ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তবলা বাজিয়ে বিশ্ব রেকর্ড বাংলাদেশি সুদর্শনের

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

তবলা বাজিয়ে বিশ্ব রেকর্ড বাংলাদেশি সুদর্শনের

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুদর্শন দাস তবলা বাজিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানোর লক্ষ্যে টানা ২৫ দিন ৫৫৮ ঘন্টা ৫৯ মিনিটি তবলা বাজান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সন্তান তবলাবিশারদ সুদর্শন দাস। তবলা তিনি অনেক বাজিয়েছেন। বিশ্ব রেকর্ড গড়ার লক্ষে গত ২৭ নবেম্বর পূর্ব লন্ডনের মেনর পার্ক এলাকার শিভা মুনেতা সঙ্গম মিলনায়তনে তবলা বাজানো শুরু করেন সুদর্শন। এর আগে হাতে বাজানো যন্ত্র (মৃদঙ্গ) বাজানো রেকর্ডটি বর্তমানে ভারতীয় এক ব্যক্তির দখলে। তিনি ৫০১ ঘন্টা তবলা বাজিয়ে এ রেকর্ড গড়েন। সুদর্শন এ রেকর্ড ভাঙলেন। সিসি টিভির মাধ্যমে গত ২৫ দিন ধরে তার তবলা বাজানো পর্যবেক্ষণ করেছে গ্রিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষ। সুদর্শন দাসের রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টাকে ৩টি ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে ধারণ করা হয়েছে। সুদর্শন জানিয়েছেন বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতেই তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ অর্জনকে কমিউনিটির অর্জন উল্লেখ করে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন সুদর্শন। গত বছর সমগ্র বিশ্ব থেকে বাছাইকৃত ১১জনের মধ্য থেকে তবলাবিশারদ সুদর্শন দাস রেকর্ড গড়ার জন্য প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড থেকে মনোনীত হন। তবলা বাজানোর আয়োজনটি ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যে কেউ ভেন্যুতে গিয়ে রেকর্ড গড়ার ঐতিহাসিক এই উদ্যোগের সাক্ষী হয়েছেন। সুদর্শন বলেন, রেকর্ড গড়ায় তার কোন আর্থিক লাভ হবে না। তবে তার এই রেকর্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের নামটিও গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে যুক্ত হলো। এটাই তার জন্য বড় পাওয়া। সুদর্শন দাশের পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। অমূল্য রঞ্জন দাস ও বুলবুল রানী দাস দম্পতির সন্তান সুদর্শন চার বছর বয়স থেকেই চট্টগ্রামের আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমিতে তবলায় তালিম নেয়া শুরু করেন। ১৯৯০ সালে ফুলকুঁড়ি আয়োজিত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় তবলায় স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ আন্তকলেজ প্রতিযোগিতায় তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৯২ সালে চলে যান ভারতের শান্তিনিকেতনে। সেখানে পণ্ডিত বিজন চ্যাটার্র্জীর কাছে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৯৮ সালে ভারতের বোলপুরের শান্তিনিকেতন থেকে তাকে তবলাবিশারদ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানো সুদর্শন ২০০৪ সালে লন্ডনে প্রথম ‘তবলা এ্যান্ড ঢোল’ একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে বর্তমানে ৫০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ২০০৮ সালে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক তবলা প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় পুরস্কার রৌপ্যপদক লাভ করেন। আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করা সুদর্শন বর্তমানে নিউহাম ও টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে ‘মিউজিক ইন্সপেক্টর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
×