ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

ঘিওরে স্মার্ট কার্ড জটিলতা

টিসিবি পণ্য পাচ্ছে না সাড়ে ৫ হাজার পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঘিওর, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:১৪, ১১ জুন ২০২৫

টিসিবি পণ্য পাচ্ছে না সাড়ে ৫ হাজার পরিবার

ছয় মাস ধরে টিসিবি কার্ডধারীরা তাদের পণ্যসামগ্রী পাচ্ছে না

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার পরিবার ছয় মাস ধরে টিসিবি কার্ডধারীরা তাদের পণ্যসামগ্রী পাচ্ছে না। স্মার্ট কার্ডের জটিলতায় বিতরণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে নিয়োগকৃত ডিলাররা জানিয়েছে। ফলে হতাশার ছাপ দেখা দিয়েছে নি¤œ আয়ের লোকজনের মাঝে। তবে এই কার্ডের তালিকা নিয়েও আছে ব্যাপক বিতর্ক। কম দামে পণ্য কিনতে না পারায় হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে টিসিবি কার্ডধারী সাধারণ মানুষ। 
জানা গেছে, সরকার নিত্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরকারি সংস্থা টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) কার্ডধারীদের মাঝে পণ্য বিক্রি শুরু করেন। পূর্বের হাতে লেখা কার্ডের মাধ্যমে ঘিওর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে ৭ হাজার ২শ’ ৮৫টি কার্ড বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ঘিওর সদরে ১২শ’ ৩১টি কার্ড দেওয়া হয়। স্মার্ট কার্ডে রুপান্তরিত হয় মাত্র ৩শ’ ৬৫ কার্ড। বাকি ৮৬৬টি কার্ড এখনো আসেনি। প্রতিদিন কার্ডের জন্য ঘিওর ইউপি কার্যালয়ে এসে ফিরে যায় লোকজন। টিসিবি পণ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য প্রতি ইউনিয়নে ২জন করে মোট ১৪জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়।

নিয়োগকৃত ডিলাররা মধ্য বাজারে তাদের দোকান ঘরে ব্যানার টানিয়ে একজন ট্যাগ কর্মকর্তার সামনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ২ লিটার তেল, ১ কেজি চিনি, ২ কেজি মসুরির ডাল, ৫ কেজি চাল নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করবেন। তবে অনেক ডিলাররা সরকারি নিয়মনীতি অমান্য করে নিজের ইচ্ছামতো পণ্যসামগ্রী বিতরণ করেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

সরকারি নির্দেশনায় সুবিধাভোগীরা স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করেন। এর মধ্যে ৭ ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ৭শ’ ৯৩টি স্মার্ট কার্ড চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি ৫ হাজার ৪শ’ ৯২টি কার্ড এখনো আসেনি। স্মার্ট কার্ড ছাড়া জানুয়ারি মাসের পর কাউকে টিসিবির পণ্য দেওয়া হয়নি। ফলে এলাকার অনেক স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা। 
টিসিবির একজন ডিলার জানান, ঢাকা থেকে পণ্য উত্তোলন, ডিডি খরচ, যাতায়াত ও পরিবহন খরচ, লেবার খরচ, পলিথিন, ব্যাগ ও মাল প্যাকেটিং খরচ করে আমাদের লাভ আর কিছুই থাকে না। শুধু লাইসেন্স টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমরা ব্যবসা পরিচালনা করছি। এলাকার নি¤œ আয়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্বের এই কার্ডের তালিকা করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। লোক দেখানো কিছু নি¤œ আয়ের লোকজন কার্ড পেলেও বেশিরভাগ কার্ড পেয়েছে আর্থিক স্বচ্ছল ও বিত্তবান লোকেরা। তবে পুনরায় স্মার্ট কার্ডের তালিকায় প্রকৃত দরিদ্র লোকজন সুবিধা পায় বলে তারা দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা আক্তার নাসরীন জানান, আমাদের ঘিওর উপজেলাতে মোট ৭২৮৫টি টিসিবি কার্ড দেওয়া হয়। ১২৩১টি স্মার্ট কার্ড তৈরি হয়েছে। কিন্তু স্মার্ট কার্ড তৈরির জটিলতায় পুরো কার্ড এখনও আসেনি। তবে পর্যায়ক্রমে সবাই স্মার্ট কার্ড পেয়ে যাবে। এছাড়া কোনো ডিলার যদি টিসিবি পণ্য বিতরণে অনিয়ম করেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে জরুরি ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

×