ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

কারাগারে যেতে হবে নেইমারকে!

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কারাগারে যেতে হবে নেইমারকে!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কর ফাঁকি মামলা থেকে রেহাই পেলেন না বার্সিলোনার ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। ২০১৩ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্টোস থেকে নেইমারের ন্যুকাম্পে যোগ দেয়ার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা চালানোর আদেশ দিয়েছেন স্পেনের হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত হয়েছে ক্লাব বার্সিলোনাও। অভিযোগ থেকে মুক্তি না পাওয়ায় বার্সা ও নেইমারের বিরুদ্ধে মামলা চলবে। যে কারণে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে তাদের। আর অভিযোগ প্রমাণিত হলে কারাগারেও যেতে হতে পারে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারকে। প্রায় চার বছর আগে নেইমারকে পেতে ৫ কোটি ৭১ লাখ ইউরো খরচ হওয়ার কথা প্রথমে জানিয়েছিল বার্সিলোনা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ছিল ভিন্ন। পরে কাতালান ক্লাবটি জানায়, চুক্তির অঙ্কটা আরও বেড়ে গিয়েছিল। সেটা খেলোয়াড় ও তার বাবার অন্যান্য চুক্তির কারণে। সবকিছু মিলিয়ে ট্রান্সফার বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১০ কোটি ইউরোতে। আর সমস্যার শুরু এখানেই। নেইমার ও বার্সিলোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে ব্রাজিলের একটি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডিআইএস। যাদের কাছে নেইমারের ক্রীড়া স্বত্বের ৪০ শতাংশ ছিল। নেইমারের ট্রান্সফারের মূল অঙ্কটা গোপন করায় তাদের ঠকানো হয়েছে বলে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি। নেইমার ও বার্সিলোনা কর্তৃপক্ষ অবশ্য শুরু থেকেই কর ফাঁকি দেয়ার সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু স্পেনের আদালত গত বছরের নবেম্বরে সান্টোস থেকে বার্সিলোনায় যোগ দেয়ার সময় দুর্নীতি করার অভিযোগে তারকা ফরোয়ার্ড নেইমারের দুই বছরের কারাদ- চেয়ে আবেদন করে। পরে নেইমার ও বার্সিলোনা তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চালানোর বিরুদ্ধে আপীল করে। কিন্তু সোমবার হাইকোর্ট সেই আপীল খারিজ করে দিয়েছেন। তার মানে, এখন সেই মামলা আবার চলবে নেইমার ও বার্সিলোনার বিরুদ্ধে। শাস্তি হিসেবে নেইমারের দুই বছরের কারাদ- চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এছাড়া জরিমানা হিসেবে ৯৩ লাখ ইউরো চাওয়া হয়েছে। অবশ্য দোষী প্রমাণিত হলেও নেইমারকে হয়তো জেলে যেতে হবে না। স্পেনের আইন অনুযায়ী সহিংস অপরাধ না করলে সাধারণত দুই বছরের নীচে সাজার ক্ষেত্রে হাজতবাস করতে হয় না। উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাইয়ে স্পেনের একটি আদালত ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪১ লাখ ইউরো কর ফাঁকির জন্য লিওনেল মেসি ও তার বাবা জর্জ মেসিকেও ২১ মাসের কারাদ- দেয়। একটা সময় বার্সিলোনা আর দানিয়েল আলভেজের নাম ছিল পরিপূরক। কিন্তু কাতালান ক্লাবটি অবহেলা করায় ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার গত মৌসুমে পাড়ি জমিয়েছেন জুভেন্টাসে। জীবনের সেরা আটটি বছর বার্সায় কাটিয়েছেন আলভেজ। রোনাল্ডিনহো-মেসি-ইতোদের সঙ্গে ক্লাবকে ২৩টি শিরোপা জিতিয়েছেন। এর মধ্যে ছয়টি লা লিগা আর তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ট্রফি। সেই আলভেজ জানিয়েছেন, বার্সা ফুটবলারদের সম্মান করতে জানে না। কেবল সমালোচনা করেই ক্ষান্ত হননি তিনি, কাতালান ক্লাবটির পরিচালকদের অকৃতজ্ঞও বলেছেন। বার্সিলোনা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাজিলের এই তারকা ফুটবলার। আলভেজ বলেন, যারা বার্সিলোনা চালাচ্ছেন, খেলোয়াড়দের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হয়, সে সম্পর্কে কোন ধারণা নেই তাদের। নিজের ট্রান্সফারের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, শেষ তিন বছর প্রতি মৌসুম শেষেই আমার কানে আসত, আমি নাকি ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছি। অথচ পরিচালকরা এ বিষয়ে কখনই আমার সঙ্গে আলোচনা করেননি। বার্সা যখন ট্রান্সফার নিষেধাজ্ঞায় পড়ল, কেবল তখনই তারা চুক্তি নবায়নের কথা বলেছে। এরপর আমি চুক্তি বাড়াতে রাজি হইনি। আফসোসের সুরে আলভেজ বলেন, তারা অকৃতজ্ঞ। আমাকে আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেয়নি তারা। ফুটবলারদের সম্মান করা উচিত তাদের। কারণ প্রত্যেক ফুটবলারের ভেতরে একজন মানুষ থাকে।
×