ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোল্লাহাটে পৈশাচিকতা

প্রকাশিত: ০২:২২, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

মোল্লাহাটে পৈশাচিকতা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট।। বাগেরহাটের মোল্লাহাটে স্বামীর শিরোচ্ছেদ রক্ষা করতে গিয়ে ধর্ষকের ধারালো তলোয়ারের কোপে আঘাতে সংখ্যালঘু ধর্ষিতার পা কর্তন হয়েছে। উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের শোলাবাড়িয়া গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারে লোমহর্ষক ওই ঘটনার পর উক্ত পরিবারের সকলকে হত্যার হুমকি দিয়ে দীর্ঘ পনের দিন ঘরে বন্দি করে রাখে ধর্ষক সোবাহান মোল্লা। এমনকি আহত গৃহবধুকে হাসপাতালে নিতেও দেয়নি। একপর্যায়ে বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবেশীরা উক্ত ভিকটিমকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। নারকীয় এঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বৃহস্পতিবার রাতে মোল্লাহাট থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি। অভিযোগ ও এলাকাবাসী সুত্রে প্রকাশ-শোলাবাড়িয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মাদ মোল্লার ছেলে এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক দস্যু চরিত্রের সোবাহান মোল্লা (২৮) বেশ কিছুদিন ধরে প্রতিবেশি সংখ্যালঘু এক পরিবারের সকলকে হত্যার হুমকি দিয়ে ওই পরিবারের গৃহবধুকে(৩২) দিনের পর দিন ধর্ষণ করে। লোকলজ্জা ও জীবনের ভয়ে উক্ত ঘটনা গোপন রেখে উক্ত সোবাহানকে কৌশলে নিবারনের চেষ্টাকরে উক্ত গৃহবধু। একপর্যায়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর গভীররাতে উক্ত সোবাহান মোল্লা ওই বাড়িতে গিয়ে গৃহবধুকে তলোয়ার দেখিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলে। নতুবা সকলকে পুড়িয়ে মারার হুমকী দেয়। তখন বাধ্য হয়ে গৃহবধু ঘরের দরজা খুলে দেয়। বেপরোয়া সোবাহান গৃহবধুকে ধর্ষণ আবারও করতে চায়। তখন তার স্বামী বাধা দিয়ে তাৎক্ষণিক তলোয়ার দিয়ে গৃহকর্তাকে ধাওয়া করে শিরোচ্ছেদের উদ্দেশ্যে কোপ দেয়। এসময় স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে তলোয়ারের কোপে ধর্ষিতা গৃহবধুর ডান পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পৈশাচিক এ ঘটনার পরও ঘটনাটি চাপা দেওয়ার জন্য গৃহবধুকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয় এবং আস্ত্রেরমুখে হুমকী দিয়ে ওই পরিবারকে গৃহবন্ধি করে রাখে। পরে এক হাতুড়ে চিকিৎসককে ডেকে বাড়ীতে এনে সেলাই এবং ব্যান্ডেজ দিয়ে পা আটকে দেয়। কিন্তু ওই গৃহবধুর অবস্থা ক্রমশ: অবনতি হতে থাকে। এরপর গত বুধবার উক্ত গৃহবধুর যন্ত্রনাকাতর চিৎকার শুনে সাহসী প্রতিবেশি মনির মুন্সিসহ কয়েক ব্যক্তি ওই বাড়ীতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। ওই সময় জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ব্যান্ডেজ খুলে দেখেন পায়ে পঁচন ধরেছে। যে কারনে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। অসহায় ভিকটিম খুমেক হাসপাতালে যেতে না পারায় গত বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। উদ্ধারকারী উপজেলা মটর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির মুন্সি জানান, বন্দি অবস্থায় ভিকটীমের মেয়ে অপর এক শিশুর মাধ্যমে খবর পাঠালে তিনি তাদের উদ্ধোর করেন। তাঁর ভাষায়, এ বর্বরতা বর্ণনাতীত। সোবাহান মোল্লা এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। তার ভয়ে এলাকার নিরীহ পরিবারের কলেজ পড়–য়া মেয়েরা বাড়িতে থাকতে পারে না। তিনি এবং অনান্য প্রতিবেশীরা নরপিচাশ সোবাহানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন। এবিষয়ে মোল্লাহাট থানার ওসি আবু সাঈদ মোঃ খায়রুল আনাম বলেন, তিনি মাত্র অভিযোগ পেয়েছেন এবং তড়িৎ ব্যবস্থা গহণ করছেন। যে কোন মূল্যে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনবেন বলেও তিনি জানান।
×