ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

শেরপুরের মধুটিলা ইকোপার্ক: সীমান্তঘেঁষা সবুজ পাহাড়ের শান্ত নিবাস

মো: সাফিজল হক তানভীর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শেরপুর

প্রকাশিত: ০৯:২২, ২৪ জুন ২০২৫

শেরপুরের মধুটিলা ইকোপার্ক: সীমান্তঘেঁষা সবুজ পাহাড়ের শান্ত নিবাস

ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা পোড়াগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত মধুটিলা ইকোপার্ক বাংলাদেশের অন্যতম একটি মনোরম পর্যটনকেন্দ্র। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ইকোপার্কটি প্রায় ৩৮০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। ভারতীয় মেঘালয়ের তুরা পাহাড় থেকে মাত্র ২.৫ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়ায় এখানকার দৃশ্যপট অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং রোমাঞ্চকর।

মধুটিলা ইকোপার্কের প্রধান আকর্ষণ হলো এখানকার পাহাড়ি বনভূমি, জীববৈচিত্র্য, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, জলাশয়, কৃত্রিম প্রাণীর ভাস্কর্য, শিশু পার্ক এবং নানান রাইড। পার্কের প্রবেশমূল্য মাত্র ২০ টাকা। পাহাড়ি দৃশ্য দেখতে পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে উঠতে ফি দিতে হয় ১০ টাকা। পার্কের অভ্যন্তরে ছোট ছোট কৃত্রিম হ্রদে দেশীয় নৌকা ও প্যাডেল বোটে চড়া যায়, যদিও এসবের নির্ধারিত ভাড়া ভিন্ন ভিন্ন উৎসে আলাদা হতে দেখা যায়।

বাচ্চাদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন, যেমন দোলনা, স্লাইডার, ছোট ট্রেন, রিং, মিনি কাসেল ইত্যাদি। বড়দের জন্য রয়েছে বসার জায়গা ও পারিবারিক পিকনিকের সুব্যবস্থা। ভেতরে থাকা বন বিভাগের অফিসের পাশেই রয়েছে মহুয়া নামের একটি রেস্ট হাউস, তবে তা ব্যবহারে জেলা প্রশাসকের অনুমতি প্রয়োজন।

ঢাকা থেকে মহাখালী কিংবা গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বাসে শেরপুর যাওয়া যায়। ভাড়া ৪৫০–৬০০ টাকা (এসি ও নন-এসি)। শেরপুর জেলা শহর থেকে সিএনজি, অটো বা মাইক্রোবাসে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে মধুটিলা ইকোপার্ক। ভাড়া ৫০–৭০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। 

এখানে থাকার ব্যবস্থা সরাসরি পার্ক এলাকায় না থাকলেও শেরপুর শহরে রয়েছে বিভিন্ন হোটেল ও গেস্ট হাউস। সাধারণ হোটেলে নন-এসি কক্ষে ভাড়া ৪০০–৬০০ টাকা এবং এসি কক্ষে ১০০০–১৫০০ টাকা। 

শীতকাল, অর্থাৎ নভেম্বর থেকে মার্চ—মধুটিলা ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ সময় পাহাড় ঘেরা সবুজ প্রকৃতি, স্বচ্ছ নীল আকাশ এবং মনোরম পরিবেশ প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য হয়ে ওঠে অনন্য এক অভিজ্ঞতা।

সব মিলিয়ে বলা যায়, যাদের হাতে সময় কম, কিন্তু একদিনে শহরের কোলাহল থেকে দূরে গিয়ে শান্ত ও প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য মধুটিলা হতে পারে এক আদর্শ গন্তব্য। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এই পার্ক আরও সমৃদ্ধ হলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

নোভা

×