ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাজধানীতে ২১ হাজার অবৈধ সিমকার্ড ও ভিওআইপি সরঞ্জামসহ ব্যবসায়ী গ্রেফতার 

প্রকাশিত: ২০:২৬, ৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ২০:২৮, ৫ জুন ২০২৫

রাজধানীতে ২১ হাজার অবৈধ সিমকার্ড ও ভিওআইপি সরঞ্জামসহ ব্যবসায়ী গ্রেফতার 

রাজধানীর দক্ষিণখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ২১ হাজার অবৈধ সিমকার্ড ও বিপুল পরিমাণ ভিওআইপি সরঞ্জামসহ ০১ জন ভিওআইপি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, কিশোর গ্যাং, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী এবং বিভিন্ন ধরনের সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোরালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। 
এছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার, অবৈধ রেডিও ট্রান্সমিটার, অবৈধ মোবাইল সিম ও অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি বিক্রয়কারীদের গ্রেফতার করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব।

বিভিন্ন সময়ে কিছু অসাধু চক্র অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসা ও যাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। 
কতিপয় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী ডিএমপি ঢাকার দক্ষিণখান থানা এলাকায় অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ হতে বহির্বিশ্বের সাথে টেলিযোগাযোগের ব্যবসা করে আসছে। ইতোপূর্বে র‌্যাব ফোর্সেস এসকল অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রায় ৬ শত অভিযান পরিচালনা করে প্রায় হাজারের অধিক অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।
এছাড়াও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এসকল অবৈধ ব্যবসা বন্ধের লক্ষ্যে বিটিআরসি এর সাথে সমন্বয়পূর্বক র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিসহ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ০৫ জুন ২০২৫ ইং তারিখ বিটিআরসি এবং এনটিএমসি এর সহযোগিতায় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল ডিএমপি ঢাকার দক্ষিণখান থানাধীন শহীদ লতিফ রোড, বাড়ি নং-২১, মোল্লারটেক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী মোঃ নজরুল ইসলাম (৩৮), পিতা- আবুল কালাম, সাং- শহীদ লতিফ রোড, বাড়ি নং-২১, মোল্লারটেক, থানা- দক্ষিণখান, ডিএমপি, ঢাকা’কে গ্রেফতার করা হয়। 

এসময় তার নিকট থেকে উদ্ধার করা হয় ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ক) ১২৮ পোর্টের সিম বক্স-০৯ টি, খ) ২৫৬ পোর্টের সিম বক্স-০৫ টি, গ) ৫১২ পোর্টের সিম বক্স-০৯ টি, ঘ) DELL ব্র্যান্ডের কালো রঙের ল্যাপটপ ০১ টি, ঙ) Lenovo ব্র্যান্ডের কালো রঙের নোটপ্যাড ০১ টি, চ) Huawei ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফোন ০২ টি, ছ) ০৮ পোর্টের TP-Link সুইচ ০২ টি, ঝ) TP-Link Access রাউটার ০৩ টি, ঞ) Netgear সুইচ ০১ টি, ট) CDMA Modem ০১ টি, ঠ) বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির সিম কার্ড: টেলিটক-১১৩০০ (এগারো হাজার তিন শত) টি, জিপি-৮১০০ (আট হাজার এক শত) টি, এয়ারটেল-২৫০ (দুই শত পঞ্চাশ) টি, রবি-৯৯০ (নয় শত নব্বই) টি, বাংলালিংক-৭৫০ (সাত শত পঞ্চাশ) টি। মোট-২১৩৯০ (একুশ হাজার তিন শত নব্বই) টি সিমকার্ডসহ অবৈধ কল টার্মিনেশনে ব্যবহৃত বেতার যন্ত্রপাতি ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। অবৈধভাবে ব্যবহৃত VoIP সরঞ্জামাদির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় এনটিএমসি কর্তৃক কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামি এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার চক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃত আসামি ০৬ মাস যাবৎ এই অবৈধভাবে এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামি প্রচলিত সফটওয়্যার ভিত্তিক সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক কল রাউট করত এবং অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদির মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যান্ত্রিক, ভার্চুয়াল এবং সফটওয়্যার ভিত্তিক কৌশল অবলম্বন করে অবৈধভাবে দেশের অভ্যন্তরে সার্ভার স্থাপন করে মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও কলিং কার্ড, পেমেন্ট ও রিচার্জ সেবা প্রদান করতো বলে জানা যায়। 

তাদের ব্যবহৃত সিস্টেমে বিদেশ হতে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মিনিট কল বাংলাদেশে আসতো। যার মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত আসামি প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামি দেশের বাইরে থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসতো। গ্রেফতারকৃত আসামি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আফরোজা

×