ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাঁচতে হলে অবশ্যই প্লাস্টিক প্রতিরোধ করতে হবে: ফেনীতে ড. কামরুজ্জামান

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ৫ জুন ২০২৫

বাঁচতে হলে অবশ্যই প্লাস্টিক প্রতিরোধ করতে হবে: ফেনীতে ড. কামরুজ্জামান

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে একযোগে ৬৪ জেলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফেনীতেও বৃক্ষরোপণ, বৃক্ষ বিতরণ, প্লাস্টিকবিরোধী জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দেশের অন্যতম শীর্ষ পরিবেশবাদী তরুণ সংগঠন মিশন গ্রিন বাংলাদেশ-এর আয়োজনে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সারাদেশের মতো ফেনীতেও এই কর্মসূচি পালিত হয়। জাতীয় পর্যায়ে এই কর্মসূচির সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (C3ER), ইয়ুথ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, তরু পল্লব, স্বপ্নপূরী কল্যাণ সংস্থা ও ছাওয়াব ফাউন্ডেশন। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছিল ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবার ও মানবসেবা সংস্থা ফেনী।

দিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে সকালে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার ভোরবাজার এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে ফেনী শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্লাস্টিকবিরোধী মানববন্ধন, বৃক্ষ বিতরণ ও প্লাস্টিক ব্যবহার প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

প্লাস্টিকবিরোধী জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান, প্রখ্যাত পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার। তিনি বলেন,

“ফেনীর বিভিন্ন খাল এখন দখল ও দূষণে মৃতপ্রায়। এসব নদী-খাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ প্লাস্টিক দূষণ। প্লাস্টিক পড়ে খালগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বৃষ্টির পানি ঠিকভাবে নামতে পারছে না। এতে বারবার বন্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। একইসাথে প্লাস্টিক দূষণে কৃষিজমিও হারাচ্ছে উর্বরতা।”

তিনি আরও বলেন,

“ফেনীবাসীকে বন্যাসহ নানাবিধ পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে হলে এখানকার প্রতিটি নদী, খাল ও জলাধারকে সিএস-আরএস দাগ অনুযায়ী উদ্ধার করতে হবে। না হলে ফেনীকে বন্যা ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। এজন্য খালের দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এটি করতে হলে প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। জেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে। নাগরিক সমাজকেও শক্ত প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে।”

প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন,

“প্লাস্টিক মানুষের নানা মরণব্যাধির কারণ হয়ে উঠছে। এটি ক্যানসার সৃষ্টি করছে। ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টিক বর্জ্য পোড়ানোর ফলে যে বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয় তা মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে মারাত্মক ক্ষতি করছে। আমাদের বাঁচতে হলে প্লাস্টিক প্রতিরোধ করতেই হবে। এ লক্ষ্যে সারাদেশে প্লাস্টিকবিরোধী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”

পরিবেশ রক্ষায় তিনি ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণের আহ্বানও জানান।

এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথনেট গ্লোবালের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক (পরিবেশ ন্যায্যতা) মোহাইমিনুল ইসলাম জিপাত, ইউনাইটেড ট্রাস্ট ফেনীর কো-কো-অর্ডিনেটর ফয়সাল ভূঁইয়া, বালিগাঁও ইউথ ফোরামের সভাপতি সাহাবুদ্দিন ভূঁইয়া, জিবা সমাজকল্যাণ যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি এমদাদুল হক, কুটিরহাট সোসাইটির সভাপতি মনির উদ্দিন, ইকো রেভ্যুলুশনের সভাপতি মেহরাজুল হক, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ফেনী জেলা কো-কো-অর্ডিনেটর জহিরুল ইসলাম পিয়াস, মানবসেবা সংস্থা ফেনীর সভাপতি এমদাদ উল্লাহ সহ বিভিন্ন পরিবেশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সানজানা

×