ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি চলছে দুই অগ্রানোগ্রামে

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি চলছে দুই অগ্রানোগ্রামে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) চলছে দুটি করে অর্গানোগ্রাম দিয়ে। একটি আগের নির্ধারিত অন্যটি প্রস্তাবিত। সুবিধামতো সময়ে এই অর্গানোগ্রাম ব্যবহার করে এ দুটি সংস্থা। জনবল নিয়োগ থেকে শুরু করে যেখানে যেটির প্রয়োজন সেটিই করা হয়। যদিও প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনের আগে ব্যবহার করার কথা নয়। এ বিষয়টিকে বেআইনিও বলছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। আর এতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুই সিটি কর্পোরেশনের এই অর্গানোগ্রাম ব্যবহারে বিভিন্ন রকম জটিলতা দেখা দিয়েছে। ব্লক পদে একজন কর্মকর্তা চাকরিতে যোগদান করলে অবসর অবধি তাকে সে পদেই কাজ করতে হবে। চাকরি জীবনে কোন পদোন্নতির সুযোগ নেই কর্মকর্তা পর্যায়ে এমন পদের সংখ্যা সাতটি। এদিকে, প্রাস্তাবিত অর্গানোগ্রামে প্রেষণে নিয়োগ দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে ৪২টি পদে। বিভাগীয় প্রধানের সব পদেই প্রেষণে নিয়োগের বিধান রাখায় এর নিচের কর্মকর্তাদের পদই ব্লক পদ হিসেবে হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী এসব পদ ছাড়াও বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। কর্মচারী পর্যায়েও নিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধামতো কখনও নতুন আবার কখনও পুরাতন অর্গানোগ্রাম ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের অক্টোবরে পাঁচটি পদের বিপরীতে ৯৫ জন কর্মচারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ২০১৬ সালের ২৯ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষা উত্তীর্ণদের মে মাসে কম্পিউটার লিটারেসি পরীক্ষা নেয়া হয়। এরপর একই মাসে পাঁচটি বোর্ডের মাধ্যমে মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। এক পর্যায়ে জনবল নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি বলে চলতি বছরের ১৫ মে এই পরীক্ষাটি বাতিল করে ডিএসসিসি। বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ার কারণ দেখিয়ে এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হলেও কিছু দিন পর প্রস্তাবিত নতুন অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী নিয়োগ অব্যাহত রাখা হয়। প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) এর শূন্যপদে ১০ জনকে নতুন অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়। চলতি বছরের ৩১ মে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন সংস্থার সচিব শাহাবুদ্দিন খান। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির সচিব শাহাবুদ্দিন খান (উপ-সচিব) একটি অনলাইনকে বলেন, ‘নতুন নিয়োগের বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না’। তবে সহকারী সচিব-১ মোহাম্মদ আরশাদ ও সহকারী সচিব-২ কামাল হোসেন বলেন, ‘আসলে শেষ নিয়োগটি আমাদের প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রামে হয়েছে। যেহেতু প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, সেহেতু পুরনো বা বর্তমানের অর্গানোগ্রাম দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হলে পরে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। আর সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ছাড়া আমরা কোনও কিছুই করছি না। সবকিছুই কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই হচ্ছে।’ জানা গেছে, বর্তমানে দুটি অর্গানোগ্রামের সঙ্গে সমন্বয় করে নিয়োগ উত্তর সিটি কর্পোরেশনে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রামটি অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ প্রকৌশল বিভাগের কয়েকটি পদে। অনুমোদন হওয়ার পর নিয়োগ দেয়া পদগুলো স্থায়ী করা হবে। এ বিষয়ে ডিএনসিসি সচিব দুলাল কৃষ্ণ সাহা একটি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা যেহেতু নতুন সিটি করপোরেশন, সেহেতু পুরনো বিধিমালা অনুসরণ করার সুযোগ নেই। আমরা এখনও বিধিমালা করতে পারিনি। কাজ চলছে। খুব দ্রুত হয়ে যাবে। এখন নতুনটাই ফলো করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিধিমালা না থাকার কারণে জনবল নিয়োগের ছাড়পত্র প্রাপ্তিতে সমস্যা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ও ছাড়পত্র দিচ্ছে না। আমরা বিধিমালার খসড়া করছি। চূড়ান্ত হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। সেখান থেকে যাবে জনপ্রশাসনে। জনপ্রশাসন দুই সিটির পাঠানো বিধিমালা মিলিয়ে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ছাড়পত্র দেবে।’ তবে সংস্থার প্রশাসনিক কোন কোন কাজে ১৯৯০ সালে অনুমোদন পাওয়া পুরানো অর্গানোগ্রাম অনুসরণ করতে হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনিক কোন কাজে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে তখন ওই অর্গানোগ্রাম অনুসরণ করি। কারণ একটা আইনের আশ্রয় তো নিতেই হবে।’ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এটা অবশ্যই আইন সঙ্গত নয়। সরকারের নীতিমালার লঙ্ঘন।
×