ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষায় চুলের পরিচর্যা

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১ আগস্ট ২০১৬

বর্ষায় চুলের পরিচর্যা

বর্ষাকাল এলেই অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান চুল নিয়ে। কেউ ভেজা চুল নিয়ে চিন্তিত আবার কেউবা চুল পড়া নিয়ে চিন্তিত। আদতে দুটো একই সুতোয় গাঁথা। তাই এবারের আয়োজন বর্ষায় ভেজা চুলের যতœ নিয়ে। বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন ডাঃ অপর্ণা। সান্থানাম মুম্বাই ভারতের একজন বিখ্যাত ডার্মাটোলজিস্ট এবং কসমেটোলজিস্ট। তিনি একাধারে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বিভিন্ন এফএমসিজি ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে ও ভারতীয় সৌন্দর্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন। এ ছাড়াও তিনি ত্বক ও চুলের যতেœর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কৌশলগত পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছেন এবং তার লেখা দুটি শ্রেষ্ঠ বিক্রিত বই হলো ‘স্কিন ডিপ’ ও ‘লেটস টক হেয়ার।’ ডাঃ সান্থানাম বর্তমানে বিভিন্ন প্রকাশনী ও মিডিয়া হাউসে লেখালেখির সঙ্গে সংযুক্ত আছেন এবং লেখালেখির মাধ্যমে সাধারণ ভোক্তাদের স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও সৌন্দর্য চর্চার রহস্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে কাজ করছেন। প্রশ্ন : বর্ষাকাল চলে এসেছে। চুলের যতেœর জন্য এই বর্ষাকালে কি করা জরুরী? উত্তর : আমরা যতই ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির ফোঁটা, জমে থাকা পানিতে দাপাদাপি, কুঁড়মুড়ে পাকোড়া এবং মসলা চায়ে চুমুক দেয়া পছন্দ করি না কেন; চুলের জন্য বর্ষাকাল মোটেও সুখকর নয়। বৃষ্টি এলেই আপনার চুল কোঁকড়া এবং এলোমেলো হয়ে যায়। এ সময় নারিকেল তেলের ম্যাসাজ প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায় যা আপনার চুল রাখে পরিপাটি ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। আপনার চুল যখনই বৃষ্টিতে ভিজে যাবে তখনই মাইল্ড শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলুন। বর্ষাকাল ছোট স্টাইলিশ চুল রাখার জন্য সবচেয়ে ভাল সময়। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য অন্যতম গোপন রহস্য হচ্ছে পরিমিত সুষম খাদ্যভ্যাস অর্থাৎ চা-কফি কম পান করা এবং তাজা ফলের রস পান করা ও কাঁচা সবজি এর স্ন্যাক্স এবং দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণ করা। এ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত যা আপনার ত্বক ও স্ক্যাল্পকে হাইড্রেটেড রাখে। প্রশ্ন : চুলে কতক্ষণ তেল দিয়ে রাখা উচিত? উত্তর : চুলে কতক্ষণ তেল দিয়ে রাখবেন, এই সময়টুকু নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত চুলের পুষ্টির চাহিদার ওপর। যাদের চুল শুষ্ক বা বর্ষাকালে যাদের চুলে জট লেগে যায়, তাদের সারারাত চুলে তেল দিয়ে রাখা উচিত, যদি সম্ভব হয়। বালিশে যাতে তেল না লাগে, এজন্য চুলে বাথ ক্যাপ ব্যবহার অথবা চুল তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখতে পারেন। পরের দিন সকালে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। যাদের চুল তেলতেলে তাদের জন্য চুলে নারিকেল তেল দিয়ে ১ অথবা ২ ঘণ্টা রাখাই যথেষ্ট কারণ এই সময়ের ভেতরেই স্ক্যাল্প প্রয়োজনীয় পুষ্টি শুষে নেবে এবং চুল দেখাবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও মসৃণ। সবচেয়ে ভাল ফলাফলের জন্য চুলে সপ্তাহে অন্তত তিনবার নারিকেল তেল দেয়া উচিত। প্রশ্ন : চুলে তেল দেয়ার পূর্বে গরম করার তাৎপর্য কি? উত্তর : চুলে তেল দেয়ার পূর্বে তেল গরম করে নিলে চুলের জন্য এটি চমৎকার সুফল বয়ে আনবে এবং বিভিন্ন সমস্যা যেমন খুশকি, স্ক্যাল্পের শুষ্কতা এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের নিরাময় হিসেবে কাজ করবে। তেলকে কুসুম গরম করে নিলে স্ক্যাল্প তেল আরও ভালভাবে শুষে নেবে যার দরুণ চুলে আরও ভালভাবে পুষ্টি যোগাবেÑ আপনার চুল হয়ে উঠবে সম্পূর্ণরূপে স্বর্গীয় ও চমৎকার। প্রশ্ন : কেউ কেউ পরামর্শ দেন বিভিন্ন রকম তেলের (জলপাই, বাদাম, নারিকেল) মিশ্রণ ব্যবহারের, আবার কেউ কেউ পরামর্শ দেন একটি তেল ব্যবহার করাই ভাল। আপনার পরামর্শ কি? উত্তর : অনেক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমি জেনেছি যে নারিকেল তেল-ই চুলের জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট। চুলে নারিকেল তেল দিলে স্ক্যাল্পের ময়েশ্চার বৃদ্ধি প্রায় ১২% এরও বেশি যা স্ক্যাল্পের চামড়া উঠা এবং চুলকানো বন্ধ করে। নারিকেল তেলের ম্যাসাজ মাথার রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং নিশ্চিত করে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল ও চুলের পর্যাপ্ত ময়েশ্চার এর মাত্রা। চুল ধোয়ার পূর্বে নারিকেল তেলের ম্যাসাজ চুলের প্রোটিন হ্রাসের পরিমাণ প্রায় ২৮% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। নারিকেল তেলের ম্যাসাজ চুলের সকল সমস্যা নিরাময় করার নিশ্চিত উপায় এবং দেয় অপূর্ব সুন্দর চুলের আলিঙ্গন।
×