ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশেও হতে পারে ২০২১ বিশ্বকাপ!

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

বাংলাদেশেও হতে পারে ২০২১ বিশ্বকাপ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বদলে ২০২১ সালে ভারতে টি২০ বিশ্বকাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)। এ মুহূর্তে এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। ভারত ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) একাংশের কর্মকর্তারা কোনভাবেই এ সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নয়। এ ভিড়েই বাংলাদেশের নামটিও আলোচনায় এসে পড়েছে। যদি শেষ পর্যন্ত আইসিসির সিদ্ধান্তে ভারত নারাজ থাকে, বিশ্বকাপ আয়োজন করতে না চায়; বর্জন করে তাহলে সেই বিশ্বকাপ বাংলাদেশে হতে পারে। এমন ইঙ্গিত আইসিসি থেকেই দেয়া হয়েছে। ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ হওয়ার সম্ভাবনার কথাও উঠছে। বাংলাদেশের বন্ধু প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়া ১৯৯৮ সালে চালু করেছিলেন মিনি বিশ্বকাপ। প্রথম আসর হয় বাংলাদেশে। সেই মিনি বিশ্বকাপ এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এ ওয়ানডে ফরমেটের টুর্নামেন্টটি ২০২১ সালে ভারতে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কলকাতায় আইসিসি সভার পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অস্তিত্বই যেন শেষ হয়ে যায়। ২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বদলে হবে টি২০ বিশ্বকাপ। আইসিসি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সেই সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। তাতে করে ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হওয়ার পর ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় টি২০ বিশ্বকাপ হওয়ার পরের বছরই ২০২১ সালে ভারতে টি২০ বিশ্বকাপ হবে। টানা তিন বিশ্বকাপ, টানা তিন বছরে মিলবে। কিন্তু ভারত ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তাদের একাংশ ভারতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বদলে টি২০ বিশ্বকাপ হওয়ার সিদ্ধান্তে রাজি নয়। তাতেই বোঝা যাচ্ছে সমস্যা ভালই তৈরি হয়ে গেছে। আর এই সমস্যা যদি বজায় থাকে আর ভারত শেষ পর্যন্ত টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে না চাই তাহলে বাংলাদেশে হতে পারে বিশ্বকাপ। অবশ্য শ্রীলঙ্কার নামটিও আসছে। তবে বাংলাদেশের দিকেই বিশ্বকাপ ঝুঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। ১৯৯৮ সালে যখন প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (তখনকার মিনি বিশ্বকাপ) হয়, তার আগে আইসিসি কোষাগারে ছিল মাত্র ২১ হাজার পাউন্ড। ডালমিয়া আইসিসির প্রধান থেকে মিনি বিশ্বকাপ আয়োজন করেন। তাতে ৭ মিলিয়ন পাউন্ড জমা হয়। এই আয়োজন চলতেই থাকে। গত বছর ইংল্যান্ডে হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সেটিও চরম সফল হয়। তাতে ২০২১ সালে ভারতে হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ডালমিয়াকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে হবে ফাইনাল। সেই সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত ছিল। হঠাৎ করেই আসলো ঝড়। কলকাতায় আইসিসি সভা শেষে বৃহস্পতিবার আইসিসি ঘোষণাই করে দিল, দুই বছর অন্তর আয়োজন করা হবে টি২০ বিশ্বকাপ। চার বছর অন্তর হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সঙ্গে টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপও হবে। এ সিদ্ধান্ত হওয়ার সময় ভারত বোর্ডের যে কর্মকর্তারা আইসিসি সভায় ছিলেন তারাও রাজি হয়েছেন। কিন্তু বোর্ডের অনেক কর্মকর্তাই ফুসছেন। ভারত বোর্ডের শীর্ষ এক বোর্ডকর্তা সিদ্ধান্ত জানার পরপরই বলে দিয়েছেন, ‘অকল্যান্ডের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল ২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে ভারতে। তখন কেউ বলেনি, এটা ওয়ানডে থেকে টি২০ হয়ে যাবে। এখন কী করে টি২০ করে দেয়া যায়?’ ফুসছে বোর্ড কর্তারা। কিন্তু তাতে বিশেষ কোন কাজ না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ এখন ভারতীয় বোর্ড চালাচ্ছে সুপ্রীমকোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব এ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ)। ভারত সরকার আবার আয়করের ছাড়ও দিচ্ছে না বলে ধোঁয়া উঠছে। এই ধোয়ায় প্রতিযোগিতা সরিয়ে নেয়াও হতে পারে। আইসিসির একাংশও হুঙ্কার দিচ্ছে। হুঙ্কার এমন, ‘ভারত যদি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে বিদ্রোহের জেরে টি২০ বিশ্বকাপ করতে না চায়, খুব ভাল কথা। সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশে তা করা হবে।’ কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার মাধ্যমে এমনই আভাস মিলছে। এমন সিদ্ধান্ত কেন নিল আইসিসি? এ প্রশ্নও উঠছে। অনুমান করা হচ্ছে, ক্রিকেট সম্প্রচারকারী সংস্থার ইচ্ছাতেই তুলে দেয়া হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তারা টি২০ বেশি করে চায়। টেস্ট বা ওয়ানডে থেকে যে বেশি টি২০ দেখিয়ে লাভ। আর তা করতে গিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বদলে হবে টি২০ বিশ্বকাপ। যদি ভারত বোর্ড শেষ পর্যন্ত সমস্যা তৈরি করে, বিশ্বকাপ করতে না চায়; তাহলে সেই বিশ্বকাপ বাংলাদেশে হয়ে যেতে পারে।
×