল। তিনি বলছিলেন হাল আমলে কেবল তরুণ নয়, তরুণীরাও ক্ষমতা পাওয়ার জন্য মাসল পাওয়ারের পাশাপাশি ড্রাগ এডিকশনে ডুবে যাচ্ছে। তার এ বক্তব্য অনেকখানি সত্য হিসেবে প্রতিভাত হয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানবদরদী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন বিশ্বে। তবে রোহিঙ্গারা কেবল এদেশে এসেই ক্ষান্ত হচ্ছে না। পত্রিকার রিপোর্টে দেখা যায় ৪০% রোহিঙ্গা নারী এইডসের শিকার। বিতাড়িত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে পরিবেশ দূষণ করছে। মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাচ্ছে। আর ইয়াবা ট্যাবলেটের চোরাচালানে নিমজ্জিত রয়েছে বলে পত্রিকান্তরে রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। এই দুরূহ কাজেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নির্ভীক ও অক্লান্তভাবে কাজ করে চলেছেন। আশা করি, কর্তব্যনিষ্ঠ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার কর্মোদ্দীপনা অটুট রাখবেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে চির নিয়োজিত থাকবেন। লেখক : অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ
×