
ছবি: সংগৃহীত
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও সারাদেশে পশুর চামড়া সংগ্রহে ব্যস্ত মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তবে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সাভারসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে চামড়াবাজারের বিশৃঙ্খলা ও দরপতন। সরকারি নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন বিক্রেতারা। অনেক জায়গায় অবিক্রিত চামড়া রাস্তায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের মুরাদপুর আতুরার ডিপো এলাকায় রাস্তায় পড়ে আছে শত শত চামড়া। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা জানান, চামড়া প্রতি পিস ১০০ টাকা দামেও বিক্রি হচ্ছে না। কোথাও কোথাও ৫০ টাকাতেও ক্রেতা মিলছে না। ফলে এসব চামড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে এবার প্রায় ৪ লাখ চামড়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৮-১০ হাজার চামড়া ইতোমধ্যেই নষ্ট হওয়ার পথে।
অন্যদিকে, সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্পনগরীতে সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি চামড়া পৌঁছেছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, সরকার নির্ধারিত দর অনুযায়ী ট্যানারি মালিকরা চামড়া কিনছেন না। অনেক মাদ্রাসা ও মৌসুমী ব্যবসায়ী বাধ্য হয়ে ৫০০-৬০০ টাকায় চামড়া বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ চামড়া বাকিতে দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
রাজধানীর পোস্তা এলাকায়ও একই চিত্র। ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের নির্ধারিত দাম ঢাকার বাইরে ১,০৫০ টাকা এবং ঢাকার ভেতরে ১,৩৫০ টাকা হলেও সেই দামে চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, মৌসুমী ব্যবসায়ীদের চামড়া সংরক্ষণ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় সময়মতো প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
চামড়া ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কোরবানির পরে ছয় ঘণ্টার মধ্যেই চামড়া প্রক্রিয়াজাত না করলে তা পচে যায়। অথচ অনেক বিক্রেতা রাতের বেলায় চামড়া আনছেন, যা গ্রহণ করতে পারছেন না আড়তদাররা। ফলে রাস্তার পাশে পড়ে থাকছে হাজার হাজার চামড়া।
সব মিলিয়ে বলা যায়, এবারও ঈদের চামড়াবাজারে নেমেছে বিশৃঙ্খলা। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে কেনাবেচা না হওয়া, মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অদক্ষতা এবং সময়মতো সংরক্ষণের অভাবে চামড়াগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
আসিফ