ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে এনটিআরসিয়ের নিয়োগ বন্ধ

দেড় সহস্রাধিক সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

দেড় সহস্রাধিক সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ বিভাগের বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোতে চরম শিক্ষক সঙ্কট চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে মামলার জন্য বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম এক বছর ধরে স্থগিত থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিভাগের নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং উচ্চমাধ্যমিক কলেজে এক হাজার ৭৭৫টি শিক্ষক পদ শুন্য রয়েছে। এনটিআরসিএ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশের বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব নিয়েছে। তারা প্রথমবারেই এনটিআরসিএর ১২তম ব্যাচে নিবন্ধনধারীদের মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করেন। ফলে এনটিআরসিএর এক থেকে ১২ ব্যাচে নিবন্ধনধারীরা নিয়োগবঞ্চিত হয়ে উচ্চাদালতে রিট করলে প্রায় এক বছর আগে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোর শুন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিভাগের নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজে এক হাজার ৭৭৫ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। এরমধ্যে স্কুল পর্যায়ে পদ শুন্য রয়েছে এক হাজার ৩৮০টি। তার মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শুন্য রয়েছে এক হাজার ১৪৪টি এবং নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শুন্য রয়েছে ২৩৬টি। সূত্রমতে, মাধ্যমিক পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি শুন্যপদ রয়েছে শরীর চর্চা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ২২০টি। এছাড়া নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি শুন্য রয়েছে গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ৭৩টি। অপরদিকে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে শিক্ষক পদ শুন্য রয়েছে ৩৯৫টি। সবচেয়ে বেশি শুন্য রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ে প্রভাষক পদে ১৮টি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক পদে ১৫টি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিভাগের বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শুন্যপদের তথ্য তার দফতরের মহাপরিচালক এবং এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। শিক্ষক সঙ্কটের কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তিনি (মোস্তাফিজুর রহমান) আরও বলেন, শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধের কারণ এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে। এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলার নারায়ণপুর পল্লী ইউনিয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, তার বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা পদ অনেক বছর যাবত শুন্য। নিয়োগ বন্ধ থাকায় শুন্য পদ পূরণ করা যাচ্ছে না। বরিশাল ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় আহ্বায়ক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল বলেন, তার কলেজে রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষক নেই। অথচ এনটিআরসি নিয়োগ দিচ্ছে না। শিক্ষক সঙ্কটের জন্য বিভাগের স্কুল-কলেজে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া যেসব মেধাবীরা এনটিআরসিএতে নিবন্ধিত হয়েছেন তারাও চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা এনটিআরসিএ তার আওতায় নিয়ে নেয়। কিন্তু মামলা-মোকাদ্দমার কারণে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। উচ্চ আদালতে রিট হওয়ায় কোন কোন ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও নিয়োগ কার্যক্রমে আর অগ্রসর হওয়া যাচ্ছে না।
×