ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে পারভীনের জীবন সংগ্রাম

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে পারভীনের জীবন সংগ্রাম

মেধাবী ছাত্রী দুই মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে দিনরাত সমান তালে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন জীবন সংগ্রামী পারভীন বেগম (৩৫)। শিশু বয়স থেকে শুরু করে এখনও সুখের নাগাল পাননি পারভীন। তাই মেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে পারভীন সুখের সন্ধান খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর শিহিপাশা গ্রামের দিনমজুর সোবাহান ফরিয়ার কন্যা পারভীন মাত্র আট বছর বয়সে তার মাকে হারিয়েছেন। পরবর্তীতে তার বাবা পুনরায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই থেকেই দুঃখকে সঙ্গী করে নিয়েছেন পারভীন। সৎ মায়ের তাড়নায় শিশু বয়সে তাকে (পারভীন) বাবার গৃহ থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে। এরপর সে গৌরনদী বন্দর সংলগ্ন দক্ষিণ পালরদী গ্রামের মামা বাড়িতে আশ্রয় নেন। তার মামা দরিদ্র হওয়ায় সেখানেও বেশিদিন পারভীনের ঠাঁই হয়নি। পরবর্তীতে গৌরনদী বন্দরের একটি রাইচ মিলে সামান্য মজুরির ভিত্তিতে কাজ শুরু করেন পারভীন। সেখানে বসে পরিচয়ের সূত্র ধরে টিকাসার গ্রামের জামাল পাইক নামের এক বিবাহিত যুবকের সঙ্গে পারভীনের বিয়ে হয়। সেই সংসারে পারভীনের গর্ভে জন্ম নেয় দুটি কন্যা সন্তান। পারভীন জানায়, সম্প্রতি সময়ে জামাল পাইক তাকে (পারভীন) ও দুই কন্যাকে ফেলে চলে যান। এর পরেও দমে জাননি পারভীন। শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরেন। গৌরনদী বন্দরের কয়েকটি হোটেল-রেস্তরাঁ ও মিষ্টির দোকানে প্রতিদিন শতাধিক কলসি পানি সরবরাহ করেন পারভীন। আগে কোমড়ে করে পানি টানতেন। এতে রাতে কোমর ব্যথায় ঘুমাতে পারতেন না পারভীন। তাই অতিকষ্টে তিন হাজার টাকা দিয়ে সম্প্রতি একটি ভ্যান ক্রয় করেছেন। এখন ভ্যানে করেই পানি টানছেন পারভীন। এতে সে দিন শেষে পাচ্ছেন দেড় থেকে দু’ শ’ টাকা। তা দিয়েই দুই মেয়ের লেখাপড়ার ব্যয়ভার, বাসা ভাড়াসহ সংসারের অন্যান্য খরচ চালান পারভীন। তার বড় মেয়ে লামিয়া (১৩) ও মিম (৮) এর ভবিষ্যত নিয়ে পারভীন খুবই চিন্তিত। তাদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের ন্যায় মানুষ করতে চান তিনি। মেধাবী ছাত্রী লামিয়া গৌরনদী গার্লস হাই স্কুল এ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণীতে ও মিম গৌরনদী মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল থেকে
×