ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পড়ার বিষয় যখন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ১ জুলাই ২০১৮

পড়ার বিষয় যখন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং

মানুষের জীবিকার জন্য প্রয়োজন একটি নিশ্চিত এবং নিরাপদ কর্মসংস্থান। নিশ্চিত ও নিরাপদ কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা, দক্ষতা ও যোগ্যতা। বর্তমান পরিবর্তনশীল চাকরি বাজার উপযোগী শিক্ষা ও দক্ষতাই নিশ্চিত করতে পারে নিরাপদ কর্মসংস্থান। প্রতিযোগিতামূলক চাকরি বাজারে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতা যেভাবে বাড়ছে একইভাবে বাড়ছে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ। বর্তমান চাকরি বাজারের এ প্রেক্ষাপটে সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক ক্যারিয়ার পরিকল্পনা। শিক্ষার্থীদের এ পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষা। আর কর্মমুখী শিক্ষার মধ্যে সবচেয়ে যুগান্তকারী উন্নয়ন ঘটেছে কারিগরি শিক্ষায়। সেরকম একটি যুগোপযোগী পেশা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বা বস্ত্র প্রকৌশল। বাংলাদেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং : বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাকশিল্প দেশের উন্নয়নের প্রধান শিল্পখাত হিসেবে অবস্থান পাকা করে নেওয়ার পাশাপাশি কৃষির পরে একমাত্র সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। এছাড়া বর্তমানে এই খাতটি বিশ্বের কাছ থেকে অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী পোশাক উৎপাদক ও রফতানিকারক হয়ে ওঠার পাশাপাশি দেশের সর্বাধিক মুদ্রা আনয়নকারী খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। বাংলাদেশে ৫ হাজারের অধিক ফ্যাক্টরিতে ৩৬ লাখ লোক সরাসরি এ শিল্পে কর্মরত। বর্তমানে বিশাল এই কর্মক্ষেত্র থেকে মোট বৈদেশিক রফতানির শতকরা ৮০ ভাগই আসছে যা মোট জিডিপি-১৩. ৫ শতাংশ। বিজিএমইএ এর তথ্য মতে যেখানে ১৯৭৮ সালে তৈরি পোশাক রফতানি খাত হতে আসে ১২০০০ মার্কিন ডলার যা, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত বছরের তুলনায ৪০ শতাংশ বেশি। বৃদ্ধির এই হার ধরে রাখতে পারলে ম্যাকিনজির ভবিষ্যত বাণী অনুযায়ী আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ প্রতিবছর ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে। কেন ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং : বাংলাদেশ প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে একজন ছাত্র ঝঝঈ পাস করার পরে ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল এবং গার্মেন্টস ডিজাইন এ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং বিষয়ে পাস করার সঙ্গে সঙ্গেই কর্মজীবনে প্রবেশ নিশ্চিত। তাছাড়া ডিপ্লোমা পাসের পর চাকরির পাশাপাশি ই.ঝপ এবং গ.ঝপ পড়ার সুযোগ রয়েছে। পেশা যখন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং : ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চীফ ইনসট্রাকটর মোঃ আমিরুল ইসলাম বলেন, ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশের পরপরই টেক্সটাইলের বিভিন্ন বিভাগ যেমন স্পিনিং ফেব্রিক, ওয়েট প্রসেস ও গার্মেন্টস ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরির করার সুয়োগ। তাছাড়া মার্চেন্ডডাইজারসহ জুট মিলে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। গার্মেন্টস ডিজাইন এ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং : ৫০০০ এর অধিক গার্মেন্টসে বিভিন্ন বিভাগ যেমন কোয়ালিটি কন্ট্রোল, কাটিং, সুইং, স্যামপলিং, ফেব্রিক সেকশনসমূহ ও প্যাটার্ন ডিজাইন বিভাগে প্রচুর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া দেশী-বিদেশী বায়িং হাউসগুলোতে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের মেয়াদ ও ভর্তির যোগ্যতা : ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাক্রম ৪ বছর মেয়াদি ৮ সেমিস্টারে সম্পন্ন হয়, প্রতি সেমিস্টার ৬ মাস অন্তর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীগণ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ডিপ্লোমা-ইন-টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং/ গার্মেন্টস ডিজাইন এ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিংয়ের সনদপত্র লাভ করে। ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা এসএসসি (বিজ্ঞান/মানবিক/ব্যবসায় শিক্ষা/ভোকেশনাল/ ভোকেশনাল-টেক্সটাইল) পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ২.০০ পেয়ে পাস করতে হবে। এইচএসসি উত্তীর্ণ/অনুত্তীর্ণ বা পরীক্ষার্থীরাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের পাসের সন সর্বোচ্চ শিথিলযোগ্য। অফিস চলাকালীন সময়ে ভর্তির আবেদনপত্র, তথ্যবিবরণী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রতিষ্ঠান হতে সংগ্রহ করতে হবে। ভর্তির আবেদনপত্র বোর্ড নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের এসএসসি/সমমান পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র/ ট্রান্সক্রিপ্ট, সনদপত্র, ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তি হতে হবে। কোথায় পড়বেন : বর্তমানে বেশ কয়েকটি সরকারী ও বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক অন্যতম। সুযোগ-সুবিধা : পাসকৃত সকল শিক্ষার্থীকে ইন্টার্নশীপ ও চাকরির সহায়তা/ তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য ফ্রি ল্যাপটপ/ অভিজ্ঞ শিক্ষক ম-লী/ ইন্টার্নশীপ ও চাকরির নিশ্চয়তা/ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাব ও লাইব্রেরী সুবিধা/ টেক্সটাইলের স্পিনিং ফেব্রিক, ওয়েট প্রসেস গার্মেন্টসের আলাদা আলাদা ল্যাব, আধুনিক ঈঅউ এবং ঈঅগ ল্যাব, সু বিশাল সুইং ল্যাব/ বিশ্বব্যাংকের মাসিক ৮০০ টাকা বৃত্তি। যোগাযোগ : বাড়ি নং # ২বি, রোড নং # ১২ মিরপুর রোড, ধানম-ি, ঢাকা- ১২০৯ ফোন:, ০১৭১৩৪৯৩২৪৬, ০১৮৩৩১০২৮১০। ক্যাম্পাস প্রতিবেদক
×